আর দলের উপর নয়, এবার ফেসবুকে পোস্ট করে সরাসরি দলনেত্রীর উপরই অনাস্থা প্রকাশ করলেন কোচবিহার দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক মিহির গোস্বামী। বর্তমানে দলে 'দিদির লোকে' আর প্রয়োজন নেই বলে তোপ দেগেছেন তিনি। দল সম্পর্কে ফেসবুকেই নিজের ব্যাখার পক্ষেও একাধিক যুক্তি দিয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক।
সোশাল মিডিয়ায় এদিন মিহির গোস্বামী লিখেছেন, 'আমার দল আর আমার নেত্রীর হাতে নেই, অর্থাৎ এই দল আর আমার নয়, হতে পারে না। তাই এই দলের সঙ্গে সমস্ত রকমের সম্পর্ক ছিন্ন করাটাই কি স্বাভাবিক নয়?' মিহিরবাবুর ফেসবুক পোস্ট নিয়ে ইতিমধ্যেই নানা জল্পনা শুরু হয়েছে।
দেড় মাস আগেই দলের বিরুদ্ধে মুখ খুলে সাংগঠনিক সব কার্যকলাপ থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন এই তৃণমূল বিধায়ক। এরপরও দলের তরফে তাঁর কাছে কোনও ফোন আসেনি বলে অভিযোগ মিহির গোস্বামীর। ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, 'সংগঠন থেকে আমার অব্যাহতি নেওয়ার ঘোষণা করার পর ৬ সপ্তাহ কেটে গিয়েছে। এই ৪৩ দিনে আমি সব দলের কাছ থেকে এক বা একাধিক ফোন কল পেয়েছি, কথা বলেছি। কিন্তু গত ৬ সপ্তাহে খোদ নেত্রীর কাছ থেকে কোনও ফোন আসেনি। কোনও বরখাস্তনামা কিংবা বহিষ্কারের নির্দেশও আসেনি তাঁর কাছ থেকে।' তৃণমূল বিধায়কের মতে এইসব ঘটনাই প্রমাণ করছে যে দলের রাশ আর নেত্রীর হাতে নেই।
মিহির গোস্বামীর ফেসবুক পোস্ট
শাসক দল ও নেতৃত্বের 'জো হুজুর' হতে না পারলে সেখানে অস্তিত্ব টিঁকিয়ে রাখা কঠিন বলেও অভিযোগ কোটবিহাক দক্ষিণের বিধায়কের। তিনি জানিয়েছেন, 'ঊনিশশো ঊননব্বই সাল থেকে তাঁর নেতৃত্ব মেনে দীর্ঘ তিরিশ বছর অতিক্রম করার পর হঠাৎ বোধগম্য হয়েছে, এ দল এখন আর আমার দিদি-র দল নয়, দিদি এখানে নিস্পৃহ। তাই 'দিদির লোক' এখানে অপ্রয়োজনীয় ও গুরুত্বহীন। অন্যায্য সবকিছু মেনে নিয়ে 'যো হুজুর' করে টিকে থাকতে পারলে থাকো, নয়ত তফাৎ যাও।'
এই প্রথম নয়। এর আগেও, মিহির গোস্বামীকে ঘিরে অস্বস্তিতে পড়েতে হয়েছে তৃণমূল নেতৃত্বকে। নির্বাচনী স্ট্র্যাটেজিস্ট প্রশান্ত কিশোরের কাজ প্রকাশ্যে কটাক্ষ করেন তিনি। পুজো মিটতেই বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিকের সঙ্গেও দেখা করেন তৃণমূল বিধায়ক। যা তাঁর বিজেপি যোগের সম্ভাবনাকে উস্কে দেয়। এদিনের ফেসবুক পোস্ট মিহির গোস্বামীর রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে জল্পনায় নয়া মাত্রা যোগ করল।
এদিকে মিহির গোস্বামীর পর দলের কার্যকলাপ নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন সিতাইয়ের তৃণমূল বিধায়র জগদীশ বর্মা বসুনিয়াও। মিহিরবাবুর সঙ্গে দলীয় নেতৃত্বের অবিলম্হে কথা বলা উচিত বলে জানান তিনি। বলেন, 'মিহিরবাবু তৃণমূল ছাড়লে দলে তার প্রভাব পড়বে। দলের মধ্যে থেকে তাঁকে তাড়িয়ে দেওয়ার চক্রান্ত করছেন জেলা নেতৃত্বের একাংশ।' পিকে-র বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগরে দেন সিতাইয়ের বিধায়ক।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন