তৃণমূলে শুভেন্দু অধিকারীকে কোণঠাসা করা ও যোগ্য সম্মান না দেওয়ার বিরুদ্ধে এত দিন সোসাল মিডিয়া ও দলের কর্মীদের একাংশের মধ্য ক্ষোভ-বিক্ষোভ দেখা যাচ্ছিল। এবার দলের এক বিধায়ক স্পষ্ট বলেই দিলেন, "দলে দায়িত্ব পাওয়া উচিত ছিল পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর।" দলনেত্রীর পর 'দলে দ্বিতীয় ব্যক্তি' যে শুভেন্দু তা জোরের সঙ্গে বলেছেন এই তৃণমূল বিধায়ক। শুধু তাই নয়, তাঁকে না বলে জেলার যুব সভাপতি পদ থেকেও সরিয়ে দেওয়ায় আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন পূর্ব মেদিনীপুরের ময়নার বিধায়ক সংগ্রাম দলুই। তাঁর মন্তব্যকে কেন্দ্র করে তৃণমূল কংগ্রেসে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
ময়নার তৃণমূল বিধায়ক বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও শুভেন্দু অধিকারীকে দেখে রাজনীতি করি। অন্য কাউকে দেখে নয়। সেই জায়গায় তৃণমূল করছি বা করব। এমন একটা সিদ্ধান্ত নেওয়াটা ঠিক নয়। পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ মানুষ জানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর দ্বিতীয় ব্যক্তি, বিশ্বস্ত সৈনিক হিসাবে পাহাড়-জঙ্গলে কাজ করে থাকেন শুভেন্দু। তাঁকে অবশ্যই যোগ্য সম্মান দেওয়া উচিত। সেই অর্থে তা পায়নি। মানুষ তাতে ক্ষুব্ধ হচ্ছে। খারপ লাগছে। এসব থেকে মনে হয়েছে, শুভেন্দুবাবুর কাজের দায়িত্ব বাড়ানো দরকার।"
আরও পড়ুন- ‘বঙ্গ বিজেপিতে বিভেদ-বিচ্ছেদ-ভুল বোঝাবুঝির চক্রান্ত’, কেন বললেন দিলীপ?
তৃণমূল কংগ্রেসের নতুন কমিটিতে পর্যবেক্ষক পদ তুলে দেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি জেলার দায়িত্বে ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। একসময় দলের রাজ্য যুব সভাপতি থাকায় সারা বাংলায় তাঁর যোগাযোগ রয়েছে। তাছাড়া এবারে দলের সর্বোচ্চ ৭ জনের কমিটির সদস্য সহ তিনটে কমিটিতে তিনি রয়েছেন। তবে একক কোনও দায়িত্ব তাঁকে দেওয়া হয়নি। এমনকী ২১ জনের সমন্বয় কমিটির প্রথম বৈঠকে তিনি হাজির হননি। হাজির না থাকার কারণ যাই হোক সেই নিয়েও বিতর্ক দেখা দিয়েছে তৃণমূলে।
সংগ্রাম দলুইয়ের কথায়, "অন্যদের মতো আমারও খারাপ লেগেছে। দলে থেকেও সেভাবে পদ পায়নি। ম্যাডাম নিশ্চয় তাঁকে যোগ্য সম্মান দেবে। শুভেন্দুবাবু কী সিদ্ধান্ত নেবে সেটা তাঁর ব্যাপার", এমন মন্তব্য করে বিতর্ক উস্কে দিয়েছেন সংগ্রাম দলুই। তিনি আরও বলছেন, "আমার একার কথার কী মূল্য আছে? সবাই বলুক।" তবে এ বিষয়ে একেবারেই নীরব নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী।
আরও পড়ুন- সিঁড়ি নয়, লিফটে উঠতে চাইছেন অনেকে: অধীর চৌধুরী
উল্লেখ্য, সংগ্রাম দলুইকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার যুব সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে দল। তাঁকে না বলে সরানোয় ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন এই চিকিৎসক বিধায়ক। তিনি বলেন, "আমাকে বলে পরিবর্তন করতে পারত। মনে হচ্ছে যে আমাকে লাথি মেরে সরিয়ে দিল। এটা বাজে দেখায় না? লজ্জা লাগে না? পদ লাগবে না, তবে আগে থেকে দল বলতেই পারত।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন