Advertisment

আদানির বিরুদ্ধে সুর চড়াতেই ‘চক্ষুশূল’ মহুয়া? কমিটির সুপারিশের বিরুদ্ধে গর্জে উঠলেন বিরোধীরা

চার বিরোধী সাংসদ বলেছেন, প্যানেলের সুপারিশ পক্ষপাতদুষ্ট ও সম্পুর্ণরূপে ভুল।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Mahua Moitra, Mahua Moitra news, Mahua Moitra latest updates, Mahua Moitra expelled, Mahua Moitra cash for query allegations, Mahua Moitra news, Lok Sabha ethics committee, indian express"

আদানির বিরুদ্ধে সুর চড়াতেই ‘চক্ষুশূল’ মহুয়া? এথিক্স কমিটির সুপারিশের বিরুদ্ধে গর্জে উঠলেন বিরোধীরা

কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে শেষ পর্যন্ত লোকসভা থেকে বহিষ্কারেরই সুপারিশ করল এথিক্স কমিটি। টাকা আর উপহারের বিনিময়ে (ক্যাশ-ফর-কোয়েরি) সংসদে প্রশ্ন করা এবং লোকসভার পোর্টালে প্রবেশ করার পাসওয়ার্ড অন্যদের হাতে তুলে দেওয়ার অভিযোগ দায়ের হয়েছিল কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে। এনিয়ে সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলেই এথিক্স কমিটি এবার তৃণমূল সাংসদকে বহিষ্কারেরই সুপারিশ করল।

Advertisment

চেয়ারম্যান বিনোদ কুমার সোনকার জানিয়েছেন, এথিক্স কমিটির বৈঠকে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের মতামতের ভিত্তিতে মোট ৫০০ পাতার খসড়া রিপোর্ট তৈরি হয়েছে। এথিক্স কমিটিতে কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদকে বহিষ্কারের পক্ষে ভোট দিয়েছেন ছয় সদস্য। আর, বহিষ্কারের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন এথিক্স কমিটির চার জন। এই রিপোর্ট জমা পড়বে স্পিকার ওম বিড়লার কাছে। ডিসেম্বরে লোকসভার শীতকালীন অধিবেশনে ওই রিপোর্ট পেশ করবেন স্পিকার ওম বিড়লা।

গত মাসে মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে দুটি চিঠি লিখেছিলেন। তার মধ্যে একটি চিঠি লেখা হয়েছিল স্পিকার ওম বিড়লাকে। সেখানে অভিযোগ করা হয়েছিল, মহুয়া মৈত্র কর্পোরেট সংস্থা হিরানন্দানি গ্রুপের স্বার্থ রক্ষার জন্য ঘুষ নিয়েছেন। অন্য চিঠিটি লেখা হয়েছিল আইটি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবকে। সেই চিঠিতে লোকসভার পোর্টালে প্রবেশের জন্য মহুয়া মৈত্রের লগ-ইন পাসওয়ার্ড অন্য কেউ অ্যাক্সেস করছে কিনা, তা পরীক্ষা করার জন্য বৈষ্ণবকে অনুরোধ করেছিলেন দুবে। এনিয়ে গত ২ নভেম্বর লোকসভার এথিক্স কমিটি বৈঠক করেছিল। সেই বৈঠকে সম্মানহানিকর প্রশ্ন করার অভিযোগে মহুয়া মৈত্র এবং বিরোধীদের পাঁচ জন সদস্য– কংগ্রেসের উত্তমকুমার রেড্ডি, ভি বৈথিলিঙ্গম, সিপিএমের পিআর নটরাজন এবং জেডি(ইউ)-এর গিরিধারী যাদব, আলি বৈঠক থেকে ওয়াক আউট করেছিলেন।

মহুয়া মৈত্র সমালোচনার সুরে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে এটা তিনি আগে থেকেই জানতেন। বুধবারই এনিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছিল। এথিক্স কমিটির রিপোর্ট পেশ হওয়ার একদিন আগেই কীভাবে সংবাদমাধ্যমের হাতে চলে গেল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বৃহস্পতিবার লোকসভার স্পিকারকে অভিযোগপত্রও পাঠিয়েছেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ। এর পাশাপাশি মহুয়া মৈত্রও এ বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন যে তাকে বহিষ্কার করা হলেও তিনি বিপুল ভোটে জিতে ফিরে আসবেন।

আর, তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন তুলেছেন, ‘কেন এথিক্স কমিটি তাঁকে লোকসভা থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ করেছে? এখনও পর্যন্ত তো কিছুই প্রমাণিত হয়নি!’ এর আগে বুধবারই বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে এক্স-এ দাবি করেছিলেন, মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে লোকপাল। পালটা আদানিদের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন মহুয়া মৈত্র।

যদিও মহুয়া মৈত্রকে বহিষ্কারের যে সুপারিশ এথিক্স কমিটির তরফে করা হয়েছে তার তীব্র বিরোধীতায় সরব হয়েছে বিরোধী সাংসদরা। সংবাদ সংস্থা পিটিআই-সূত্রে জানা গিয়েছে বিরোধী পাঁচ সাংসদ এথিক্স কমিটির রিপোর্ট গ্রহণের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ  করেছেন। এর মধ্যে রয়েছেন কংগ্রেস সাংসদ উত্তম কুমার রেড্ডি, কংগ্রেসের ভি বৈথিলিঙ্গম, সিপিআইএম-এর পিআর নটরাজন, বিএসপি-র দানিশ আলি এবং জেডিইউ-এর গিরিধারী যাদব।

বিরোধী সাংসদদের অভিযোগ, এথিক্স কমিটির সুপারিশ ভুল এবং সম্পূর্ণরূপে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বিরোধী সাংসদরা তাঁদের তরফে পেশ করা একটি নোটে বলেছেন যে তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের কোনও ভিত্তি নেই। কোনও প্রমাণ ছাড়াই, লোকসভার একজন মহিলা এমপির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন ও কলঙ্কিত করা হচ্ছে। নগদ এবং উপহারের অভিযোগে, বিরোধী সাংসদরা যুক্তি দিয়েছিলেন যে ২৬ অক্টোবর লিখিত অভিযোগ বা মৌখিক শুনানিতে  অভিযোগকারীর তরফে কোনও প্রমাণ এথিক্স কমিটির সামনে পেশ করা হয়নি।  

বিজেপি সাংসদ বিনোদ কুমার সোনকারের নেতৃত্বে কমিটি বৃহস্পতিবার একটি বৈঠক করেছে এবং মৈত্রকে বহিষ্কারের সুপারিশে সিলমোহর দিয়েছেন। বৈঠকের পরে, সোনকার সাংবাদিকদের বলেছিলেন, প্যানেলের ছয়জন সদস্য মহুয়ার বহিষ্কারের পক্ষে রায় দিয়েছেন। চারজন এর বিরোধিতা করেছিলেন। চার বিরোধী সাংসদ বলেছেন, প্যানেলের সুপারিশ পক্ষপাতদুষ্ট ও ভুল।

Mohua Moitra
Advertisment