নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সভা করায় দেশদ্রোহিতার দায়ে তিন আদিবাসী নেতাকে আটক করল ত্রিপুরা পুলিশ। এদের মধ্যে রয়েছেন আইএনপিটি-র সাধারণ সম্পাদক জগদীশ দেববর্মা। ৩০ জানুয়ারি খুমলুং-এর জনসভায় ভারত বিরোধী স্লোগান তোলার অভিযোগ ছিল এঁদের বিরুদ্ধে।
পশ্চিম ত্রিপুরার পুলিশের সুপারিন্টেনডেন্ট অজিত প্রতাপ সিং ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, "বিক্ষোভে অংশ নেওয়া নেতা-সহ জনসভায় উপস্থিত থাকা প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই অভিযোগ নথিভুক্ত হয়েছে। জগদীশ দেববর্মা ছাড়াও যাঁদের আটক করা হয়েছে, তাঁরা হলেন আইপিএফটি নেতা অঘোর দেববর্মণ এবং 'বরক পিপল হিউম্যান রাইটস অর্গানাইজেশন (বিপিএইচআরও) নেতা অ্যান্টনি দেববর্মণ।
এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, "খুমলুং -এ অনুমতি ছাড়া জনসভা করা হয়েছিল। দেশবিরোধী বেশ কিছু স্লোগান উচ্চারিত হয়েছিল এই জনসভায়। ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪ (এ), ১২০ (বি), ত্রিপুরা পুলিশ আইনের ২৮২ ধারায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করেছি আমরা।" তিনি আরও বলেছেন, জনসভার ভিডিও ফুটেজ প্রমাণস্বরূপ তাঁদের কাছে রয়েছে, তার ভিত্তিতেই অভিযোগ নথিভুক্ত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন, ত্রিপুরায় ভারত বিরোধী স্লোগান, বহিরাগতদের কাজ, দাবী বিজেপির
নাগরিকত্ব বিল (২০১৬)-র বিরুদ্ধে প্রতিবাদ মিছিলের ডাক দিয়েছিল ত্রিপুরা ইন্ডিজিনাস পিপলস কাউন্সিল, যা ৪৮টি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের একটি যৌথ মঞ্চ। মিছিলে শরিক হয়েছিল Indigenous Nationalist Party of Tripura, Nationalist Conference of Tripura, IPFT Tripura (মূল IPFT থেকে বেরিয়ে আসা বিক্ষুব্ধ অংশ)। ত্রিপুরা রাজবংশের প্রতিনিধি প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মা, যাঁকে প্রতিবাদী আদিবাসী সংগঠনগুলি সর্বসম্মত ভাবে নেতা হিসেবে মেনে নিয়েছে, জনতার কাছে আবেদন জানান নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদ করতে।
'দেশ বিরোধী' হিসেবে তাঁকে চিহ্নিত করা নিয়ে প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মা ফেসবুকে লিখেছেন, "সিপিআই(এম)-এর সঙ্গে আমাদের অনেক তিক্ততা হয়েছে। কিন্তু এরকম ব্যক্তিগত আক্রমণ করেন নি কেউ।"
জগদীশ দেববর্মা ত্রিপুরা পুলিশের এই পদক্ষেপকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে ব্যাখ্যা করেছেন। বলেছেন, "এভাবে এফআইআর দায়ের করা যায় না।"