অাসামে নাগরিক পঞ্জিকরণ নিয়ে হৈ হৈ কান্ড বেঁধে গিয়েছে দেশজুড়ে। বিশেষত নানা ভাবে এই প্রক্রিয়ার প্রতিবাদ করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। আজ বৃহস্পতিবার আসামে গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ এবং বিধায়ক মিলিয়ে আট জনের একটি প্রতিনিধি দল। কিন্তু এই নাগরিক পঞ্জিকরণে নাম বাদ যাওয়া নিয়ে কংগ্রেস-সিপিএম অভিযোগের অাঙুল তুলেছে খোদ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিরুদ্ধে। বিধানসভায় এই সংক্রান্ত প্রশ্নের সঠিক জবাব দিতে পারেননি তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও মন্ত্রীও। বিরোধীদের দাবি, একদিকে নাম বাদ যাওয়া নিয়ে দেশব্য়াপী হইচই চলছে। তৃণমূল কংগ্রেস প্রথম দিন থেকেই প্রতিবাদ জানিয়েছে, কিন্তু কার্যত রাজ্য সরকারের অবহেলার জন্য়ই যে এক লক্ষের ওপর বাঙালীর নাম বাদ গেল, তা রাজ্য়বাসীর জানা দরকার। একটু সতর্ক থাকলে এঁদের নাম অন্তত বাদ যেত না। বা পরিস্কার হয়ে যেত আদৌ এঁরা এই রাজ্য়ের বাসিন্দা কী না।
আরও পড়ুন: তৃণমূল দল আটক শিলচর বিমানবন্দরে, ‘সুপার ইমারজেন্সি’ বললেন ডেরেক
আসামে বসবাসকারী এ রাজ্য়ের লক্ষাধিক বাসিন্দার নাম কেন বাদ গেল? কী অভিযোগ রাজ্য় সরকারের বিরুদ্ধে? সিপিএম বিধায়ক সুজন চক্রবর্তীর অভিযোগ, "১,১৪,০০০ নাম প্রমাণীকরণের জন্য় এই রাজ্য়ে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু রাজ্য় থেকে জবাব গিয়েছে কমবেশি ৭,০০০। বস্তুত আমরা যে হইচই করছি, আমাদেরও ভুল থেকে যাচ্ছে। আমরা ঠিক সময় এদিকে নজর দিইনি।" এই প্রসঙ্গ উঠেছিল বিধানসভার বাদল অধিবেশনে, কিন্তু সদুত্তর মেলেনি। সুজনবাবুর বক্তব্য়, "এই ঘটনা জানতে চেয়ছিলাম বিধানসভায়। কোন সঠিক জবাব দিতে পারেনি সরকার পক্ষ। পরে বেসরকারি ভাবে তাঁরা বলেছেন যে তারা ফেল করেছেন। সবটা পাঠাতে পারেননি। এমন নানা অজুহাত দিয়েছেন।"
রাজ্য় সরকারের এই ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করেছে রাজ্য় কংগ্রেস। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লিতে গিয়ে কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গ শলাপরামর্শ করলেও এখানে তৃণমূলের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন রাজ্য় কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তিনি বলেন, "এটাকে বলে দ্বিচারিতা। বিজেপি যেমন বিষয়টির সাম্প্রদায়িকরণ করছে, তেমনি তৃণমূল আঞ্চলিকিকরণ করছে। বাঙালীর আবেগকে উস্কে দিয়ে বাংলার মানুষের ভোট নিজের পকেটে আনার চেষ্টা করছে। এটা সঙ্কীর্ণ রাজনীতির নামান্তর। বাংলার বাঙালীদের বিপদ বাড়াচ্ছে। যেখানে নিজের রাজ্য় থেকে একটু কাজ করলে সেখানকার আরও কয়েক লক্ষ বাঙালীর নাম নথিভুক্ত হয়ে যেত।" তাঁর বক্তব্য়, "নিজের কাজ না করে ৪০ লক্ষ লোক তাড়িয়ে দিলে বাংলায় স্থান দেবে। অন্য়দিকে কোচবিহারের বর্ডার সিল করে দিয়েছে। প্রকৃত ভাবে কাদের নাম বাদ গেল, না গেল তা নিয়ে কোনও মাথা ব্য়াথা নেই।’’