আজই কি বিজেপির সঙ্গ ত্যাগ করবেন নীতীশ কুমার? প্রবল জল্পনার মধ্যেই মঙ্গলবার বিকেল চারটেয় রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করবেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। এদিন তিনি রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার আর্জি জানিয়েছেন। প্রথমে বেলা একটায় দেখা করার কথা ছিল। কিন্তু পরে বিকেল চারটেয় রাজ্যপাল ফাগু চৌহানের সঙ্গে দেখা করার সময় নির্ধারিত হয়। বিহারে তুমুল সঙ্কটের মধ্যে বিজেপি-জেডিইউ সরকার পতনের জল্পনা তৈরি হয়েছে।
শোনা যাচ্ছে, জনতা দল এবং বিরোধী রাষ্ট্রীয় জনতা দল নেতৃত্ব আলাদা আলাদা ভাবে নিজেদের বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। বৈঠকের পরই নীতীশ কুমার রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছেন। মনে করা হচ্ছে, আজই সরকারের উপর সমর্থন তুলে নেবেন তিনি। সেক্ষেত্রে আরজেডি-কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধে ২০১৫ সালের মতো মহাজোট সরকার তৈরি করবেন তিনি। কিন্তু তিনিই কি আবার মুখ্যমন্ত্রী হবেন নাকি অন্য কেউ তা নিয়েও জল্পনা তৈরি হয়েছে।
এদিকে, জনতা দলের সাংসদ-বিধায়কদের নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে বৈঠক হয়। সেই বৈঠকেই নাকি বিজেপির সঙ্গত্যাগের প্রসঙ্গে কথা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। কিন্তু জনতা দল নেতৃত্ব সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রিত্ব পদ ছাড়বেন না নীতীশ। বরং তাঁর মন্ত্রিসভায় বিজেপির সদস্যদের সরিয়ে দিয়ে অন্য দলের বিধায়কদের আনবেন তিনি। এই মর্মে রাজ্যপালের কাছে আবেদন জানাবেন নীতীশ। এবার যে দল তাঁকে সমর্থন জানাবে তাঁদের বিধায়করাই নয়া মন্ত্রিসভায় জায়গা পাবেন।
আরও পড়ুন বিজেপির সঙ্গ ছাড়ছেন নীতীশ! জল্পনার মধ্যেই পাটনায় বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী
অন্যদিকে, পাটনায় মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবন থেকে ঢিল ছোড়া দূরে সার্কুলার রোডের বাংলোয় আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব এবং মা রাবড়ি দেবী দলীয় বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে জানা গিয়েছে। সেই বৈঠকে জনতা দলের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার কথা নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। এদিন, মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে বিশাল পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
বিগত কয়েকদিন ধরে জেডিইউ এবং আরজেডির মধ্যে সাপে-নেউলে সম্পর্ক আর নেই। বরং মাখামাখিই বেশি হচ্ছে। তেজস্বীর ডাকা রমজান মাসের ইফতারে সপার্ষদ এসেছিলেন নীতীশ। ইদানীং দুই শিবির একে অপরকে আক্রমণ করছে না। নীতীশের সঙ্গে সুসম্পর্ক দেখা গিয়েছে তেজস্বীর। গত রবিবার তেজস্বী যাদবের কেন্দ্রের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বিক্ষোভ নিয়ে জনতা দলের বক্তব্য ছিল, প্রতিবাদের অধিকার রয়েছে তাঁর। বিরোধী দলকে খোঁচা দিচ্ছে না শাসক দল, তাতেই জল্পনা তুঙ্গে।
আরও পড়ুন বিহার রাজনীতিতে নয়া মোড়, বিজেপি-সঙ্গ ছাড়ছেন নীতীশ? সন্ধেয় জরুরি বৈঠক
সম্প্রতি লালু এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ ভোলা যাদবের বাড়িতে চাকরি দুর্নীতির অভিযোগে সিবিআই তল্লাশি নিয়ে মুখে কুলুপ আঁটে নীতীশের দল। এর পরই সোমবার জনতা দলের সর্বভারতীয় সভাপতি রাজীব রঞ্জন সিং জানান, দল বিধায়কদের বৈঠক ডেকেছে। জনতা দলের নেতা আর সি পি সিংকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করেছে বিজেপি। নীতীশের সঙ্গে আলোচনা না করেই এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ জেডিইউ নেতৃত্ব।
এদিকে, আরজেডি বৈঠক ডাকায় রাজনৈতিক মহলে জল্পনা তুঙ্গে। কিন্তু লালুর দলের রাজ্য সভাপতি জগদানন্দ সিং বলেছেন, “নীতীশকে আমাদের তরফে কোনও প্রস্তাব দেওয়া হয়নি। সবটাই জল্পনা।” তবে আরজেডি সূত্রে খবর, জোট সরকার গঠনের সব প্রস্তুতি সাড়া। তবে কয়েকটি বিষয়ে আলোচনা হওয়া বাকি। বিশেষ করে নেতৃত্ব দান এবং মন্ত্রিত্ব বণ্টন। এই বিষয়ে বিরোধী দলনেতা তেজস্বী আশ্চর্যরকম ভাবে নীরবতা রেখেছেন।