হাত শিবিরের প্রদেশ নেতৃত্বের প্রতিবাদ রয়েছে। কিন্তু জাতীয় স্তরে মোদী বিরোধী লড়াইয়ে কংগ্রেস ও তৃণমূল এখন থেকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়েই চলবে। মঙ্গলবার স্পষ্ট হয়ে গেল। অন্তত, সনিয়া ও রাহুল গান্ধীর সঙ্গে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর হাসিমুখে কথাবার্তা, গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় তা পরিস্কার। আর জাতীয়স্তরে কংগ্রেস-তৃণমূল এক হওয়ায় সিলমোহর দিয়েছে খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য। বিজেপি বিরোধী জোটের মঞ্চে এদিন বেঙ্গালুরুতে তৃণমূল নেত্রী শুরুতেই বলেন, 'আমাদের ফেভারিট রাহুল।'
বাংলায় একুশের ভোটের পর থেকে নিয়ম করে কংগ্রেসকে চাঁচাছোলা আক্রমণ শানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাহুল গান্ধীকে 'বসন্তের কোকিল' বলে তোপ দেগেছিলেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়রা দাবি করেছিলেন যে, কংগ্রেস বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইটাই ছেড়ে দিয়েছে। তাই তৃণমূলকে গোয়া, মেঘালয়ে লড়তে হচ্ছে। পাল্টা তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপির আঁতাতের অভিযোগ তুলেছে হাত শিবিরও। জয়রাম রমেশের মতো শীর্ষ কংগ্রেস নেতৃত্ব বলেছিলেন, গোয়া, 'মেঘালয়ে ভোটে লড়ে তৃণমূল আসলে বিজেপিকে সুবিধা করে দিচ্ছে।'
এই ক'দিন আগেও তৃণণূল নেতৃত্ব কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তোপ দেগে বলতেন, সনিয়া-রাহুলরা বিগ ব্রাদারের মতো আচরণ করে। প্রকৃত বোঝাপড়া করতে চাইলেন এই দাদাগিরির মনোভাব ছাড়তে হবে। প্রকৃত বিজেপির বিরোধী তৃণমূলই।
আরও পড়ুন- ‘ইন্ডিয়া জিতবে, বিজেপি হারবে’, মোদীকে কড়া চ্যালেঞ্জ মমতার?
সেই তৃণমূল নেত্রীর মুখেই মঙ্গলবার রহুল গান্ধী প্রসঙ্গে নরম মনোভাবের টের মিলল। মঙ্গলবার বৈঠক মঞ্চে দেখা গেল, সনিয়া গান্ধী ও রাহুলের মাঝের আসনে বসেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। বৈঠক শেষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের বক্তব্যের শুরুতেই বলেন, 'আমাদের ফেভারিট রাহুল।' তিক্ততার পর এদিন যেভাবে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী গান্ধী পরিবারের তরুণ প্রজন্মকে সম্মোধন করেছেন, তা জাতীয় রাজনীতির বহু দিক স্পষ্ট করল বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
পাল্টা এদিনের বিরোধী জোটের বৈঠকে কংগ্রেসও খানিকটা নমনীয়তার বার্তা দিয়েছে। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে এদিনের বৈঠকে জানিয়েছেন, কংগ্রেস প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য লালায়িত নন। বরং দেখা গিয়েছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, নীতীশ কুমার, এম কে স্ট্যালিন যথাসম্ভব মর্যাদা দিয়েছেন সনিয়া-রাহুল। তাতেই কী খুশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? বাংলার মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, 'এবার প্রকৃত লড়াই হবে। নতুন জোটের নাম রাখা হয়েছে ইন্ডিয়া। আমরাই প্রকৃত ভারত। এনডিএ-র ক্ষমতা থাকলে এই ইন্ডিয়াকে চ্যালেঞ্জ করে দেখাক। এবার জিতবে ইন্ডিয়া, হারবে বিজেপি।'