Advertisment

‘ডিজিটাল বিভাজন’ সৃষ্টি করছে অনলাইন শিক্ষা: এসএফআই

"অনলাইন ক্রমশ ব্যবসার দিকে যাচ্ছে। বিজ্ঞাপণ, অ্যাপ ব্যবহার, শিক্ষার ব্যবসা বাড়ছে।"

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Tripura School

করোনা মানব জীবনে নানা দিকেই ব্যাঘাত সৃষ্টি করেছে। চরম আঘাত হেনেছে শিক্ষা ক্ষেত্রে। প্রাথমিক থেকে উচ্চ শিক্ষা বিগত তিন মাস ধরে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। এরই মধ্যে অনলাইন ক্লাস নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। এসএফআই সম্পূর্ণভাবে এই পদ্ধতিকে শিক্ষায় 'ডিজিটাল ডিভাইড' বলে উল্লেখ করেছে। এই বামপন্থী ছাত্র সংগঠন একপ্রকার অনলাইন শিক্ষা বন্ধ করারই দাবি জানিয়েছে। অন্যদিকে বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন অনলাইনের পক্ষে মতপ্রকাশ করেছে। এরই সঙ্গে রাজ্যের বেসরকারি স্কুলগুলিতে ফি বৃদ্ধি নিয়েও ক্ষোভ ক্রমশ বাড়ছে।

Advertisment

করোনা পরিস্থিতিতে এখন শিক্ষা পদ্ধতি চালু রাখার অন্যতম উপায় অনলাইন ক্লাস। নানা অ্যাপের মাধ্যমে বিভিন্ন স্কুলে চলছে এই ক্লাস। এভাবে অনলাইন ক্লাসের তীব্র বিরোধিতা করছে বামপন্থী ছাত্র সংগঠন এসএফআই। সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য বলেন, "২০১৭-এর এক সমীক্ষা অনুযায়ী আমাদের দেশে ইন্টারনেট ও কম্পিউটার ব্য়বহার করতে জানে মাত্র ২৩ শতাংশ। তারপর টেকনিক্যাল ফল্ট আছে। স্মার্ট মোবাইল, ডেটা প্যাকের খরচ, নেটওয়ার্কের সমস্যা। সব মিলিয়ে অনলাইন হল 'ডিজিটাল ডিভাইড'। পড়াশুনার জায়গা থেকে একটা বড় অংশকে সরিয়ে দিচ্ছে। অনলাইন ক্রমশ ব্যবসার দিকে যাচ্ছে। বিজ্ঞাপণ, অ্যাপ ব্যবহার, শিক্ষার ব্যবসা বাড়ছে। অনলাইন সাপ্লিমেন্টারি। যাঁরা ব্যবস্থা করতে পারছে, করছে। তবে এই ব্যবস্থাকে কমপালসারি করা যাবে না। ইউজিসি করোনার সুযোগে অনলাইন শিক্ষা বৃদ্ধির চেষ্টা করছে।"

তবে কীভাবে হতে পারে সমাধান? সৃজন বলেন, "অস্থায়ী স্কুলের পরিকাঠামো বা বাড়তি শিক্ষক নিয়োগ করে এই পরিস্থিতিতে শিক্ষা চালু করতে পারত। তাহলেই ব্যাচ বাই ব্যাচ শিক্ষক -ছাত্র মুখোমুখি ক্লাস সম্ভব হত। এটা কোনও কারণে সরকার করছে না।" বেসরকারি স্কুলগুলির ফি বৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "মন্ত্রীকে মুখে নির্দেশ দিলে হবে না, সরকারকে নোটিফিকেশন দিতে হবে।"

এদিকে আবার অনলাইন শিক্ষা পদ্ধতিকে জোরালো সমর্থন করছে অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ ও তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। তাঁদের মতে, অনলাইনের মাধ্যমে শিক্ষা পদ্ধতি চালু রাখা সম্ভব হচ্ছে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য বলেন, "নতুন ব্যবস্থায় সবাই অভ্যস্ত হয়ে উঠতে পারেনি। তবে চেষ্টা করছে। আমার বিশ্বাস আগামী দিনে সবাই অনলাইনে অভ্যস্ত হয়ে উঠবে। ভরসা রাখছি। এটা ঠিক স্কুলের ক্লাসের কোনও বিকল্প নেই। তবে এক্ষেত্রে টেককনিক্যালি কিছু বাধা রয়েছে। আমরা বলেছি, ফি বৃদ্ধি করবেন না। মানবিকতার বিরুদ্ধে কাজ করছে।" এখন সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে আন্দোলনে নামায় সমস্যা রয়েছে। প্রয়োজনে পরে আন্দোলনে নামবে টিএমসিপি, জানাচ্ছেন তৃণাঙ্কুর।

অন্যদিকে, এবিভিপি ইতিমধ্যেই বেসরকারি স্কুলগুলির ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে রাজ্যপালের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে। রাজ্য সম্পাদক সুরঞ্জন সরকার বলেন, "বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে ভর্তি ফি বা টিউশন ফি কমাতে হবে। বাড়তি খরচ কেন দেবে ছাত্র-ছাত্রীরা? প্রয়োজনে বেসরকারি স্কুল চালাতে সরকার এগিয়ে আসুক। ক্লাবকে টাকা দিতে পারলে এক্ষেত্রে কেন সুযোগ দেবে না।" অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থার ফলে একটা সেকশন 'ডিজিটালি ডিভাইড' হচ্ছে বলে তিনিও স্বীকার করে নিয়েছেন। তাঁর মতে, "অনলাইন ব্যবহার করে শিক্ষাক্ষেত্রটা চালিয়ে নিয়ে যেতে হবে। একেবারে বন্ধ করাটা তো সমাধান না। যতটুকু পারা যায় চালিয়ে যাক।"

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

Education tmc SFI
Advertisment