২০১৯-২০ অর্থবর্ষে আঞ্চলিক দলগুলির আর্থিক অনুদানের ৫৫ শতাংশের বেশি এসেছে 'অজানা' উৎস থেকে। অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস বা এডিআর-এর রিপোর্টে এই তথ্য উঠে এসেছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, নির্বাচনী বন্ডের প্রায় ৯৫ শতাংশ অনুদান 'অজানা' উৎস থেকে এসেছে।
দেশের মোট ২৫টি আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে মোট ৮০৩.২৪ কোটি অনুদান গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে ৪৪৫.৭ কোটি এসেছে 'অজানা' উৎস থেকে। এডিআর রিপোর্টে এমনই তথ্য উঠে এসেছে। আবার 'অজানা' উৎসের ৪৪৫.৭ কোটি অর্থ অনুদানের মধ্যে নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলি পেয়েছে ৪২৬.২৩৩ কোটি (৯৫.৬১৬ শতাং)। অবশিষ্ট ৪.৯৭৬ শতাংশ মিলেছে স্বেচ্ছা অুদানের মাধ্যমে।
এডিআর রিপোর্টে উল্লেখ, দেশের জাতীয় রাজনৈতিক দলগুলির 'অজানা' উৎস থেকে প্রাপ্ত অনুদান তাদের আয়ের প্রায় ৭০.৯৮ শতাংশ।
উল্লেখযোগ্য হল যে, 'অজানা' উৎস থেকে সর্বাধিক আয়ের আঞ্চলিক দলগুলির মধ্যে তালিকায় শীর্ষে রয়েছে বেশিরভাগই দক্ষিণ ভারতের রাজনৈতিক দল। যেমন- টিআরএস, টিডিপি, ওয়াইএসআর কংগ্রেস পার্টি, ডিএমকে এবং জেডি(এস)৷ এই তালিকায় ওড়িশার শাসকদল বিজেডিও রয়েছে। সর্বোচ্চ 'অজানা' উৎসের অনুদান মিলেছে, টিআরএস (৮৯.১৫৮ কোটি টাকা), টিডিপি (৮১.৬৯৪ কোটি টাকা), ওয়াইএসআর কংগ্রেস পার্টি (৭৪.৭৫ কোটি টাকা), বিজেডি (৫০.৫৮৬ কোটি টাকা) এবং ডিএমকে (৪৫.৫০ কোটি টাকা)।
'পরিচিত' দাতাদের কাছ থেকে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলির প্রাপ্ত অনুদান (নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া দাতাদের বিবরণ থেকে প্রাপ্ত পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে) হল ১৮৪.৬২৩ কোটি টাকা, যা তাদের মোট আয়ের ২২.৯৮ শতাংশ। আঞ্ছলিক রাজনৈতিক দলগুলি আরও ১৭২.৮৪৩ কোটি টাকা (মোট আয়ের ২১.৫২ শতাংশ) অন্যান্য পরিচিত উৎস যেমন সদস্য চাঁদা, ব্যাঙ্কের সুদ, প্রকাশনা বিক্রি থেকে প্রাপ্ত অর্থ, পার্টির লেভি ইত্যাদি থেকে পেয়েছে।
এডিআর রিপোর্ট বলছে, ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে ২৩টি আঞ্চলিক দলের অডিটের ভিত্তিতে দেখা গিয়েছে যে, তাদের মোট আয় ৮৮৫.৯৫৬ কোটি টাকা, যার মধ্যে ৪৮১.২৭৬ কোটি টাকা (54.32%) এসেছে 'অজানা' সূত্র থেকে। শতাংশের বিচারে যা ৫৪.৩২ শতাংশ।
'যেহেতু রাজনৈতিক দলগুলির আয়ের একটি বড় অংশের দাতার সন্ধান করা যায় না, তাই সমস্ত দাতাদের সম্পূর্ণ বিবরণ আরটিআই-এর অধীনে জনসাধারণের যাচাইয়ের জন্য উপলব্ধ করা উচিত'। এডিআর রিপোর্টে এই উল্লেখ করা হয়েছে৷ তাদের পরামর্শ, বিদেশি তহবিল গ্রহণকারী কোনও সংস্থাকে কোনও রাজনৈতিক দল বা প্রার্থীর পক্ষে প্রচার অথবা সমর্থনে অনুমতি দেওয়া উচিত নয়। 'সমস্ত অনুদান প্রদানের পদ্ধতি (২০ হাজার টাকার উপরে এবং নীচে), কুপন বিক্রি থেকে আয়, সদস্যতা ফি, ইত্যাদি দলগুলিকে আয়কর বিভাগ এবং ইসিআই-তে জমা দেওয়া, অডিট রিপোর্টে ঘোষণা করা উচিত' বলেও জানিয়েছে এডিআর।
এই বছর অসম, পুদুচেরি, তামিলনাড়ু, পশ্চিমবঙ্গ এবং কেরালায় অনুষ্ঠিত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ২৫২ কোটি টাকা খরচ করেছে, যার মধ্যে ১৫১.১৮ কোটি টাকা পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনী প্রচারে ব্যবহার করা হয়েছে। এই মর্মেই দলের নির্বাচনী ব্যয়ের বিবরণী জমা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সেই রিপোর্ট নির্বাচন কমিশন প্রকাশ করেছে। পশ্চিমবঙ্গ নির্বাচনের জন্য ১৫৪.২৮ কোটি টাকা খরচ হয়েছে বলে জানিয়েছে তৃণমূল।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন