শান্তনু চৌধুরী
রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের ভবিষ্যৎ কোন দিকে সেদিকে তাকিয়ে গোটা রাজ্য। এর মধ্যেই এক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। পঞ্চায়েত ভোটে রাজ্যের ২৬ শতাংশ আসনে কোনও প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে না শাসকদলকে। কারণ, ওই ২৬ শতাংশ আসনে শাসকদলের প্রতিপক্ষ হিসেবে কোনও বিরোধী দলের প্রার্থীই নেই। এমন তথ্যই মঙ্গলবার প্রকাশ করল রাজ্য নির্বাচন কমিশন।
রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তথ্য বলছে, রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের ৫৮ হাজার ৬৯২টি আসনের মধ্যে ১৫ হাজার ৬৩০টি আসনে কোনও ভোটের লড়াই লড়তে হচ্ছে না তৃণমূলকে। কারণ ওই সংখ্যক আসনে কোনও বিরোধী প্রার্থীই নেই। যা এককথায় নজিরবিহীন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। গত ৪০ বছরের হিসেব বলছে, এর আগে মাত্র দু’বার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভোট হওয়া আসনের সংখ্যা ১০ শতাংশ ছাড়িয়েছিল। ২০০৩ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভোট হয়েছিল ১১ শতাংশ আসনে। অন্যদিকে ২০১৩ সালে এই হার দাঁড়িয়েছিল ১০.৬৬ শতাংশে। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভোটে লড়ার তালিকায় অবশ্য নাম নেই কোনও বিরোধী দলের।
রাজ্য নির্বাচন কমিশনের এই তথ্য প্রকাশ পাওয়ার পরই সরব হয়েছে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। কমিশনের এমন রিপোর্ট যে প্রত্যাশিতই ছিল, তা বলেছে বিজেপি। পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়নপত্র দাখিল করতে বিরোধীদের যে শাসকদল বাধা দিয়েছে, এই রিপোর্টই তার প্রমাণ বলে মনে করছেন তাঁরা। এ প্রসঙ্গে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বিজেপির জাতীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটে বিরোধী শূন্য করতে তৃণমূল হিংসাকে প্রশ্রয় দিয়েছে। পঞ্চায়েত ভোটকে প্রহসনে পরিণত করেছে ওরা।’’ তিনি আরও বলেন যে, এ কারণেই শাসকদলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে তাঁরা হাইকোর্টে গিয়েছিলেন।
যদিও এ প্রসঙ্গে এখনও মুখ খোলেননি তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। যদিও তৃণমূলের এক বর্ষীয়ান নেতা বলেন, ‘‘কোনও কোনও আসনে বিরোধীরা প্রার্থী দিতেই পারেনি। ওই আসনগুলিতে মানুষের সমর্থন নেই ওদের।’’
রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের দিন ঘোষণার পর থেকেই মনোনয়নপর্বে হিংসা ছড়িয়েছে রাজ্যে। মনোনয়নপত্র দাখিলে শাসকদলের বিরুদ্ধে বারবার বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে বিরোধীরা। এর আগে বিরোধীদের অভিযোগ খারিজ করে সরব হয়েছেন তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বিরোধীরাই বেশি সংখ্যক মনোনয়নপত্র পেশ করেন বলেও দাবি করেছিলেন পার্থ।
এদিকে রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট জটিলতায় গোটা নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্থগিতাদেশ জারি করেছে কলকাতা হাইকোর্ট।
অনুলিখন- সৌরদীপ সামন্ত