ভারতীয় জনতা পার্টির 'শৌর্য দিবস'-এ, কাশ্মীর নিয়ে সংসদে বিরাট প্রস্তাব দিলেন কেন্দ্রীয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। প্রতিবছর বাবরি মসজিদ ধ্বংসের দিন, ৬ ডিসেম্বর দেশজুড়ে 'শৌর্য দিবস' পালন করে ভারতীয় জনতা পার্টি। বুধবার সেই ৬ ডিসেম্বর। আর, এদিনই লোকসভায় জম্মু ও কাশ্মীর সংরক্ষণ (সংশোধন) বিল এবং জম্মু ও কাশ্মীর পুনর্গঠন (সংশোধন) বিল নিয়ে সংসদে বিতর্কের জবাব দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। শাহ জানিয়েছেন, জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভায় একটি আসন পাক-অধিকৃত কাশ্মীর থেকে বাস্তুচ্যুতদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। এর আগে, তিনি বলেছিলেন যে দুটি বিল গত ৭০ বছর ধরে কাশ্মীরের বঞ্চিত বাসিন্দাদের ন্যায়বিচার ফিরিয়ে দেবে। শাহ বলেছেন যে তিনি আনন্দিত, কারণ কেউ বিলগুলোর বিরোধিতা করেননি। শাহ এসব বললেও বিরোধীরা প্রতিবাদ জানিয়ে কক্ষ থেকে ওয়াকআউট করেন। তার মধ্যেই লোকসভায় পাস হয়ে যায় জম্মু-কাশ্মীর পুনর্গঠন (সংশোধন) বিল।
মোদী সরকার আইন করে কাশ্মীরের ৩৭০ ধারার রক্ষাকবচ তুলে দিয়েছে। যা নিয়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধ বিরোধী দলগুলো। বিরোধী শিবির 'ইন্ডিয়া'-তেই রয়েছে কাশ্মীরের নিজস্ব রাজনৈতিক দলগুলো। তার মধ্যেই জম্মু ও কাশ্মীরে প্রারম্ভিক বিধানসভা নির্বাচনের জন্য বিরোধী সদস্যরা চাপ দিচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে বিরোধীদের চাপের কাছে নতিস্বীকার দূর, এবার ২০১৮ থেকে কেন্দ্রীয় শাসনের অধীনে থাকা কাশ্মীরকে নিয়ে দাবার নতুন চাল দেওয়ার পথে হাঁটল মোদী সরকার।
বুধবার সংসদে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'কাশ্মীর নিয়ে তিনটি যুদ্ধ হয়েছে। ১৯৪৮ সালে পাকিস্তান অনুপ্রবেশকারীদের নামে আক্রমণ করেছিল। এতে ৩১,৭৭৯ পরিবার পাক-অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীর থেকে জম্মু-কাশ্মীরে চলে আসতে বাধ্য হন। এর মধ্যে ২৬,৩১৯ পরিবার জম্মু-কাশ্মীরে ৫,৪৬০ পরিবার গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। তাঁরা পাকিস্তানের হামলার শিকার হয়েছিলেন। এর পাশাপাশি, ১৯৬৫ এবং ১৯৭১ সালেও যুদ্ধ হয়েছিল। তাতে আরও ১০,০৬৫টি পরিবার বাস্তুচ্যুত হয়। সব মিলিয়ে ৪৮, ৬৫ এবং ৭১- এই তিন যুদ্ধে ৪১,৮৪৪ পরিবার বাস্তুচ্যুত হয়েছিল।'
আরও পড়ুন- শেয়ার সূচক-জিডিপির বৃদ্ধি, অর্থনৈতিক লাভ কি শাসক দলের নির্বাচনী জয়ের ইঙ্গিত?
বিরোধীদের অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারে কী এমন বদলাল? সংসদে দাঁড়িয়ে সেই প্রশ্নেরও জবাব দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'এই বিল সেই সব বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোকে প্রতিনিধিত্ব দেওয়ার জন্য আনা হয়েছে। আজ, সেই সব বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলো এমন অবস্থায় নেই যে তাঁরা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জম্মু-কাশ্মীরের বিধানসভায় বসবেন। যাঁরা প্রশ্ন করছেন, ৩৭০ ধারা অপসারণে কী হল? ৫ আর ৬ আগস্টের জেরে কী বদলাল? ২০১৯ সালের ৫ আর ৬ আগস্টে এটাই হয়েছে, যে যাঁদের কথা কেউ শোনেননি (কাশ্মীরের বাস্তুচ্যুত), তাঁদের কথা নরেন্দ্র মোদী শুনেছেন। আর, আজ তাঁদের অধিকার দিচ্ছেন।'