শ্রমিক সমাজ নয়, কেন্দ্রের নীতিতে সুবিধা পাবে কর্পোরেটরা, এমনই দাবি বিরোধীদের। রাজ্যসভায় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রকের কাজ নিয়ে আলোচনায় দেশের ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব এবং চাকরি খোয়ানোর বিষয়টি নিয়ে এভাবেই কেন্দ্রীয় সরকারকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি বিরোধী একাধিক দল।
রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির বেসরকারিকরণের প্রতিবাদ-সহ কেন্দ্রের একাধিক নীতির বিরুদ্ধে একটানা দু'দিন দেশব্যাপী ধর্মঘট পালন করেছে ট্রেড ইউনিয়নগুলি। ডান-বাম প্রায় সব দলের শ্রমিক সংগঠনগুলির ডাকে রাজ্যে-রাজ্যে পালিত হয়েছে এই ধর্মঘট। তবে ধর্মঘটে সামিল হয়নি আরএসএস সমর্থিত ভারতীয় মজদুর সংঘ (বিএমএস)। টানা দু'দিনের সেই ধর্মঘটের পরেই সংসদে শ্রমিক স্বার্থে নেওয়া কেন্দ্রের একাধিক পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা হয়।
সেই বিতর্কে বিরোধী দলের বেশ কয়েকজন সাংসদ লেবার কনফারেন্সের আয়োজন না করা নিয়ে কেন্দ্রকে একহাত নিয়েছেন। এছাড়াও ২০১৫ সাল থেকে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রকের শীর্ষ পর্যায়ের ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ কমিটি তৈরি না হওয়া নিয়েও মোদী সরকারের কড়া সমালোচনা করেছেন বিরোধী দলের নেতারা। এরই পাশাপাশি ট্রেড ইউনিয়নগুলির সঙ্গে পরামর্শ না করে কেন্দ্রীয় সরকার চারটি শ্রম কোড চূড়ান্ত করেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন বিরোধী নেতারা।
কংগ্রেস সাংসদ দিগ্বিজয় সিং বলেন, ''বিএমএস শ্রম কোডের বিরোধিতা করছে। তাদের যুক্তি, এক্ষেত্রে কোনও সঠিক পরামর্শ নেই। এই সরকার তার পুরানো বন্ধুদের সঙ্গ ছেড়েছে। কর্পোরেটের পথে হাঁটছে। এখন বিজেপির মধ্যে একটি কর্পোরেট সংঘ রয়েছে যা কর্পোরেট সেক্টরের জন্য কাজ করছে।''
আরও পড়ুন- ভঙ্গ নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি, তৃণমূলশাসিত বাংলার পথেই বামশাসিত কেরলে ঢালাও মদের লাইসেন্স
অন্যদিকে কেন্দ্রের সমালোচনা করে ডিএমকে-র এম শানমুগাম বলেন, ''আমি জানি না কেন এই সরকার ট্রেড ইউনিয়নকে ভয় পায়। তাদের সঙ্গে কেন কোনও বিষয়েই আলোচনা করতে চায় না। ১৯৪০ সাল থেকে ভারতীয় শ্রম সম্মেলনে নিয়মিতভাবে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনেক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরে তা সংসদে পাস হওয়ার পর সেগুলো আইনেও পরিণত হয়েছে। ৪৪টি শ্রম আইন সেভাবেই এসেছে। এখন সেই প্রক্রিয়া থেমে গিয়েছে। শ্রম কোড চূড়ান্ত করার জন্য এবং পরবর্তী সময়ে বিধি প্রকাশের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ট্রেড ইউনিয়নগুলির সঙ্গে পরামর্শ করেনি।''
সংসদে কংগ্রেস নেতা দ্বিগিজয় সিং জানান, শ্রমিক সংগঠনগুলি লেবার কোড বাতিলের দাবি তুলেছে। একইভাবে বেসরকারিকরণ উদ্যোগ বন্ধ করা এবং মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে সরকারের দ্রুত পদক্ষেপের দাবিতেও সরব হয়েছে শ্রমিক সংগঠনগুলি। স্কিল ডেভলপমেন্ট মন্ত্রকটিকে অবিলম্বে শ্রম মন্ত্রকের সঙ্গে সংযুক্ত করারও দাবি তুলেছেন বর্ষীয়ান এই কংগ্রেস সাংসদ।
Read full story in English