মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে একমত নয় আরএসএস। রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের বিশ্বাস, এই জাতীয় সমস্যাগুলি সমাজের উপরেই ছেড়ে দেওয়া উচিত। আরএসএস-এর শীর্ষ নেতৃত্ব মনে করেন, হিজাব বিতর্ক নিয়েও অপ্রয়োজনীয়ভাবে জলঘোলা হয়েছে, বিতর্ক বাইরে ছড়িয়েছে। হিজাব বিতর্কটি নিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে আলোচনা করা উচিত ছিল বলে মনে করে আরএসএস। আগামী ১১ ও ১৩ মার্চ আহমেদাবাদে অখিল ভারতীয় প্রতিনিধিদের (এবিপিএস) বৈঠকের সময় অন্যান্য সমসাময়িক বিষয়গুলির পাশাপাশি এই দুটি বিষয় নিয়েও আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে আরএসএস সূত্র মারফত জানা গিয়েছে।
সংগঠনের ভবিষ্যত কর্মপন্থা ঠিক করতে এবিপিএস প্রতি বছর একটি বৈঠক করে। এই বৈঠকে আরএসএস-এর সব শীর্ষ নেতা উপস্থিত থাকেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিনিধিরা বৈঠকে আসেন। ৩০টিরও বেশি সংশ্লিষ্ট সংগঠনের সদস্যরা বৈঠকে উপস্থিত থাকেন। মোদী-শাহদের সরকারের বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্তে খুশি নয় আরএসএস।
মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স বৃদ্ধি নিয়েও অখুশি আরএসএস নেতারা। উল্লেখ্য, গত বছরের ডিসেম্বর মাসে মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৮ থেকে ২১ বছর করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার একটি বিল আনে। আলোচনার জন্য বিলটি সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, ছেলে-মেয়ে উভয়েরই বিয়ের বয়স ১৮ বছরে নামিয়ে আনার প্রস্তাবও জমা পড়ে সরকারের কাছে। তবে বেশ কয়েকটি সংগঠন সেই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে।
এব্যাপারে এক প্রবীণ আরএসএস নেতা বলেন, ''বিয়ের বয়সের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। অনেক মতামত আছে। আদিবাসীদের মধ্যে বা গ্রামাঞ্চলে বিয়ে তাড়াতাড়ি হয়ে যায়। সরকারের যুক্তি হল শিক্ষা এবং প্রারম্ভিক গর্ভাবস্থা। কিন্তু সরকারও তা ঠেলে দিতে তাড়াহুড়ো করছে বলে মনে হয় না। এ ধরনের বিষয়ে সরকারের হস্তক্ষেপ কতটা উচিত, তা নিয়েই প্রশ্ন আছে। কিছু জিনিস সমাজের উপরেই ছেড়ে দেওয়া উচিত।"
আরও পড়ুন- কর্নাটকের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব বিক্ষোভ, নেপথ্যে মৌলবাদী সংগঠন, শুনানিতে চাঞ্চল্যকর তথ্য
এমনকী বৈবাহিক ধর্ষণের বিষয়েও সংঘ পরিবারের মতামত একই বলে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে। সংঘ পরিবারের বিশ্বাস, ''এই বিষয়গুলির মোকাবিলার পন্থাও পরিবারের উপরেই ছেড়ে দেওয়া উচিত।'' এক আরএসএস নেতা বলেন, ''এগুলো নিয়ে রাজনৈতিক আলোচনা নয়, সামাজিক আলোচনা হওয়া উচিত। অসহায় সমাজ সবকিছুর জন্য আইন দাবি করে। একটি শক্তিশালী সমাজকেই সমাধান খুঁজে বের করতে হবে।''
এরই পাশাপাশি সম্প্রতি কর্নাটকের হিজাব ইস্যু নিয়েও নিজস্ব মতামত রয়েছে সংঘ পরিবারের। সংঘ নেতাদের ধারণা, অপ্রয়োজনীয়ভাবে হিজাব বিতর্কটি ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই আরএসএস নেতা বলেন, ''আমরা দেখেছি পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া এটির প্রভাবের ক্ষেত্র বাড়ানোর চেষ্টা করেছে। তবে বিষয়টি স্থানীয় পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে মেটানো উচিত ছিল। সেই কারণেই বিষয়টিকে আমরাও ঠেলে দিচ্ছি না। তবে এটাও সত্যি, যে ধারাবাহিকভাবে ধর্মীয় পরিচয় জাহির করার উপায় নিয়ে আসা ভালো নয়।''
Read full story in English