বিরোধী জোট ক্ষমতায় এলে প্রধানমন্ত্রী কে হবেন? এ নিয়ে প্রায় কারও মুখেই যখন কোনও সাড়া শব্দ শোনা যাচ্ছে না, তখন, এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার একটি ফর্মুলা হাজির করলেন। তাঁর বক্তব্য, ২০১৯-এর ভোটে, যে পার্টি সবথেকে বেশি আসন পাবে, প্রধানমন্ত্রী হবেন সেই দলেরই কেউ। সোমবার এক দলীয় সভায়, এই প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি।
‘‘ভোট হোক, এই লোকগুলো (বিজেপি) ক্ষমতা থেকে সরুক। আমরা একসঙ্গে বসব। যে পার্টি সবচেয়ে বেশি আসন পাবে, তারা প্রধানমন্ত্রিত্ব দাবি করতে পারে।’’ এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গেই ৭৮ বছর বয়সী এই রাজনীতিবিদ আরও একটি ব্যাপারে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তা হল প্রধানমন্ত্রিত্ব নিয়ে রাহুল গান্ধির সাম্প্রতিক বক্তব্য।
শরদ পাওয়ার বলেন, ‘‘কংগ্রেস নেতা (রাহুল গান্ধী ) যে বলেছেন তিনি প্রধানমন্ত্রিত্বের দৌড়ে নেই, এতে আমি খুশি হয়েছি।’’ শনিবার লন্ডন অ্যাসোসিয়েশনের সভায় রাহুল গান্ধী বলেন, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার উচ্চাশা দ্বারা তিনি পরিচালিত হচ্ছেন না। এ ব্যাপারে বছরের গোড়ায় তাঁর বক্তব্যেরই স্ববিরোধিতা করেছেন রাহুল।
রাহুল গান্ধী বলেছেন, তিনি আদর্শের লড়াই লড়ছেন। ‘‘২০১৪ সালের পর থেকে আমার মধ্যে এই বদল এসেছে, আমি দেখতে পাচ্ছি দেশ হিসেবে ভারত একটা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।’’
এর আগে রাহুলের প্রধানমন্ত্রিত্ব নিয়ে নিজেদের অস্বস্তির কথা ব্যক্ত করেছে আরজেডি, সপা এবং বসপার মতো দলগুলি। আরজেডি নেতা, লালুপুত্র তেজস্বী যাদব বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার মত দক্ষতা অনেকেরই আছে। সপা নেতা অখিলেশ যাদব বলেছেন, ২০১৯-এর ভোটের পর মানুষ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নতুন মুখ দেখতে চায়। বহুজন সমাজ পার্টি তাদের নেত্রী মায়াবতী যে বিরোধী জোটের প্রধানমন্ত্রী পদের দাবিদার, তেমন ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছে। দৌড়ে রয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও, যিনি গত কয়েকমাসে বেশ কয়েকবার বিরোধী নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।
জানা গেছে, দু রাউন্ড বৈঠকের পরে, মহারাষ্ট্র কংগ্রেস ওএনসিপি ২০১৯-এর লোকসভা ও বিধানসভা ভোটে নির্বাচনী জোট গড়ার ব্যাপারে সম্মত হয়েছে। শরদ পাওয়ার নিজে রাজ্যস্তরে বিজেপি বিরোধী দলগুলিকে নিয়ে জোট গঠন চান। তিনি একই সঙ্গে বলেছেন, ১৯৭৭ ও ২০০৪ সালে যেভাবে নির্বাচনের ফল বেরোনোর পরে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী ঠিক হয়েছিল, এবারও তেমনটাই করা যেতে পারে।
১৯৭৭ সালে সমস্ত অকংগ্রেসি দল একযোগে কংগ্রেসকে হারানোর পর মোরারজি দেশাইয়ের নেতৃত্বে সরকার গঠন করেছিল। ২০০৪ সালে অটল বিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার ভোটে হেরে গিয়েছিল।
সমস্ত রাজ্যের নির্দিষ্ট পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে সেই রাজ্যগুলির বিজেপি বিরোধী দলগুলিকে বিরোধীজোটের ছাতার তলায় আনার কাজ জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন এই মারাঠি নেতা। এ জন্য় তিনি নিজেও বিভিন্ন রাজ্যে যাওয়ার চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন শরদ পাওয়ার।
ইভিএম কারচুপি নিয়ে যে সব অভিযোগ উঠছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে পুরনো ব্যালট পেপার ব্যবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন তিনি।