রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়নপত্র দাখিল ঘিরে হিংসার নিন্দা জানিয়ে এবার সরব হলেন এরাজ্যের বেশ কিছু বিদ্বজ্জন। বুধবার প্রেস ক্লাবে এ নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করলেন তাঁরা। অবিলম্বে রাজনৈতিক হানাহানি বন্ধ করার আর্জি জানিয়েছেন নাট্য ব্যক্তিত্ব বিভাস চক্রবর্তী। রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়াকে ঘিরে যেভাবে অশান্তি ছড়িয়েছে, তাতে ভোটের সময় কী হবে তা ভেবে এদিন আশঙ্কা প্রকাশও করেন তিনি। ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয় বলেও এদিন মন্তব্য করেন বিভাস চক্রবর্তী।
অন্যদিকে রাজ্যে মনোনয়নপত্র দাখিলে বিরোধীদের বাধা দেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে শাসকদলের বিরুদ্ধে সুর চড়ান সঙ্গীতশিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘আধিপত্যের চেয়ে বিপজ্জনক কিছু হয় না। আধিপত্য খাটিয়ে বেশিদিন ক্ষমতায় যে থাকা যায় না, তা শাসকদলের বোঝা উচিত।’’ মনোনয়নপত্র দাখিলের অধিকার থেকে বিরোধীদের বঞ্চিত করে রাখার অভিযোগ নিয়ে সরব হয়েছেন শিক্ষাবিদ মীরাতুন নাহার। তাঁর বক্তব্য, মনোনয়নপত্র দাখিল করা গণতান্ত্রিক অধিকারের মধ্যে পড়ে। অথচ সেই অধিকারই দেওয়া হচ্ছে না বিরোধীদের। নির্বাচন কমিশনকে ঠুঁটো জগন্নাথ করে রাখা হয়েছে বলেও কটাক্ষ করেন মীরাতুন নাহার।
আরও পড়ুন, পঞ্চায়েত ভোট: কমিশনের বাতিল করা বিজ্ঞপ্তিতে স্থগিতাদেশ দিল হাইকোর্ট
গত রবিবার রাজ্যে জুড়ে চলা অশান্তির প্রতিবাদে একটি মিছিলের আয়োজনও করেন বিশিষ্টজনেরা। ধর্মতলা থেকে রবীন্দ্রসদন পর্যন্ত এই মিছিলে বিশিষ্টজনদের পাশাপাশি পা মেলান বহু সাধারণ মানুষও। ওই মিছিল থেকে শান্তির বার্তা দেওয়া হয় রাজ্যবাসীকে।
কিছুদিন আগে রামনবমী ঘিরে রাজ্যে অশান্তির প্রতিবাদে সরব হয়েছিলেন রাজ্যের কয়েকজন বুদ্ধিজীবী। রানিগঞ্জ, আসানসোলসহ রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় রামনবমী ঘিরে হিংসার বিরুদ্ধে সোচ্চার হন জয় গোস্বামী, শুভাপ্রসন্ন, কবীর সুমনরা। সেদিনও প্রেস ক্লাবে রাজ্যবাসীকে সম্প্রীতির বার্তা দেন তাঁরা।
রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের দিন ঘোষণার পর থেকেই মনোনয়নপত্র দাখিল ঘিরে অশান্তি ছড়িয়েছে বিভিন্ন এলাকায়। মনোনয়নপত্র দাখিলে শাসকদলের বিরুদ্ধে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলে বারবার সরব হয়েছে বিরোধীরা। এ নিয়ে আদালতেরও দ্বারস্থ হয় কংগ্রেস ও বিজেপি। মনোনয়নপত্র দাখিল সুনিশ্চিত করার পাশাপাশি অবাধ পঞ্চায়েত ভোটের আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যায় বিজেপি। অন্যদিকে একই ইস্যুতে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় কংগ্রেস। যদিও বিরোধীদের সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। ক’দিন আগেই বীরভূমে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেলা পরিষদ দখল করে তৃণমূল। যেখানে ৪২টি আসনের মধ্যে ৪১টিতে কোনও প্রার্থীই দিতে পারেনি বিরোধীরা।