Panama Papers: পানামা কেলেঙ্কারির দ্বিতীয় পর্ব খোলসা হয়েছে। সামনে এসেছে আরও কিছু নাম, ২০১৬-র কেলেঙ্কারি ফাঁসের সময়ে যাঁরা ছিলেন আড়ালে। এর মধ্যে রয়েছে পিভিআর সিনেমার মালিক অজয় বিজলি ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নাম, রয়েছে হাইক মেসেঞ্জারের সিইও তথা সুনীল মিত্তলের পুত্র কেভিন ভারতী মিত্তল এবং এশিয়ান পেন্টসের প্রোমোটার অশ্বিন দানির ছেলে জলজ অশ্বিন দানির নামও।
নতুন কাগজপত্রে দেখা যাচ্ছে, ভারতীয়দের প্রতিষ্ঠিত বেশ কয়েকটি কোম্পানিকে মনসেকা নোটিস পাঠিয়েছে (এর মধ্যে কয়েকটি কোম্পানিকে নোটিস পাঠানো হয়েছে ২০১৬-র নভেম্বরে)। ওই নোটিসে কোম্পানিগুলিকে গুলিকে অনুপস্থিত তথ্য পাঠাতে বলে হয়েছে এবং চিঠিতে যেসব কোম্পানিগুলির কর্ণধার (বেনিফিশিয়াল ওনার)-এর নাম পাওয়া গেছে, তা উল্লেখ করা হয়েছে, অন্য ক্ষেত্রগুলিতে অবিলম্বে নাম প্রকাশ করতে বলা হয়েছে।
দ্বিতীয় ধাপে মোসাক ফনেসকা তাদের গ্রাহকদের ৯০ দিনের নোটিস দিয়ে জানিয়েছে, যেহেতু ওই কোম্পানিগুলি আইনি প্রয়োজন মোতাবেক সমস্ত কাগজপত্র দিতে ব্যর্থ হয়েছে, ফনেসকার পক্ষে তাদের আর পরিষেবা দেওয়া সম্ভব নয়।
ফনেসকার পক্ষ থেকে পাঠানো মেসেজে যাদের নাম উঠে এসেছে তাঁরা হলেন, শিব খেমকা, অমিতাভ বচ্চন, জাহাঙ্গির সোরাবজি, ডি এল এফ গ্রুপের কে পি সিং ও তাঁর পরিবারের নিকটজনরা, অনুরাগ কেজরিওয়াল, মোহরাসনস জুয়েলার্সের নবীন মেহরা, এবং হাজরা ইকবাল মেমন ও তাঁর পরিবার।
২০১৬-র পানামা পেপার্স ফাঁস হওয়ার পরেই এ কেলঙ্কারিতে অমিতাভ বচ্চনের নাম উঠে আসে।
পানামা পেপার্স নিয়ে ইতিমধ্যেই সরকারি নজরদারিতে রয়েছেন বিগ বি। তবে যে কোম্পানগুলির সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ বলে জানা গিয়েছে, সেই লেডি শিপিং লিমিটেড, ট্রেজার শিপিং লিমিটেড, এবং সি বাল্ক শিপিং কোম্পানির সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক নেই বলেই জানিয়েছেন তিনি। এ নিয়ে এ সপ্তাহের গোড়ায় ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের পাঠানো ই-মেলের কোনও জবাব দেননি তিনি।
ফনসেকার ভারতীয় গ্রাহকদের সঙ্গে সংযুক্ত হাজারো নথি থেকে আরও একটা প্যাটার্ন সামনে আসছে। একটা অংশের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যাচ্ছে ব্যবসা গুটিয়ে ফেলার, কেউ কেউ আবার ফনসেকাকেই তাদের এজেন্ট হিসেবে কাজ চালিয়ে য়েতে বলছেন। আবার ব্রিটিশ ভার্জিনিয়ার মার্ডি গ্যাস হোল্ডিংসের মালিক লোকেশ শর্মাও আছেন, যিনি ২০১৭-র ফেব্রুয়ারি থেকে শেয়ার ক্যাপিটাল ৩০ গুণ বৃদ্ধি করেছেন।
For Detailed Panama Papers Report, Read in English
পি আর এস ওবেরয় জে অ্যান্ড ডব্লিউ-এর ডিরেক্টর পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন, আবার রয়েছে শিশির বাজোরিয়ার নাম, যিনি দাবি করেছেন মোসাক ফনেসকার ভুলের জন্যই তাঁর নাম নথিতে উঠে এসেছে।
মজার ব্যাপার হল, বিশ্বব্যাপী সংবাদমাধ্যেমে খবর ফাঁস হওয়ার দিনেই মোসাক ফনেসকার পক্ষ থেকে তাদের দফতরগুলিতে চিঠি পাঠিয়ে সুনিশ্চিত করতে বলা হয় যাতে এ ধরনের ঘটনা পুনরাবৃত্তি না ঘটে। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই ফনসেকার দফতরে ভারতীয় কোম্পানিগুলির তরফ থেকে শঙ্কাভরা ই মেলের বন্যা শুরু হয়।
মুম্বইয়ের অ্যাকাউন্টেন্সি ফার্ম পি পি শাহ অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের পাঠানো মেইলটি এ ব্যাপারে প্রণিধানযোগ্য। এই ফার্মটির বিদেশি যোগাযোগের কোম্পানির নাম হোয়াইটফিল্ড গ্লোবাল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড। যে কোম্পানির লভ্যাংশ পেয়ে থাকেন বরোদার চিরায়ু আমিন ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। এই মেইলটিতে লেখা হয়েছে, "ভারত সহ সারা পৃথিবীর অর্থনীতিতে বিশাল ধাক্কা লেগেছে। ভারতের কর্তৃপক্ষ ফাঁস হওয়া নথির উপর ভিত্তি করে তদন্ত শুরু করেছে। আমাদের জ্ঞানমতে ফাঁস হওয়া তথ্য ও রিপোর্টগুলি যথাযথ।"