পঞ্চায়েত ভোটের দিন যত এগোচ্ছে, ততই রাজ্য রাজনীতি নতুন মোড় নিচ্ছে। মঙ্গলবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনের বিজ্ঞপ্তি বাতিলের রেশ কাটতে না কাটতেই এবার বিদ্বজ্জনদের নিয়ে চাপানউতোর শুরু হল তৃণমূল ও বিজেপি-র মধ্যে। রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়নপর্বে হিংসার নিন্দা জানিয়ে বুধবার সরব হয়েছেন কয়েকজন বিদ্বজ্জন, যাঁরা একসময়ের পরিবর্তনপন্থী বিদ্বজ্জন বলেই পরিচিত। রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়নপত্র পেশ ঘিরে যে সন্ত্রাসের আবহ তৈরি হয়েছে রাজ্যে, তার প্রতিবাদ জানিয়ে এদিন সরব হন বিভাস চক্রবর্তী, মীরাতুন নাহার, প্রতুল মুখোপাধ্যায়রা। শাসকদলের আচরণ নিয়ে তীব্র অসন্তোষ ধরা পড়ে একদা পরিবর্তনপন্থী ওই বিদ্বজ্জনদের গলায়। যা দেখে পরে সাংবাদিক বৈঠক করে ওই বিদ্বজ্জনদের কটাক্ষ করেন দিলীপ ঘোষ। বিদ্বজ্জনদের নিয়ে দিলীপের কটাক্ষের পাল্টা জবাবে মুখ খুলেছেন তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও।
ওই বুদ্ধিজীবীদের প্রসঙ্গে বুধবার দিলীপ বলেন যে, একসময় স্বার্থরক্ষার জন্য নিজেদের নীতি-আদর্শ বিসর্জন দিয়েছিলেন ওঁরা। দেরিতে হলেও ওঁদের চৈতন্য হয়েছে। তিনি আরও বলেন,সাহস থাকলে বিদ্বজ্জনরা রাস্তায় নেমে দেখাক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সমর্থন করে যে ওঁরা ভুল করেছেন, সেকথা প্রকাশ্যে স্বীকার করতেও বলেন দিলীপ ঘোষ।
আরও পড়ুন,পঞ্চায়েত ভোট: মনোনয়নপর্বে হিংসার নিন্দায় বিদ্বজ্জনরা
অন্যদিকে বিদ্বজ্জনদের নিয়ে দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্যের পরই আসরে নামেন তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সকল বিদ্বজ্জনেরই সুসম্পর্কের কথা মনে করিয়ে দিয়ে পার্থ বলেন, এ ব্যাপারে সকলের সঙ্গে কথা বলে জানব। সকলের কাছে সঠিক তথ্য নাও থাকতে পারে। অন্যদিকে মনোনয়নপর্বে শাসকদলের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ আরও একবার খারিজ করে তৃণমূলের মহাসচিব বলেন, আগের থেকে এবার বেশি মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে বিরোধীরা। পরিসংখ্যান তুলে ধরে পার্থ দাবি করেন, বিরোধীরা ৭০ হাজার মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে।
আরও পড়ুন,পঞ্চায়েত ভোট: বিজেপি, বামেদেরকে ফের হাইকোর্টে যেতে নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের দিন ঘোষণার পর থেকেই মনোনয়নপত্র দাখিল করা ঘিরে অশান্তি ছড়িয়েছে। শাসকদলের বিরুদ্ধে মনোনয়নপত্র পেশে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলে বারবার সরব হয়েছে বিরোধীরা। মনোনয়নপর্বে অশান্তিতে রাজ্যে রক্তও ঝরেছে। রাজ্যের এহেন পরিস্থিতি নিয়ে বুধবার সরব হন নাট্যব্যক্তিত্ব বিভাস চক্রবর্তী, শিক্ষাবিদ মীরাতুন নাহার, সঙ্গীতশিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়রা। রাজ্যে অবিলম্বে রাজনৈতিক হানাহানি বন্ধ করার আর্জি জানান বিভাস চক্রবর্তীও। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার গণতান্ত্রিক অধিকার বিরোধীদের থেকে খর্ব করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন শিক্ষাবিদ মীরাতুন নাহার। গণতন্ত্র যে বিকলাঙ্গ হয়ে পড়ছে, সেকথাও শোনা যায় বিদ্বজ্জনদের থেকে। আধিপত্য খাটিয়ে বেশিদিন ক্ষমতায় যে থাকা যায় না, তা শাসকদলের বোঝা উচিত বলে মন্তব্য করেন সঙ্গীতশিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়।