নোটবন্দি নিয়ে ফের মোদি সরকারকে তোপ দাগলেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরম। তাঁর অভিমত, সর্বনাশা ওই নোট বাতিলের ফলে দেশের উন্নয়নের সমস্ত ক্ষেত্রেই ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বৃহস্পতিবার কলকাতায় প্রদেশ কংগ্রেস দপ্তরে সাংবাদিক বৈঠকে একইসঙ্গে চিদাম্বরম জানান, রাজ্য ভিত্তিক জোট করলে কংগ্রেসের ফল ভাল হবে। এই জোটের মাধ্যমেই বিজেপিকে হারানো সম্ভব বলে মনে করেন প্রবীণ এই রাজনীতিক। তবে এরাজ্যে জোট নিয়ে তিনি কোনও মন্তব্য করেননি। তাঁর দাবি, "রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়াকে "ক্যাপচার" করতে চাইছে মোদী সরকার।
২০১৯ লোকসভা নির্বাচন নিয়ে বিজেপি, কংগ্রেস ছাড়া আঞ্চলিক দলগুলোও নিজেদের মত ঘর গোছাতে শুরু করেছে। সম্প্রতি কর্ণাটকে পাঁচটি আসনে উপনির্বাচন হয়, যাতে চারটি আসনে জয় পেয়েছে কংগ্রেস-জেডিএস জোট। বিজেপি মাত্র একটি আসন দখলে রাখতে পেরেছে। এই জয়কে হাতিয়ার করেই বিজেপিকে তোপ দাগা শুরু করেছে কংগ্রেস ও রাজ্যস্তরীয় দলগুলি। ওই জয়ে স্বভাবতই উল্লাসিত কংগ্রেস। এদিন এক প্রশ্নের উত্তরে চিদাম্বরম বলেন, "কর্ণাটকের মত রাজ্য ভিত্তিক জোট করেই বিজেপিকে হারানো সম্ভব। বিজেপিকে হারাতে রাজ্যে যে দল শক্তিশালী, তার সঙ্গে জোট করতে হবে।" এরাজ্যের ক্ষেত্রে কী হবে? তাঁর জবাব, "এ ব্যাপারে এআইসিসি (অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস কমিটি) বলবে।"
বিজেপির হিন্দুত্ব নিয়েও কথা বলতে ছাড়েননি চিদাম্বরম। তাঁর মতে, সাড়ে চার বছরে দেশের উন্নেয়ন নেই, কাজ নেই, মোদী সরকার একেবারে ব্যর্থ। এই সরকার হিন্দুত্ব ও মন্দির নিয়ে মেতেছে। প্রশ্ন ওঠে, কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি রাহুল গান্ধীও নিয়মিত মন্দিরে যাচ্ছেন। কী বলবেন? তাঁর জবাব, "এটা তাঁর একেবারে ব্যক্তিগত। তাছাড়া তিনি মসজিদ, গির্জাতেও যান।"
নোটবাতিল নিয়েও প্রত্যাশিতভাবেই তোপ দাগলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, "নোটবাতিল একেবারে সুপরিকল্পিত আর্থিক নয়ছয়। এর ফলে দেশের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। লক্ষ লক্ষ মানুষের চাকরি গিয়েছে। স্বনির্ভর গোষ্ঠী বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এরাজ্যেও নোটবাতিলের লাইনে দাঁড়িয়ে মানুষের মৃত্যু হয়েছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ৯৯.৩০ শতাংশ টাকা ফেরত এসেছে। সরকার রাজস্ব ঘাটতি পূরণ করতে পারেনি। এমনকী জিএসটির লক্ষ্যমাত্রাও পূরণ হয়নি।"
প্রাক্তন অর্থমন্ত্রীর ব্যাখ্যা অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় সরকার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে ১ লক্ষ কোটি টাকা দাবি করেছে। আরবিআই গভর্ণর তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। সরকার তাই "অভাবনীয় ভাবে" আরবিআই অ্যাক্ট ৭ প্রয়োগ করার উদ্যোগ নিয়েছে। তিনি বলেন, "রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কোনও কোম্পানী নয়। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্ণরকে হয় পদত্যাগ করতে হবে, নতুবা ওই টাকা দিতে হবে। যাই হোক, তাতে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বিশ্বাসযোগ্যতা ও মর্যাদা, দুইই নষ্ট হবে। সরকার আরবিআইকে ক্যাপচার করতে চাইছে। নোটবন্দির মত ১৯ নভেম্বর আর একটা সর্বনাশ হতে চলেছে। ওই দিন আরবিআইয়ের বোর্ড মিটিং আছে।"