নজির বিহীন রাজনৈতিক জোটের মুখে জম্মু-কাশ্মীর। রাষ্ট্রপতি শাসনাধীন উপত্যকায় সরকার গড়ার লক্ষ্যে হাত মেলাতে চলেছে পিডিপি-ন্যাশনাল কনফারেন্স-কংগ্রেস। জানা যাচ্ছে, বুধবার সন্ধ্যাতেই এই জোট গঠনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হবে। এরপরই এই তিন দলের নেতৃত্ব সরকার গঠনের দাবি নিয়ে এক সঙ্গে দেখা করবেন রাজ্যপাল সত্যপাল মালিকের সঙ্গে।
কে হবেন মুখ্যমন্ত্রী?
জানা যাচ্ছে, এই অভূতপূর্ব জোটের মুখ্যমন্ত্রীর দৌড়ে এই মুহূর্তে এগিয়ে রয়েছেন পিডিপি-র প্রবীণ নেতা তথা প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী আলতাফ বুখারি। তবে সূত্রের খবর, মুখ্য়ন্ত্রীর পদে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ফারুক আবদুল্লাকে চেয়েছিলেন পিডিপি-র সভানেত্রী মেহবুবা মুফতি। কিন্তু, পরিস্থিতির চাপে পড়ে রাজ্য রাজনীতিতে চির প্রতিদ্বন্দ্বি পিডিপি-র সঙ্গে জোট সরকার গড়ার প্রস্তাবে রাজি হলেও মুখ্যমন্ত্রীর পদ গ্রহণ করতে চাননি ফারুক। বরং, পিডিপি-ন্যাশনাল কনফারেন্স-এর জোট সরকারকে বাইরে থেকে সমর্থন করতে চায় ন্যশনাল কনফারেন্স। ফলে, বুখারির নামই সর্বসম্মত মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে উঠে আসছে।
এই মুহূর্তে বিধানসভার পাটীগণিত
৮৭ আসন বিশিষ্ট জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভায় ম্যাজিক ফিগার ৪৪। এই মুহূর্তে সভার যা আসন বিন্যাস তাতে পিডিপি-র দখলে ২৮, ন্যাশনাল কনফারেন্স- ১৫, কংগ্রেস ১২ এবং বিজেপি-র ঝুলিতে ২৫টি আসন। ফলে, প্রস্তাবিত জোটের হাতে থাকবে মোট ৫৫টি আসন যা ম্যাজিক ফিগারের থেকে বেশ খানিকটা বেশি।
হঠাৎ কেন এই জোট?
ন্যাশনাল কনফারেন্সের এক প্রবীণ নেতা জানিয়েছেন, জম্মু-কাশ্মীরের 'বিশেষ মর্যাদা' রক্ষার তাগিদেই হাত মিলিয়েছে যুযুধান দুই দল এবং এগিয়ে এসেছে কংগ্রেসও। তাঁর আশঙ্কা, এই তিন দল একজোট হয়ে সরকার গড়তে চাইলে কেন্দ্র রাজ্যপালের মাধ্যমে বিধানসভা ভেঙে দেওয়ার প্রচেষ্টা করতে পারে। তবে সে ক্ষেত্রেও পিছু হঠবেন না তাঁরা। বরং, দেশবাসীর কাছে বিজেপি-র আসল চেহারা প্রকাশ পেয়ে যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসে জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভা নির্বাচনের ত্রিশঙ্কু ফল প্রকাশিত হয়। এরপরই আলোচনায় বসে বিজেপি-পিডিপি শীর্ষ নেতৃত্ব। ১ মার্চ, ২০১৫ রাজ্যের পিডিপি-বিজেপি জোট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন পিডিপি-র সভানেত্রী তথা মুফতি মহম্মদ-কন্য মেহবুবা মুফতি। এরপর ছোটো খাটো মতানৈক্য হলেও মোটের উপর চলতে থাকে জোট সরকার। কিন্তু, রাজ্যে জঙ্গি নিধনে নিরাপত্তা বাহিনীর মোতায়েন নিয়ে বিজেপি- পিডিপি-র ফাটল ক্রমশ চওড়া হতে থাকে। এরপরই ২০১৮ সালে 'দেশের সার্বভৌমত্ব', 'দেশের স্বার্থ' এবং 'নিরাত্তা'র যুক্তি দেখিয়ে জোট সরকার থেকে বেরিয়ে আসে কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি। এরপর থেকে সে রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হয়।
Read the full story in English