লোকসভা নির্বাচনের আর মাত্র একবছর। সেকথা মাথায় রেখে কংগ্রেস এবং বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার বুধবার শাসক দলের বিরুদ্ধে সমস্ত বিজেপি-বিরোধী দলগুলিকে একত্রিত করার জন্য প্রথম পদক্ষেপ নিলেন। বিরোধী ঐক্যের রাস্তা বাধা-বিপত্তিতে ভরা। এই পরিস্থিতিতে দুই পক্ষই যতটা সম্ভব বিরোধী দলগুলোকে একত্রিত করার চেষ্টার অঙ্গীকার করেছে।
নীতীশ কুমারের সঙ্গে ছিলেন বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তথা রাষ্ট্রীয় জনতা দলের (আরজেডি) নেতা তেজস্বী যাদব। তাঁরা ১০, রাজাজি মার্গের বাসভবনে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জ্জুন খাড়গে ও প্রবীণ কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেখানেই বিজেপির মোকাবিলা করার জন্য একটি ঐক্যফ্রন্ট গঠন ঘিরে তাঁদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।
খাড়গে, রাহুল এবং নীতীশ কুমাররা এই বৈঠককে 'ঐতিহাসিক' হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তাঁদের স্পষ্ট কথা যে, বিরোধী ঐক্যের বাধাগুলো তাঁরা জানেন। বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন বিরোধী দল একে অপরের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। যেমন— পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা। আবার কিছু নেতা, বিশেষ করে তৃণমূল কংগ্রেস (টিএমসি) চেয়ারপার্সন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেমন ঘোষণা করে দিয়েছেন যে তাঁরা ২০২৪ সালের নির্বাচনে একা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
তার ওপর বিকল্প জোটের ব্যাপারে একটা অনীহা আছে। যেমন, কংগ্রেসের নেতৃত্ব মেনে নিতে কিছু দলের মধ্যে অনীহা আছে। গত মাসেই যেমন, সমাজবাদী পার্টির (এসপি) সভাপতি অখিলেশ যাদব এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠক করেছেন। সেই বৈঠকের পরে সমাজবাদী পার্টি এবং তৃণমূল কংগ্রেস, দুই দলই ইঙ্গিত দিয়েছে যে তারা কংগ্রেসের নেতৃত্বে কোনও জোটে যোগ দেবে না।
আরও পড়ুন- বিমানে উঠে দুর্ব্যবহার করলেই এবার কঠোর শাস্তি, কী জানাল নতুন নির্দেশনামা?
এই পরিস্থিতিতেও নীতীশ কুমাররা আশাবাদী যে, বিরাট সংখ্যক বিরোধী দলকে তাঁরা জোটে শামিল করতে পারবেন। এই ব্যাপারে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে নীতীশ কুমার বলেন, 'যেদিন বিরোধী দলগুলো বৈঠক করবে, সেদিনই জানতে পারবেন। বিরাট সংখ্যায় বিরোধী দলগুলো একজোট হচ্ছে।' আর রাহুল বলেছেন, 'বিরোধীদের একত্রিত করার জন্য এই বৈঠক এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। এটি একটি প্রক্রিয়া। আমরা দেশের স্বার্থে বিরোধী দলগুলোর মধ্যে এক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলব। যারা আমাদের সঙ্গে আসবে, তাদের সবাইকে নিয়ে চলব। দেশ এক আদর্শের লড়াই দেখছে। আমরা সেই যুদ্ধে লড়ব। প্রতিষ্ঠানের ওপর হামলা, দেশের ওপর হামলা আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দেব।'
এর আগে ফেব্রুয়ারিতে নীতীশ কুমার বলেছিলেন যে তিনি সমস্ত বিরোধী দলকে একত্রিত করার লক্ষ্যে কাজ করার জন্য কংগ্রেসের থেকে একটি সংকেত পাওয়ার অপেক্ষা করছেন। সেই সময় কংগ্রেস তার প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছিল যে তাদের ছাড়া বিরোধী ঐক্য সম্ভব না।