গত তিন দিনে সংসদে রেকর্ড বিরোধী সাংসদ বহিষ্কার ঘিরে বিতর্ক জারি। যাতে অন্য মাত্রা যোগ করলেন তৃণমূলের লোকসভার সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার সাসপেন্ড হওয়া বিরোধী সাংসদদের একাংশ সংসদের অভ্যন্তরে গান্ধীমূর্তির কাছে ধর্না দিচ্ছিলেন। সেখানেই দেখা যায়, রাজ্যসভার চেয়ারম্যান তথা উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়কে ভেঙাচ্ছেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই অঙ্গভঙ্গির ভিডিয়ো রেকর্ড করছেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। কল্যাণের অঙ্গভঙ্গি দেখে সেখানে উপস্থিত সকল বিরোধী সাংসদরা সমস্বরে হাসছেন। গোটা ঘটনা মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায়। এরপরই কল্যাণের অঙ্গভঙ্গি নিয়ে মুখ খোলেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়।
ধনখড়কে ‘নকল’ করা নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। ‘নকল’ করার ঘটনাকে 'দুর্ভাগ্যজনক' বলেই মন্তব্য করেছেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়। রাজ্যসভার চেয়ারম্যান তথা উপরাষ্ট্রপতি ধনখড়কে অপমানের জেরে এবার সরব খোদ প্রধানমন্ত্রী। সংসদভবনে এই ধরণের ঘটনার নিন্দা জানিয়ে মোদী বলেছেন, ‘আমিও অপমান সহ্য করেছি’।
প্রধানমন্ত্রী মোদী বুধবার সংসদে বহিষ্কৃত সাংসদের অসম্মানজনক আচরণের জন্য উপরাষ্ট্রপতি তথা রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়ের কাছে হতাশা প্রকাশ করেছেন। গতকাল বহিষ্কারের প্রশ্নে সাংসদরা তাদের প্রতিবাদ অবস্থানে সামিল হন। সেই সঙ্গে ক্ষমতাসীন বিজেপির তীব্র নিন্দা জানান। এই সময় জগদীপ ধনখড়লে নকল করেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তা নিয়ে এবার মোদীর গলায় অসন্তোষের সুর ধরা পড়ল।
এবার নকল করা নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন, তৃণমূল কংগ্রেস নেতা এবং সাংসদ কল্যাণ বন্দোপাধ্যায়। যিনি রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়কে নকল করেন বলেই অভিযোগ। এই ঘটনায় বিবৃতি দিয়ে তিনি বলেন, 'নকল করা একটি শিল্প। চেয়ারম্যানের প্রতি আমার পূর্ণ শ্রদ্ধা রয়েছে। কাউকে কষ্ট দেওয়া আমার উদ্দেশ্য ছিল না'।
পাশাপাশি তিনি বলেন, "ধনখড় জির প্রতি আমার অনেক শ্রদ্ধা আছে। তিনিও আমার পেশার সঙ্গে যুক্ত মানুষ। তিনি আমাদের প্রাক্তন রাজ্যপাল ছিলেন। বর্তমানে তিনি আমাদের উপরাষ্ট্রপতি। আমি শুধু এক ধরনের 'শিল্প প্রদর্শন' করেছি।
এই ঘটনায় বিবৃতি দিয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়গেও। তিনি বলেন, যা হয়েছে তা সংসদ ভবনের বাইরের বিষয়। একইসঙ্গে সাংবাদিকরা রাহুল গান্ধীকে এই ইস্যুতে প্রশ্ন করলে তিনি বলেছিলেন যে তিনি এই বিষয়ে কোনও বিবৃতি দিতে চান না।
এই বিষয়ে জগদীপ খনখড় এক্সে লিখেছেন, 'মোদীজি আমাকে ফোন করে বলেন, তিনি বিশ বছর ধরে এই ধরনের অপমানের শিকার হয়েছেন। তবে এই ধরণের ঘটনা সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানেও ঘটতে পারে তা তিনি কল্পনা করেন নি। সংসদে এই ধরণের ঘটনাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলেই উল্লেখ করেছেন মোদী। জবাবে উপরাষ্ট্রপতি বলেন, তিনি প্রধানমন্ত্রীকে বলেছেন যে এই ধরনের ঘটনা তাকে তার দায়িত্ব পালন থেকে বিরত করবে না'।