Advertisment

সংসদে সিকিউরিটি প্রটোকল লঙ্ঘন, প্রশ্নে ধুইয়ে দিলেন অধীর

নিরাপত্তাকর্মীরা কোথায় ছিল সেই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
parliament security breach

নিরাপত্তাকর্মীরা কোথায় ছিল সেই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি।

ধোঁয়া "নিরাপদ", "চিন্তার কোন কারণ নেই"। সংসদে বড় ধরণের নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ঘটনা সামনে আসতেই হুলস্থূল পড়ে যায়। গোটা ঘটনার যথাযথ তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে লোকসভার তরফে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে 'ক্যানিস্টার' থেকে নির্গত ধোঁয়া "নিরাপদ" এবং "চিন্তার কোন কারণ নেই"। এমনটাই জানিয়েছেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা।

Advertisment

কংগ্রেস সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেন, এই ঘটনা প্রমাণ করে আমাদের যতটা সতর্ক হওয়া উচিত ছিল, আমরা ততটা সতর্ক ছিলাম না? আমাদের সাংসদরা অনুপ্রবেশকারীদের ধরেছে… নিরাপত্তাকর্মীরা কোথায় ছিল সেই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি।

১৩ ডিসেম্বর ২০০১! এই দিনেই সংসদ ভবনে হয়েছিল ভয়াবহ সন্ত্রাসবাদী হামলা। ২২ বছর পর, একই দিনে, ফিরল সেই চেনা আতঙ্ক। গ্যালারি থেকে সরাসরি হাউসে লাফ ২ যুবকের। মুহূর্তে সংসদভবন ঢেলে গেল হলুদ ধোঁয়ায়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই প্রাণ বাঁচাতে দৌড়ঝাঁপ পড়ে যায়। তবে শেষমেশ ২ যুবকে ধরে তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেন লোকসভার সদস্যরাই। এই ঘটনা সামনে আসতে সংসদের নিরাপত্তা ইস্যুতে মোদী সরকারকে তুলোধোনা করেছে বিরোধী শিবির।

অধিবেশন চলাকালীন আচমকা গ্যালারি থেকে সরাসরি ওয়েলে নেমে ‘ক্যানস্টার’ হাতে দাপিয়ে বেড়াল সংসদের ওয়েলে। এরপরই তীব্র আতঙ্ক ছড়ায় সাংসদদের মধ্যে। এর জেরে সংসদের কার্যক্রম বেলা ২টো পর্যন্ত মুলতবি রাখা হয়।

ধুন্ধুমার কাণ্ড সংসদে। বুধবার, ১৩ ডিসেম্বর শীতকালীন অধিবেশনের জন্য সংসদের কার্যক্রম চলাকালীন লোকসভায় নিরাপত্তার বড়সড় গলদের খবর সামনে এসেছে। সংসদ ভবনে হঠাৎ ঢুকে পড়ল ২ যুবক, টিয়ার গ্যাসের শেল খুলতেই একেবারে হইচই পড়ে যায় লোকসভায়। সংসদ টিভির ভিজ্যুয়ালগুলিতে, নীল জ্যাকেট পরা এক ব্যক্তিকে হাউসে বেঞ্চের উপর লাফ দিতে দেখা যায়। এর পর হলুদ ধোঁয়ায় ঢেকে যায় লোকসভা।

ডিএমকে সাংসদ ডাঃ সেন্থিলকুমারের শেয়ার করা ছবিগুলিতে দেখা যাচ্ছে হাউসের ভিতরে ধোঁয়ায় ভরে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে দু’জন। ২০০১ সালে সংসদে হামলার আজ ২২ তম বর্ষপূর্তি। সেদিনের সেই হামলায় নয়জন নিরাপত্তা কর্মী নিহত হয়৷ আজকের দিনেই সংসদের অভ্যন্তরে এই ঘটনায় ছড়িয়ে পড়ে তুমুল আতঙ্ক।

লোকসভার শীতকালীন অধিবেশন চলাকালীন পাবলিক গ্যালারি থেকে লাফিয়ে পড়েন দুই ব্যক্তি। সঙ্গে সঙ্গে লোকসভায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেছেন, তারা পাবলিক গ্যালারি থেকে ঝাঁপ দিয়েই এক ধরণের “গ্যাস” স্প্রে করেছিল যার ফলে চোখের জ্বালার সৃষ্টি হয়। তারা সাংসদদের হাতে ধরা পড়েন। নিরাপত্তাকর্মীরা তাদের বের করে আনে। দুপুর ২টা পর্যন্ত অধিবেশন মুলতবি করা হয়। এটি অবশ্যই একটি নিরাপত্তা লঙ্ঘন”।

কংগ্রেস সাংসদ কার্তি চিদম্বরম বলেন, “হঠাৎ বছর ২০-এর ২ যুবক ‘ভিজিটর গ্যালারি’ থেকে হাউসের ওয়েলে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং তাদের হাতে ‘ক্যানিস্টার’ ছিল। এই ‘ক্যানিস্টার’গুলি থেকে হলুদ ধোঁয়া বেরোতে থাকে। তাদের মধ্যে একজন স্পিকারের চেয়ারের দিকে ছুটে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। তারা কিছু স্লোগান দিচ্ছিল। এটি নিরাপত্তার লঙ্ঘনের এক গুরুতর বিষয়। বিশেষ করে ১৩ ডিসেম্বর, যেদিন ২০০১ সালে সংসদে হামলা হয়েছিল।”

জানা গিয়েছে দুজনকেই ধরে সংসদ মার্গ থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। সেখানেই তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। । যখন এই ঘটনাটি ঘটেছিল, তখন সংসদে জনস্বার্থ সংক্রান্ত একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা চলছিল। ঘটনার আকস্মিকতায় সকলেই রীতিমত অবাক। নিউজ এজেন্সি এএনআই জানিয়েছে যে দু’জনের বিরুদ্ধে গ্যাস নির্গমনকারী কিছু উপাদান ছুঁড়ে মারার অভিযোগ রয়েছে।

লোকসভার নিরাপত্তার গাফিলতি প্রসঙ্গে সমাজবাদী পার্টির সাংসদ ডিম্পল যাদব বলেন, ‘এটি নিরাপত্তা ব্যবস্থার সম্পুর্ণ ত্রুটি। আজ হাউসের ভেতরে যে কোন কিছুই ঘটতে পারত… এখানে যারাই আসেন – তারা দর্শক হোক বা সাংবাদিক, কারও কোন ট্যাগ নেই! সরকারকে এ দিকে নজর দেওয়া উচিত’।

তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দোপাধ্যায় বলেছেন "আমাদের আরও সতর্ক হওয়া উচিত"। “এমপিরা প্রবেশ করলে গেটে শ'য়ে শ'য়ে মানুষ দাঁড়িয়ে থাকে। সকাল ১১ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত চিত্রটা একই। সাংসদদের উদ্বেগের কথা উল্লেখ করে বিড়লা বলেন, “আমি সমস্ত উদ্বেগ বুঝি। আমরা সবাই একসঙ্গে বসে এই নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করব। আমরা কীভাবে হাউসে আরও ভাল ব্যবস্থা করতে পারি সে সম্পর্কে আপনার পরামর্শগুলি বিবেচনায় নেব… আমরা দর্শকদের পাস করার সময় আমাদের কী কী সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত তা নিয়ে আলোচনা করব। পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, আমাদের দায়িত্ব হল হাউস চালু রাখা।”

adhir choudhury
Advertisment