অসমের জাতীয় নাগরিক পঞ্জীতে যাদের নাম তালিকাভুক্ত হয়নি, তাদের সঙ্গে কোনও রকম জোরজুলুম করতে নিষেধ করল শীর্ষ আদালত। এ ব্যাপারে কেন্দ্রকে একটি সাধারণ নিয়ামক ব্যবস্থা তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। অসমের এন আর সি-র দ্বিতীয় খসড়ায় ২ কোটি ৯০ লক্ষ মানুষের নাম তালিকাভুক্ত হয়েছে। প্রথম খসড়ায় মোট নাম ছিল ১ কোটি ৯০ লক্ষ মানুষের। নাগরিক পঞ্জীতে তালিকাভুক্তি চেয়ে আবেদনকারীর সংখ্যা ৩.২৯ কোটি।
শীর্ষ আদালত কেন্দ্রকে জানিয়েছে, অসম এন আর সি-তে যাঁদের নাম নথিভুক্ত হয়নি, তাঁদের সঙ্গে কোনও রকম জোরজুলুম করা যাবে না, কারণ যে তালিকা প্রকাশিত হয়েছে, তা একটি খসড়ামাত্র। সরকারকে সাধারণ নিয়ামক ব্যবস্থা (standard operating procedure বা SOP) তৈরির জন্য আগামী ১৬ অগাস্ট পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে ওই SOP অনুমোদনের জন্য জমা দিতে হবে। একই সঙ্গে বলা হয়েছে, যাঁদের নাম বাদ গেছে তাঁরা যাতে নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য প্রয়োজনীয় সওয়াল করতে পারেন, সে ব্যাপারে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা করতে হবে।
আরও পড়ুন, এন আর সি: রাজ্যসভায় অধিবেশন মুলতুবি
বিচারপতি রঞ্জন গগৈ ও আর এফ নরিম্যানকে নিয়ে গড়া বেঞ্চ এদিন জানিয়েছেন, ১৬ অগাস্টের আগে সাধারণ নিয়ামক ব্যবস্থা কী নেওয়া হচ্ছে তা আদালতকে জানাতে হবে। এছাড়াও কারা নাগরিক পঞ্জীতে নাম বাদ পড়া নিয়ে আপত্তি তুলেছেন, তা স্থানীয় রেজিস্ট্রারকে নোটিশ দিয়ে জানাতে হবে, এবং তাঁদের বক্তব্য শোনার জন্য প্রয়োজনীয় বন্দোবস্ত করতে হবে।
এর আগে, বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সাহসিকতার অভাবের অভিযোগ তোলেন। তাঁর বক্তব্য, ১৯৮৫ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী অসম চুক্তি স্বাক্ষর করলেও জাতীয় নাগরিক পঞ্জী লাগু করার সাহস করতে পারেননি। অসমে ‘অবৈধ বাংলাদেশি’দের কংগ্রেস বাঁচাতে চাইছে কিনা সে প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি সভাপতি।
কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে এই ইস্যুতে আক্রমণাত্মক ভূমিকা নিয়েছেন এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার দিল্লিতে ক্যথলিক বিশপ কনফারেন্সে ভাষণ দিতে গিয়ে জাতীয় নাগরিক পঞ্জীর তালিকা থেকে দেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ফকরুদ্দিনআলি আহমেদের পরিবারবর্গের নাম বাদ পড়ার প্রসঙ্গ তোলেন।
তিনি বলেন, দেশে ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুল’ পদ্ধতি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। এভাবে চললে রক্তগঙ্গা বয়ে যাবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তৃণমূল নেত্রী।