২০১৪ সালে কেন্দ্রে এনডিএ সরকার ক্ষমতায় আসার কয়েক মাসের মধ্যেই মহাকাশে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, বুধবার ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে একথাই জানালেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। পাশাপাশি ‘মিশন শক্তি’ অপারেশন নিয়ে ভারতের সাফল্যের কথা কেন প্রধানমন্ত্রী নিজে ঘোষণা করলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। সে প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর জাতীর উদ্দেশে ভাষণ নিয়ে যদি সকলে প্রশ্ন করেন, তাহলে তাঁদের এই সাফল্যের গুরুত্ব বোঝা উচিত।’’
‘মিশন শক্তি’ অপারেশন নিয়ে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া নির্মলা সীতারমণের বিশেষ সাক্ষাৎকারের কিছু অংশ রইল এখানে...
* প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে অ্যান্টি স্যাটেলাইট পরীক্ষার সাফল্যকে কোন চোখে দেখছেন?
এটা দারুণ সাফল্য। কারণ, আমরা এখন বিশ্বের চতুর্থ দেশ, যারা মহাকাশে লাইভ স্যাটেলাইটে আঘাত হানার ক্ষমতা রাখে। কিন্তু একটা কথা স্পষ্ট করে বলতে চাই, এটা এমনই এক প্রযুক্তি, যা কারও থেকে নেওয়া যায় না বা অন্য দেশের থেকে কেনা যায় না। এমন কোনও দেশ নেই, যারা এ ধরনের প্রযুক্তি বিক্রি করে বা অন্য দেশের সঙ্গে শেয়ার করে। এই অভিযানে ভারতের সাফল্যের পিছনে অন্যতম কারণ হল, এই প্রযুক্তি আমরা নিজেরাই ডেভেলপ করেছি। বহু দশক ধরে ভারতে স্যাটেলাইট প্রকল্প ডেভেলপ করে আসছে...বিরোধীরা বলছে, বহুদিন আগেই এই ক্ষমতা অর্জন করেছে ভারত...হ্যাঁ, ভারত অনেক সাফল্য পেয়েছে। অতীতে হেভি স্যাটেলাইটস, লাইট স্যাটেলাইটস উৎক্ষেপণ করেছে ভারত। কেউই একথা অস্বীকার করছেন না। কিন্তু মহাকাশে লাইভ টার্গেট ধ্বংস করতে যে প্রযুক্তির প্রয়োজন লাগে, সেটা ভারত ডেভেলপ করেছে। প্রথমে অস্ত্রাগারের উন্নতীকরণ করেছে তারপরই সঠিকভাবে মহাকাশে ৩০০ কিমি দূরত্বে লাইভ টার্গেটে আঘাত হেনেছে ভারত।
আরও পড়ুন, মহাকাশে মহাযজ্ঞ; দেশবাসীর উদ্দেশে ‘মিশন শক্তি’-র ঘোষণা
* কেন এত দেরি করে এই মিশনের অনুমতি দেওয়া হল?
দেরি হয়নি। সময়মতোই করা হয়েছে। পূর্বতন সরকার এর অনুমোদন দেয়নি। ২০১২ সালে ভারত যখন প্রথম অগ্নি-৫ মিসাইল উৎক্ষেপণ করেছিল, তখন সরকারের থেকে অনুমতি পায়নি ডিআরডিও। ফলে একথা কেউ বলছেন না, যে অতীতে কিছু হয়নি। এটা বোঝানো হয়েছে যে, ওরা আগে অনুমতি দেয়নি। যেটা অরুণ জেটলিও বলতে চেয়েছেন।
* ‘মিশন শক্তি’ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর জাতীর উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার কি প্রয়োজন ছিল?
একটা কথা বলুন, মহাকাশের মন্ত্রী কে? যদি আমি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হই, যদি জেটলিজি অর্থমন্ত্রী হন, প্রধানমন্ত্রী যদি মহাকাশের মন্ত্রী হন, তাহলে কি তিনি ঘোষণা করবেন না? তাছাড়া যদি আমরা এরকম একটা ক্ষেত্রে নিজেদের দক্ষতা প্রমাণ করতে পারি, তাহলে সেকথা কি দেশবাসীকে জানাব না? প্রধানমন্ত্রীর জাতীর উদ্দেশে ভাষণ নিয়ে যদি সকলে প্রশ্ন করেন, তাহলে তাঁদের এই সাফল্যের গুরুত্ব বোঝা উচিত।
* ‘মিশন শক্তি’ অভিযানের জন্য কখন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার?
২০১৪ সালের শেষের দিকে এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কেন্দ্রের ক্ষমতায় এ সরকার আসার কয়েক মাস পর এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
* ‘মিশন শক্তি’র মাধ্যমে কী কৌশলী বার্তা দিল ভারত?
ভবিষ্যতে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে যেমন গোটা দুনিয়ে স্যাটেলাইটকে তুলে ধরে, সেখানে ভারতও আর পিছিয়ে থাকল না। ব্যক্তিগত ভাবে এই অভিযান নিয়ে আমি খুবই খুশি। অনেরকমের স্যাটেলাইট রয়েছে, যার সাহায্যে আবহাওয়ার পূর্বাভাস পাওয়া যায়, সমুদ্রের ম্যাপ দেখা যায়। কিন্তু আবার অনেক বিপজ্জনক স্যাটেলাইটও রয়েছে। আমরা এমন স্যাটেলাইট পেলাম, যার সাহায্যে ইচ্ছে মতো লক্ষ্যবস্তুকে আঘাত হানা যাবে।
Read the full story in English