শনিবার ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জন্মদিন। দেশজুড়ে বিজেপি কর্মীরা এজন্য মোদীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। একইসঙ্গে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিরোধীরাও। তবে একইসঙ্গে তাঁরা জানিয়েছেন যে, এই শুভেচ্ছার সঙ্গে তাঁদের মতাদর্শগত এবং রাজনৈতিক লড়াইয়ের কোনও সম্পর্ক নেই। সেটা আগেও যেমন চলছিল, তেমনটাই চলবে।
বর্তমানে তাঁর 'ভারত জোড় যাত্রা' কর্মসূচিতে রয়েছেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। তারই মধ্যে জন্মদিনের শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়েছেন। একইভাবে অন্যান্য কংগ্রেস নেতাদেরও জন্মদিনের শুভেচ্ছাবার্তা পাঠাতে দেখা গিয়েছে। তবে, তার মধ্যেই ছিল সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনার বার্তা। তিরুঅনন্তপুরমের কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর আবার টুইটারে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একটি ছবি শেয়ার করেছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, 'আমাদের @PMOIndia শ্রী @narendramodi জির জন্মদিন, সুস্বাস্থ্য এবং দীর্ঘায়ু কামনা করছি। তিনি যেন আমাদের অনেক সহ নাগরিকের জীবনের অন্ধকার ঢেকে ফেলার জন্য কাজ করেন। আর, তাঁদের জীবনে প্রগতি, উন্নয়ন ও সামাজিক সম্প্রীতির আলো বয়ে নিয়ে আসেন।'
কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশও প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তবে একইসঙ্গে জানিয়েছেন, 'তাঁর (মোদি) বিরুদ্ধে আদর্শগত ও রাজনৈতিক লড়াই অব্যাহত থাকবে। আমাদের (কংগ্রেস) বিরুদ্ধে তাঁর (মোদী) ব্যক্তিগত প্রতিহিংসাও তীব্রতর হচ্ছে।' তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও, ইতিমধ্যেই নিজের সর্বভারতীয় উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে তুলে ধরেছেন। তিনিও প্রধানমন্ত্রীকে তার জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। বার্তায় বলেছেন, 'তেলেঙ্গানার সরকার ও জনগণের পক্ষ থেকে এবং আমার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে, আমি আপনাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাই। আরও অনেক বছর আপনি জাতির সেবা করুন। ঈশ্বর আপনাকে সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু দান করুন।'
আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং তৃণমূল কংগ্রেসের প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দু'জনেই বিজেপির প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী। কিন্তু, দুই নেতাই প্রধানমন্ত্রীকে তাঁর জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
AAP-এর সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে অবশ্য তাতে প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনায় ছেদ পড়েনি। বছরের পর বছর ধরে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাত্কার থেকে চারটি ছোট ভিডিও ক্লিপের একটি সংকলন প্রকাশ করে, পোস্টটিতে লেখা হয়েছে, 'প্রধান উদ্ভাবককে শুভ জন্মদিন, প্রযুক্তিবিদ, বিজ্ঞানী হিসেবে সমান শ্রেষ্ঠত্ব, একমাত্র- মোদীজির রয়েছে।'
আরও পড়ুন- আপ বিধায়কের পুরোনো মামলায় আচমকা তৎপর দিল্লি পুলিশ, চার দিনের হেফাজতের নির্দেশ
আপ ইতিমধ্যেই গুজরাট এবং হিমাচলপ্রদেশে নিজেদের প্রধান বিরোধী হিসেবে তুলে ধরতে তৎপর। জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানো প্রথম ক্লিপে প্রধানমন্ত্রীকে ১৯৮৭-৮৮ সালে একটি ডিজিটাল ক্যামেরা ব্যবহার এবং ইমেল থাকার ব্যাপারে কথা বলতে শোনা গিয়েছে। যদিও তখন মাত্র কয়েকজনের কাছে সেসব ছিল। এই ক্লিপের ক্যাপশনে আপ তাই লিখেছে, 'তিনি ১৯৮৭-৮৮ সালে ইমেল করতে পারতেন।'
পরবর্তী ক্লিপে মোদীকে একটি পাত্র ব্যবহার, তাতে গর্ত করে ও পাইপ ব্যবহার করা নিয়ে কথা বলতে শোনা গিয়েছে। সেখানে মোদীকে বলতে শোনা গিয়েছে, এই পাইপ দিয়ে নর্দমা থেকে গ্যাস আসবে। আর, সেই গ্যাস চা তৈরিতে ব্যবহার করা হবে। সেই ক্লিপে আপ লিখেছে, 'তিনি নর্দমার গ্যাস ব্যবহার করে চা বানাতে পারতেন।' শুধু আপই না। অন্যান্য বিরোধীরাও এভাবে কড়া সমালোচনা করে বুঝিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা মোদীকে একচুলও জমি ছাড়তে নারাজ।
কুনো ন্যাশনাল পার্কে চিতা ছেড়ে দেওয়ার দিনে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে টিএমসি সাংসদ মহুয়া মৈত্র লিখেছেন, 'তিনি যেন বিলুপ্ত চিতার মতোই আমাদের দ্রুত নির্বাপিত সাংবিধানিক সুরক্ষার দিকে নজর দেন।' স্বাভাবিক ভাবেই প্রধানমন্ত্রীর দলের সদস্যরা সবাই তাঁর প্রশংসা করেছেন।
হিন্দিতে একটি টুইট বার্তায় অমিত শাহ বলেছেন, '@narendramodi দেশকে তার মূল শিকড়ের সঙ্গে যুক্ত করে প্রতিটি ক্ষেত্রে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করেছেন। মোদীজির দূরদৃষ্টি ও নেতৃত্বে নতুন ভারত বিশ্বশক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। মোদিজি একজন বিশ্বনেতা হিসেবে নিজের প্রতীক তৈরি করেছেন, যাঁকে সারা বিশ্ব সম্মান করে। তিনি এক নিরাপদ, শক্তিশালী এবং আত্মনির্ভরশীল নতুন ভারতের স্রষ্টা। সেবা এবং উত্সর্গের প্রতীক। স্বাধীনতার পর প্রথমবারের মতো কোটি কোটি দরিদ্রকে তাঁদের অধিকার ফিরিয়ে দিয়ে মোদীজি তাঁদের মধ্যে আশা ও বিশ্বাসের অনুভূতি জাগিয়েছেন। আজ দেশের প্রতিটি অংশ মোদীজির পাশে পাথরের মতো দাঁড়িয়ে আছে।'
Read full story in English