বিজেপি বাঙালী বিরোধী নয়, মমতা বিরোধী। অমিত শাহর এই বক্তব্যের কড়া জবাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "বাংলা বিরোধী কাজ করবে আর বাংলায় স্থান পাবে, তা আবার হয় নাকি? ওই লোকগুলো বাঙালী, সেটাই কি তাঁদের অপরাধ?" এখানেই থামেননি মমতা। তাঁর প্রশ্ন, "অমিত শাহর বাবার জন্ম সার্টিফিকেট আছে তো?"
১১ অগাস্ট মেয়ো রোডে যুব মোর্চার জনসভায় অমিত শাহ এনআরসি ইস্যুতে বারে বারে বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন তাঁরা অনুপ্রবেশকারীদের দেশ থেকে হঠাতে চাইছেন। বিজেপি আদতে বাঙালী বিরোধী নয়। মমতা এদিন বারে বারে প্রমান করার চেষ্টা করেন অমিত শাহ বা বিজেপি বাঙালী বিরোধী। অাসামে এনআরসির মাধ্যমে তাঁরা বাঙালী খেদানো অভিযান চালাচ্ছেন।
মমতার দাবি, "অাসামে যে ৪০ লক্ষর নাম বাদ গিয়েছে নাগরিক পঞ্জি থেকে, তাঁদের মধ্যে ৩৮ লক্ষই বাঙালি, ২৫ লক্ষ বাঙালী হিন্দু। এবং ১৫ লক্ষ বাঙালী মুসলিম। বাকি ২ লক্ষ বিহারী, নেপালী-সহ অন্য রয়েছেন। নাগরিকদরে গায়ের জোরে শরণার্থী বানানো হচ্ছে। স্বাধীন হয়েও তাঁরা পরাধীন। স্বাধীনতা সংগ্রামীর পরিবারের নাম বাদ গিয়েছে।বাংলার প্রতিনিধিদের আসামে ঢুকতে দেওয়া হল না কেন? নাগরিক পঞ্জি নিয়ে এত ভয় কেন? নাগরিক পঞ্জি কি স্বচ্ছ নয়?"
মুখ্য়মন্ত্রীর বক্তব্য, প্রতিবাদ করলে হেনস্থা হতে হচ্ছে। কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে না। যাঁরা প্রতিবাদ করছেন, তাঁদের ডিটেনশন ক্যাম্পে রাখা হচ্ছে, নতুবা জেলে ভরে দেওয়া হচ্ছে। এনআরসির নাম করে স্বাধীনতা হরণ করা হচ্ছে। মুর্শিদাবাদ থেকে কাপড় বিক্রি করতে গিয়েছিলেন যাঁরা, তাঁদের ডিটেনশন ক্যাম্পে আটকে রাখা হয়েছে। ক্যাম্পে অনেক শিশুও রয়েছে।
তিনি বলেন, ভোটের দিকে তাকিয়ে রাজনৈতিক অস্ত্র হচ্ছে এনআরসি। ভারত-পাক সমস্যাও তৈরি করা হয় ভোটের দিকে নজর রেখেই। ঠিক তেমনই। তাঁর প্রশ্ন, উদ্বাস্তু সমস্যার সময় বিজেপি কোথায় ছিল?
মঙ্গলবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে এনআরসি নিয়ে তোপ দেগেই ছাড়েননি মমতা। তাঁর পাল্টা প্রশ্ন ছিল, অমিত শাহর কাছে তাঁর পিতার জন্মের আসল নথি রয়েছে? অথবা অটল বিহারী বাজপেয়ী বা লালকৃষ্ণ অাদবানীর বাবা-মায়ের জন্মের নথি রয়েছে? মুখ্যমন্ত্রীর নিজের কাছে তাঁর বাবা-মায়ের জন্মের নথি নেই বলে পরিস্কার জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। এমনকী তাঁর জন্মের নথিও নেই বলেও তিনি জানান।