/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2023/04/Killers-Of-Atique_Ahmed-2.jpg)
প্রয়াগরাজে রবিবারই কবর দেওয়া হয়েছে আতিক আহমেদ ও তার ভাই আশরফের দেহ। মৃতদেহ হয়তো কবর দেওয়া গেল। কিন্তু, এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে কবর দেওয়া যোগী রাজ্যের পুলিশের পক্ষে খুব একটা সহজ হবে না। ঘটনার রাতে, শনিবার নিরাপত্তার ব্যাপক অভাব ধরা পড়েছে। যার জেরে বর্তমানে বিরোধীদের কাঠগড়ায় উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের পদত্যাগের দাবিতে সমস্বরে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। আর, আতিক আহমেদদের নিরাপত্তায় গাফিলতি দীর্ঘদিন ধরেই উত্তরপ্রদেশ পুলিশের পিছু ধাওয়া করবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
শনিবার রাতে যেখানে আতিক আহমেদ খুন হন, সেখান থেকে হাসপাতালের দরজা ছিল মাত্র কয়েক হাত দূরে। পুলিশ সূত্রে খবর সোমবারই আতিক ও আশরফের পুলিশ হেফাজত শেষ হওয়ার কথা ছিল। তাঁদের ধূমলগঞ্জ থানা থেকে পুলিশের পাহারায় কোলভিন হাসপাতালে রুটিন স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। সঙ্গে ছিল দুটি গাড়ি আর ২০ জন সশস্ত্র পুলিশকর্মী। হাসপাতাল থেকে থানার দূরত্ব ছিল ৭ কিলোমিটার। যা মাত্র ২০ মিনিটেই অতিক্রম করে পুলিশের গাড়ি। হাসপাতালের মধ্যে গাড়ি দাঁড় করানোর প্রচুর জায়গা থাকলেও পুলিশের গাড়ি হাসপাতালের দরজার বাইরে ডানদিকে গিয়ে দাঁড়ায়।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2023/04/Killers-Of-Atique_Ahmed-1.jpg)
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, আতিক ও আশরফকে হাতকড়া পরিয়ে হাঁটিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা জানতেন আতিক আহমেদকে হাসপাতালে আনা হবে। বিভিন্ন গণমাধ্যমের গাড়ি থানা থেকেই পুলিশের পিছু নিয়েছিল। গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা আতিকদের বক্তব্য টেপবন্দি করতে চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু, আতিকরা প্রথমে বক্তব্য জানাতে চাননি। দু'পা এগোতেই ফের তাঁদের মুখের কাছে মাইক ধরা হয়। একমুহূর্ত দাঁড়ানোর পর পুলিশের ধাক্কায় আতিকরা সামনের দিকে এগিয়ে যান।
তার পাঁচ পা পরে, সাংবাদিকরা আতিকদের ঘিরে ধরেন। প্রশ্ন করেন, কেন আতিক আহমেদ ও তাঁর ভাইকে এনকাউন্টারে নিহত আসাদকে কবর দেওয়ার সময় দেখা গেল না? আর, ঠিক সেই সময়ই আতিক ও তার ভাইকে লক্ষ্য করে লাভলেশ তিওয়ারি, সানি পুরানে ও অরুণ মৌর্যরা গুলি চালায়। সব মিলিয়ে ২২ সেকেন্ডে ১৮ রাউন্ড গুলি চালায় লাভলেশরা। উত্তরপ্রদেশ পুলিশ কিছুই করেনি। এরপর অস্ত্র ফেলে দিয়ে 'জয় শ্রীরাম' ধ্বনি দিয়ে আততায়ীরা পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করে।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2023/04/Killers-Of-Atique_Ahmed.jpg)
স্বভাবত, এই সব ঘটনা পরম্পরার জেরে আতিক আহমেদের হত্যাকে 'ষড়যন্ত্র' বলে তীব্র কটাক্ষ করেছেন বিরোধীরা। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেছেন, 'যারা এই ধরনের কাজ করে বা যারা এই ধরনের কাজ করা ব্যক্তিদের সুরক্ষা দেয়, তাদেরও দায়ী করা উচিত। আর, তাদের বিরুদ্ধে আইনের কঠোর প্রয়োগ করা উচিত। বিচার ব্যবস্থা এবং আইনের শাসন যাতে সর্বদা অক্ষরে অক্ষরে সম্মানিত হয়, তা নিশ্চিত করার জন্য আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা নেওয়া উচিত।'
আরও পড়ুন- আতিক আহমেদ হত্যাকাণ্ড: নিরাপত্তার অজুহাতে সাংবাদিকদের পায়ে বেড়ি পরাতে চায় শাহর মন্ত্রক
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, 'উত্তরপ্রদেশে নির্লজ্জ নৈরাজ্য এবং আইনশৃঙ্খলার সম্পূর্ণ পতন দেখে হতবাক। এটা লজ্জাজনক যে অপরাধীরা এখন আইন নিজের হাতে তুলে নিচ্ছে। পুলিশ এবং মিডিয়ার উপস্থিতিতেই সব ঘটছে। আমাদের সাংবিধানিক গণতন্ত্রে এ ধরনের বেআইনি কাজের কোনও স্থান নেই।'
I am shocked by the brazen anarchy and total collapse of law & order in Uttar Pradesh.
It is shameful that perpetrators are now taking the law in their own hands, unfazed by the police and media presence.
Such unlawful acts have no place in our constitutional democracy.— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) April 16, 2023
অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম) প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়াইসি অভিযোগ করেছেন যে উত্তরপ্রদেশ সরকারের এই হত্যাকাণ্ডে ভূমিকা রয়েছে। তিনি এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণে তদন্ত দাবি করেছেন। ওয়াইসির মতে, উত্তরপ্রদেশের কোনও অফিসারকে তদন্ত কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করাই উচিত নয়। কারণ, এটি একটি ঠান্ডা মাথায় খুন। বহুজন সমাজ পার্টির নেত্রী মায়াবতীও উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের পদত্যাগ দাবি করেছেন।
পালটা সংঘ পরিবারের দাবি, আতিক একজন মুসলিম বলেই 'সেলুকার' সেজে থাকা হিন্দু লোকজন অযথাই যোগী সরকারকে নিশানা করছে। পালঘরে সাধুদের নিগ্রহ করে হত্যার পর এই লোকজন একটাও কথা বলেনি। আতিক-কাণ্ডে যা ঘটেছে, তার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে।