‘বিজেপি-আরএসএস’-এর অনুষ্ঠান, রাম মন্দিরের উদ্বোধনে থাকবে না কংগ্রেস। এই ব্যাপারে দলের তরফে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘বিজেপি এবং আরএসএসের নেতাদের দ্বারা অসম্পূর্ণ মন্দিরের উদ্বোধন স্পষ্টতই নির্বাচনী লাভের জন্য এগিয়ে আনা হয়েছে। তাই কংগ্রেস এই অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছে।’
আগামী ২২ জানুয়ারি রাম মন্দিরের উদ্বোধন। কিন্তু, সেই অনুষ্ঠানে থাকবে না কংগ্রেস। কারণ, সেটা ‘বিজেপি-আরএসএস’-এর অনুষ্ঠান। এমনটাই মনে করছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। এই ব্যাপারে দলের তরফে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘বিজেপি এবং আরএসএসের নেতাদের দ্বারা অসম্পূর্ণ মন্দিরের উদ্বোধন স্পষ্টতই নির্বাচনী লাভের জন্য এগিয়ে আনা হয়েছে। তাই কংগ্রেস এই অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করছে।’
এর মাঝেই দলের উল্টোপথেই হাঁটতে চলেছেন হিমাচল প্রদেশের মন্ত্রী বিক্রমাদিত্য সিং। তিনি বলেছেন, 'আমি এবং আমার পরিবার অযোধ্যার ঐতিহাসিক মুহূর্তের অংশ হওয়ার সুযোগ পেয়েছি। আমি সৌভাগ্যবান যে হিমাচলের কয়েকজন লোকের মধ্যে আমিও একজন যারা 'প্রাণ প্রতিষ্টা'-এর জন্য আমন্ত্রণ পেয়েছেন। জীবনে একবারের সুযোগ আসে। আমি রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদকে এই সুযোগ দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানাতে চাই"। একই সঙ্গে বিক্রমাদিত্য সিং ২২ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া অযোধ্যা রাম মন্দিরের 'প্রাণ প্রতিস্থা' অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথাও জানিয়েছেন। দলের সিদ্ধান্তের বিপরীতে বিক্রমাদিত্য সিংয়ের এই ঘোষণা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহল।
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসেরর সঙ্গে কথা বলার সময় হিমাচলের মন্ত্রী বলেন, “আমি আমার আগের বক্তব্যে অটল। আমি রাজনীতিবিদ হিসেবে নয়, প্রয়াত বীরভদ্র সিং-এর পুত্র, ভগবান রামের একজন ভক্ত হিসেবে অযোধ্যা সফর করতে চাই। তার ছেলে হিসেবে উপস্থিত থাকা আমার নৈতিক দায়িত্ব"।
বিক্রমাদিত্য সিং বলেছেন, “আমি আমার মতামত দলের সিনিয়র নেতাদের জানিয়েছি। বাবা রাম জন্মভূমি আন্দোলনে জড়িত ছিলেন। যাইহোক, আমি স্পষ্ট করতে চাই, আমি আরএসএস-ভিএইচপি, বিজেপির হিন্দু রাষ্ট্রের আদর্শ এবং তাদের মেরুকরণ নীতির বিরোধিতা করি। আমি কংগ্রেসের আদর্শের প্রতি অনুগত একজন নিবেদিতপ্রাণ কর্মী।” তিনি যোগ করেছেন, "গতকাল, আমাদের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখুও উল্লেখ করেছেন যে অযোধ্যা সফরের আমন্ত্রণের প্রয়োজন নেই।"
সিমলার (গ্রামীণ) বিধায়ক বিক্রমাদিত্য সিংকে আরএসএস-ভিএইচপি অযোধ্যায় রামমন্দির অভিষেক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। আমন্ত্রণ পেয়ে তিনি বলেছিলেন, “এটা কোনো রাজনৈতিক বিষয় নয়। আমি হিমাচল প্রদেশ থেকে নির্বাচিত আমন্ত্রিতদের মধ্যে থাকতে পেরে সৌভাগ্য বোধ করছি, এবং আমার পরিবারকে দেওয়া এই সম্মানের জন্য আরএসএস এবং ভিএইচপিকে ধন্যবাদ জানাই। এই উপলক্ষে প্রভু রামের প্রাণ প্রতিষ্টার সাক্ষী হওয়া আমার দায়িত্ব।"
এদিকে, অন্য একজন প্রতিমন্ত্রী অনিরুধ সিং, যিনি অযোধ্যায় যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন, তিনি বলেছিলেন, "আমি উল্লেখ করেছি যে আমরা ফেব্রুয়ারিতে অযোধ্যায় যাব, এবং আমি সেই বক্তব্যে অটল।"
এবিষয়ে দলের এক সিনিয়ার নেতা বলেছেন " দলের কেউ যদি ২২ শে জানুয়ারি অযোধ্যায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় তবে এটি তাদের ব্যক্তিগত পছন্দ"। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কংগ্রেস নেতা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, " সামনেই লোকসভা নির্বাচন। ২০১৪/২০১৯ দুটি নির্বাচনেই আমাদের দল রাজ্যের চারটির মধ্যে একটিও লোকসভা আসনও পায় নি। বিজেপি রামমন্দির ইস্যুকে পুঁজি করেছে, সম্ভবত আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে এটিকে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে"। হিমাচলের দেরা আসন থেকে নির্দল বিধায়ক হোশিয়ার সিং জোর দিয়েছিলেন, "রাম মন্দির ইস্যুটি হিমাচল প্রদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটিকে শুধুমাত্র রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা উচিত হবে না"।