মঙ্গলবার তৃতীয় দফার ভোটে দিনভর খবরের শিরোনামে আরামবাগের তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা মণ্ডল। সংবাদমাধ্যমের ভিডিও ফুটেজে দেখা গিয়েছিল, কীভাবে আরামবাগের আরান্ডিতে তাঁকে বাঁশ-লাঠি দিয়ে পারতে ছুটে আসে গ্রামবাসী। মাথায় বাঁশ দিয়ে মারা হয়, গাড়ি লক্ষ্য করে আধলা ইট ছোঁড়া হয়। প্রাণ বাঁচাতে খেতের উপর দিয়ে দৌড়ে পালান তৃণমূল প্রার্থী। তাঁকে বাঁচাতে দেহরক্ষী আগ্নেয়াস্ত্র বের করতে বাধ্য হন। কিন্তু দমেননি সুজাতা।
অথচ সেই ঘটনার কোনও উল্লেখই নেই পুলিশ সুপারের রিপোর্টে। কমিশনকে দেওয়া রিপোর্টে তিনি জানিয়েছেন, তৃণমূল-বিজেপি কর্মীদের মধ্যে হাতহাতি হচ্ছিল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সুজাতা। ছোটখাটো জখমের খবর মিলেছে। বাকি নির্বিঘ্নেই ভোট মিটেছে বলে দাবি করেছেন পুলিশ সুপার। এমনকী পুলিশ সুপারের আরও দাবি, সুজাতা গিয়ে বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে বচসায় জড়ান। তাঁদের উত্তেজিত করেন। তখনই মারমুখী হয় জনতা। কিন্তু দিনভর টিভির পর্দায় যা দেখা গেল, তার সঙ্গে আকাশ পাতাল তফাৎ পুলিশ সুপারের রিপোর্টে।
যদিও তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা মণ্ডলকে মারধরের ঘটনায় ইতিমধ্যে পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। তার আগে রাজ্যের বিশেষ পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবেকে ফোন করেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। সুজাতাকে আক্রমণের বিষয়ে অভিযোগ করেন তিনি। তারপরই সুজাতা কাণ্ডে রিপোর্ট তলব করে কমিশন। গ্রামে গিয়ে তদন্ত করে পুলিশ সুপার রিপোর্ট জমা দেন। কিন্তু সেই রিপোর্টে ভিডিও ফুটেজের সঙ্গে কোনও মিল নেই।
এদিকে, সুজাতার মাথা ফাটার ঘটনায় উল্টে স্ত্রীকেই দোষ দিয়েছেন স্বামী তথা বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। এই ঘটনা প্রসঙ্গে যুব মোর্চার সভাপতি বলেন, “নিজের কর্মের ফল পেয়েছে। কে বলেছিল, ভোটের দিন বুথে বুথে গিয়ে দাদাগিরি করতে? মানুষ তৃণমূলকে আর চাইছে না। গত ১০ বছর মানুষ ওই এলাকায় ভোট দিতে পারেননি মানুষ। তাঁরা আজ ভোট দিচ্ছেন। যাঁরা ভোট চুরি করে জিতবেন ভেবেছিলেন, তাঁরা পারেননি। জনগণ জেগে উঠেছে এখন। এসব ক্ষোভের বহিপ্রকাশ। তাঁরা কোথায় ভোট দেবে সেটা তাঁদের ব্যাপার। দেখতে যাওয়ার কিছু নেই। “