এনআরসি বিতর্কে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে সহমত প্রকাশ করলেন ইউনাইটেড সোশ্যালিস্ট পার্টির সম্পাদক মিজানুর রহমান। সোমবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে দিলীপ ঘোষ স্পষ্ট ঘোষণা করলেন, "বিরোধীরা যতই বিরোধিতা করুক, এনআরসি হবেই। আমাদের দম আছে।" উল্লেখ্য, আজ, মঙ্গলবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে এনআরসি প্রসঙ্গে বক্তৃতা দেবেন অমিত শাহ।
সোমবার কলকাতা প্রেস ক্লাবের এনআরসি বিতর্কে কংগ্রেস নেতা সর্দার আমজাদ আলি, সিপিএম বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী একযোগে কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মকাণ্ডের তীব্র বিরোধিতা করেন। অন্যদিকে, মিজানুর রহমানের বক্তব্য, "এনআরসি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এত ভয় কেন? পশ্চিমবঙ্গে মুসলিমদের ভয় নেই, আমরা বাংলাদেশ থেকে আসিনি। বরং এই ইস্যুতে নামের সংশোধন হয়ে যাচ্ছে। আমরা অশিক্ষিত তাই আমাদের দৌড় করাচ্ছে সবাই। আসামে ১১ লক্ষ হিন্দুরও নাম নেই।"
আরও পড়ুন: পুজো উদ্বোধনে অমিত শাহ, উদ্যোক্তাদের দ্বন্দ্ব চরমে
এদিন সুজন চক্রবর্তী ও সর্দার আমজাদ আলি এনআরসি নিয়ে তীব্র বিরোধিতা করেন। বাম পরিষদীয় দলনেতা এদিন বলেন, "বিদেশি চিহ্নিত করার জন্য এত কর্মকাণ্ডের কী দরকার! সবাইকে কেন সন্দেহ করা হচ্ছে? এটা এক ধরনের অসভ্যতা। শুধু মুসলিম নয়, সব মানুষকে বিপদে ফেলা হচ্ছে। মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে। ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব মানা যায় না। এটা মানবো না।" সর্দার আমজাদ আলির দাবি, "এনআরসি-র মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক বিভাজন চলছে। মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।"
আরও পড়ুন: বিধান ভবনে ‘আলিমুদ্দিন’, ইতিহাসে ‘প্রথমবার’!
এ রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় এলে যে এনআরসি করবেই, তা এদিন ফের স্পষ্ট করেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, "এনআরসি আমরা করিনি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এনআরসি হয়েছে। আমাদের দম আছে। এ রাজ্যে সংখ্যালঘু ১৯ শতাংশ থেকে ৩৩ শতাংশ হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীই বলছেন, ৩৩ শতাংশ। এখানে মুসলিমদের গরিব, অপরাধী ও অশিক্ষিত করে রাখা হয়েছে। মুসলিমদের সামান্য মানুষও মনে করা হয় না। আর এখন তাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে মুসলিমদের খেপানো হচ্ছে। মঙ্গলবার অমিত শাহ এ কথাই বলবেন।"
সম্প্রতি এ রাজ্যে এনআরসি আতঙ্কে মৃত্যু ঘটছে বলে অভিযোগ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। রেশন কার্ড সংশোধনের লাইনে ভোর থেকে লম্বা লাইন পড়ে যাচ্ছে। বিজেপির রাজ্য সভাপতির দাবি, "দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলেও এনআরসি-কে দায়ী করা হচ্ছে। এর জন্য ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণও দেওয়া হচ্ছে। বিরোধীরা তিনতালাক, ৩৭০, জিএসটি আটকাতে পারেননি। আর এখন তাঁরা যতই চিৎকার করুন বা রাস্তায় নামুন, এখানে এনআরসিও আটকাতে পারবেন না।" তবে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল লোকসভায় কবে পেশ হবে, সে বিষয়ে কিছু বলতে পারেননি দিলীপ। এ ক্ষেত্রে তাঁর বক্তব্য, "একটু অপেক্ষা করেই দেখুন না।"