রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে জটিলতা যেন কাটছেই না। পঞ্চায়েত ভোটপ্রক্রিয়ার স্থগিতাদেশের মেয়াদ আরও একদিন বাড়াল কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ। বৃহস্পতিবার এ নিয়ে ফের শুনানি হবে সিঙ্গল বেঞ্চে। ফলে পঞ্চায়েত ভোট আদৌ নির্ধারিত সূচি মেনে হবে কিনা সে ব্যাপারে আরও সংশয় বাড়ল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
কিছুদিন আগেই রাজ্যের পঞ্চায়েত ভোটপ্রক্রিয়ায় স্থগিতাদেশ জারি করেছিল কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ। গত ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত রাজ্যের পঞ্চায়েত ভোটপ্রক্রিয়ায় স্থগিতাদেশ জারি করা হয়েছিল। সিঙ্গল বেঞ্চের স্থগিতাদেশের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে যায় রাজ্য সরকার ও রাজ্য নির্বাচন কমিশন। সোমবার পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে সেই মামলা সিঙ্গল বেঞ্চেই ফেরায় ডিভিশন বেঞ্চ।
এদিকে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য পেশ করেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। ওই তথ্য বলছে, রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের ৫৮ হাজার ৬৯২টি আসনের মধ্যে ১৫ হাজার ৬৩০টি আসনে কোনও ভোটের লড়াই লড়তে হচ্ছে না তৃণমূলকে। কারণ ওই সংখ্যক আসনে কোনও বিরোধী প্রার্থীই নেই। যা এককথায় নজিরবিহীন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। গত ৪০ বছরের হিসেব বলছে, এর আগে মাত্র দু’বার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভোট হওয়া আসনের সংখ্যা ১০ শতাংশ ছাড়িয়েছিল। ২০০৩ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভোট হয়েছিল ১১ শতাংশ আসনে। অন্যদিকে ২০১৩ সালে এই হার দাঁড়িয়েছিল ১০.৬৬ শতাংশে। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভোটে লড়ার তালিকায় অবশ্য নাম নেই কোনও বিরোধী দলের।
আরও পড়ুন, পঞ্চায়েত ভোট: ২৬ শতাংশ আসনে একলা লড়ছে তৃণমূল, চাঞ্চল্যকর তথ্য কমিশনের
অন্যদিকে রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়নপর্বে হিংসার প্রতিবাদ ও অবাধ ভোটের দাবিতে কলকাতায় সোমবার মিছিল করে বামেরা। বামেদের মিছিল হাঁটেন সূর্যকান্ত মিশ্র, বিমান বসুরা। একই ইস্যুতে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউতে অনশনে বসেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। মনোনয়নপর্বে হিংসার প্রতিবাদে গত শুক্রবার ৬ ঘণ্টার সাধারণ ধর্মঘট ডাকে বামেরা।
আরও পড়ুন, ঠুনকো প্রতিশ্রুতি! পঞ্চায়েত ভোট বয়কটের সিদ্ধান্ত ছিটমহলবাসীর
আগামী মাসের ১, ৩ ও ৫ তারিখ রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের দিন ঘোষণা করেছিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। এদিকে পঞ্চায়েত ভোটের দিন ঘোষণার পর থেকেই মনোনয়নপত্র দাখিল ঘিরে হিংসার পরিবেশ তৈরি হয় রাজ্যে। শাসসদলের বিরুদ্ধে মনোনয়নপত্র পেশে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলে সরব হয় বিরোধীরা। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে মনোনয়নপর্বে অশান্তির ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে সরব হন বিদ্বজ্জনরাও।