'ঘৃণ্য… নির্লজ্জ….' প্রশ্নে ভীত মহুয়া! এথিক্স কমিটির চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অবমাননাকর শব্দ ব্যবহারের মারাত্মক অভিযোগ মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে। তৃণমূল সাংসদের ওয়াকআউটের ঘটনা প্রসঙ্গে বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে বলেছেন - 'সংসদীয় ইতিহাসে এটি একটি অন্ধকার দিন'।
তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) সাংসদ মহুয়া মৈত্র বৃহস্পতিবার 'ক্যাশ ফর কোয়েরি' মামলায় সংসদের এথিক্স কমিটির সামনে হাজির হন। তবে পরে কমিটির বিরুদ্ধে অস্বস্তিকর প্রশ্নের অভিযোগ সামনে এনে তিনি 'ক্ষুব্ধ' হয়ে ওয়াক আউট করেন। কমিটির বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ সামনে আনেন তৃণমূল সাংসদ। একই সঙ্গে বিরোধী দলের সাংসদরাও বৈঠক বয়কট করেন। সাংবাদিক সম্মেলনে মহুয়া মৈত্র দাবি করেছেন, সংসদীয় এথিক্স কমিটির বৈঠকে তাকে 'ব্যক্তিগত এবং অশ্লীল' প্রশ্ন করা হয়েছে। একই সঙ্গে মহুয়ার বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে।
অন্যদিকে মহুয়া মৈত্রকে সমর্থন করে বিএসপি সাংসদ দানিশ আলী বলেন, "কমিটির চেয়ারম্যান আপত্তিকর প্রশ্ন করায় আমরা কমিটির বৈঠক ওয়াক আউট করি"। একই সময়ে, বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে তার অভিযোগ পুনর্ব্যক্ত করেছেন এবং বলেছেন যে মহুয়া মৈত্র যাই করুক বলুন না কেন, তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তার দায় সাংসদকে নিতেই হবে। তিনি মহুয়ার আচরণকে সংসদীয় শৃঙ্খলার বিরুদ্ধে এবং সংসদীয় ইতিহাসের অন্ধকারতম দিন হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
তথ্য অনুযায়ী, এথিক্স কমিটি মহুয়া মৈত্রকে অনেক প্রশ্ন করেছিল। এর মধ্যে দর্শন হিরানন্দানির হলফনামা, বিশেষ করে তার বিদেশ সফর সম্পর্কে সরাসরি প্রশ্ন করা হয়েছিল। মহুয়াকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল তার বিদেশ সফরের খরচ কে বহন করে? এই ভ্রমণের সময় তিনি কোন হোটেলে ছিলেন এবং কে এর জন্য অর্থ প্রদান করেছিল?
আরও পড়ুন সিঙ্গুর-পর্বের ১৫ বছর পার: “টাটাদের ক্ষতিপূরণ, ক্ষমতায় তৃণমূল, আমাদের কী হবে?”
ব্যক্তিগত ও অশ্লীল প্রশ্নে অস্বস্তি বোধ করে বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের সঙ্গে তিনি এথিক্স কমিটির বৈঠক থেকে ওয়াকআউট করেন। যারা এদিনের বৈঠক ওয়াকআউট করেছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন বিএসপি সাংসদ দানিশ আলি, জনতা দলের (ইউনাইটেড) সাংসদ গিরিধারী যাদব এবং কংগ্রেস সাংসদ উত্তম কুমার রেড্ডি। গিরিধারী যাদব পরে বলেছিলেন, “তিনি মহুয়া মৈত্রকে ব্যক্তিগত প্রশ্ন করেছিলেন। তাদের ব্যক্তিগত প্রশ্ন করার অধিকার নেই। তাই আমরা ওয়াক আউট করেছি”।
মৈত্র তদন্তে সহযোগিতা করেননি: বিনোদ সোনকর
সংসদীয় এথিক্স কমিটির চেয়ারম্যান বিনোদ সোনকর বলেছেন যে মহুয়া তদন্তে সহযোগিতা করেননি। তিনি বলেন, “বিরোধী দলের সদস্যরা যে অভিযোগ করেছেন তা ভিত্তিহীন। প্রশ্ন এড়াতে বৈঠক থেকে বেরিয়ে যান তিনি"।
এদিকে কমিটির সদস্য অপরাজিতা সারঙ্গী বলেন, “মৈত্র অত্যন্ত আক্রমণাত্মক ও অশ্লীলভাবে কথা বলছিলেন। বিজেপি সাংসদ সারঙ্গী আরও বলেন, “যাওয়ার সময় মহুয়া মৈত্র চেয়ারম্যানের উদ্দেশ্যে ‘অসম্মানজনক’ এবং ‘নির্লজ্জ’ শব্দ ব্যবহার করেছিলেন।”
টিএমসি সাংসদ মহুয়া মৈত্রার বিরুদ্ধে 'ক্যাশ ফর কোয়েরি'-এর অভিযোগে, বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে বলেছেন, “তিনি (মহুয়া মৈত্র) জনসাধারণের কাছে একটি বিভ্রান্তিকর 'গল্প' উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছিলেন। এথিক্স কমিটির চেয়ারম্যান বিনোদ সোনকরের বিরুদ্ধে ‘অসম্মানজনক’শব্দ ব্যবহারের অভিযোগ করেন নিশিকান্ত।
নিশিকান্ত দুবে বলেছেন, “আমি এবং অন্যদের দেওয়া সমস্ত প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে এটা বলতে পারি, কোনও শক্তি মহুয়া মৈত্রকে বাঁচাতে পারবে না। ভুল তথ্য জনগণের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছে তৃণমূল সাংসদ। আজ যা ঘটেছে তা সংসদীয় ইতিহাসের সবচেয়ে কালো দিন"।