রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের ভাগ্য আপাতত ঝুলেই রইল। আজও পঞ্চায়েত ভোটের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সেভাবে কোনও দিশা পাওয়া গেল না। আবারও বাড়ল পঞ্চায়েত ভোটপ্রক্রিয়ার স্থগিতাদেশ। একদিনের জন্য পঞ্চায়েত ভোটের স্থগিতাদেশ বাড়াল কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ। বুধবার সকালে এ নিয়ে ফের শুনানি হবে সিঙ্গল বেঞ্চে। ফলে ঘোষিত সূচি অনুযায়ী পঞ্চায়েত ভোট হবে কিনা সে ব্যাপারে আরও অনিশ্চয়তা বাড়ল বলেই মনে করা হচ্ছে।
ক’দিন আগেই পঞ্চায়েত ভোটপ্রক্রিয়ায় স্থগিতাদেশ জারি করেছিল কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ। গত ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত রাজ্যের পঞ্চায়েত ভোটপ্রক্রিয়ায় স্থগিতাদেশ জারি করা হয়েছিল। সিঙ্গল বেঞ্চের স্থগিতাদেশের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে যায় রাজ্য সরকার ও রাজ্য নির্বাচন কমিশন। গতকাল পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে সেই মামলা সিঙ্গল বেঞ্চেই ফেরায় ডিভিশন বেঞ্চ। হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়কে নিজেদের নৈতিক জয় বলে দাবি করেছে বিজেপি। হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়কে ‘মানুষের জয়’ বলে আখ্যা দিয়ে বিজেপি নেতা মুকুল রায় বলেন, পঞ্চায়েত ভোট ঘিরে রাজ্যের শাসকদল গণতন্ত্রকে হত্যা করছে। ২০১৮ সাল থেকে ২০২১ সালের মধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চলে যেতে হবে বলেও ভবিষ্যদ্বাণী করেন মুকুল রায়।
ভোটপ্রক্রিয়ায় তাঁরা বিলম্ব করতে চান না বলে গতকাল জানিয়েছেন সিপিএম নেতা রবীন দেব। নির্বাচন বন্ধ করার পক্ষে নয় বলে জানিয়েছে বিজেপি নেতৃত্বও।
অন্যদিকে রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়নপর্বে হিংসার প্রতিবাদ ও অবাধ ভোটের দাবিতে কলকাতায় গতকাল মিছিল করে বামেরা। বামেদের মিছিল হাঁটেন সূর্যকান্ত মিশ্র, বিমান বসুরা। একই ইস্যুতে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউতে অনশনে বসেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।
আগামী মাসের ১, ৩ ও ৫ তারিখ রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের দিন ঘোষণা করেছিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। পঞ্চায়েত ভোটের দিন ঘোষণার পর থেকেই মনোনয়নপত্র দাখিল ঘিরে হিংসার পরিবেশ তৈরি হয় রাজ্যে। শাসকদলের বিরুদ্ধে মনোনয়নপত্র পেশে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলে সরব হয় বিরোধীরা। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে মনোনয়নপর্বে অশান্তির ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে সরব হন বিদ্বজ্জনরাও।
এদিকে শাসকদলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হয় বাম, কংগ্রেস, বিজেপি। মনোনয়নপত্র দাখিল সুনিশ্চিত করার পাশাপাশি অবাধ ভোটের দাবি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টেরও দ্বারস্থ হয় গেরুয়া বাহিনী। এরমধ্যেই মনোনয়নপত্র পেশের সময়সীমা আচমকা বাড়িয়ে তা রাতারাতি বাতিল করে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কমিশনের বিজ্ঞপ্তি বাতিল ঘিরে শুরু হয় নয়া রাজনৈতিক তরজা। কমিশনের বিরুদ্ধে পরে সুপ্রিম কোর্টে যায় বাম ও বিজেপি। যে ব্যাপারে রাজ্যের এই দুই বিরোধী মুখকে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে বলে দেশের শীর্ষ আদালত।
অন্যদিকে রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়নপর্বে হিংসার প্রতিবাদে গত সপ্তাহেই ৬ ঘণ্টার সাধারণ ধর্মঘট ডাকে বামেরা।