প্রধানমন্ত্রী মোদী সংসদের নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ঘটনাকে 'দুর্ভাগ্যজনক, উদ্বেগজনক' বলে উল্লেখ করেছেন। সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বিষয়টির গভীরে গিয়ে তা খতিয়ে দেখার ওপর জোর দিয়েছেন।
সংসদের নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ঘটনার কয়েকদিন পর, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই ধরণের ঘটনাকে 'দুর্ভাগ্যজনক' এবং 'উদ্বেগজনক' বলে অভিহিত করেছেন। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন যে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছেন।
সংসদের নিরাপত্তা লঙ্ঘন ইস্যুতে চড়েছে রাজনীতির পারদ। সংসদে এই নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিবৃতির দাবি জানিয়েছেন বিরোধী নেতারা। এদিকে সংসদের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিপ্তে একটি সংবাদপত্রকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী মোদী সংসদের নিরাপত্তায় ত্রুটির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন যে 'এই বিষয়টি তদন্ত করা প্রয়োজন এবং একই সঙ্গে ঘটনার আরও গভীরে যাওয়া প্রয়োজন'।
সংবাদপত্রকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই ঘটনাকে অত্যন্ত দুঃখজনক ও উদ্বেগজনক বলে বর্ণনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তিনি বলেছেন, এ বিষয়ে বিতর্কের পরিবর্তে এর গভীরে যাওয়া প্রয়োজন। সংসদের নিরাপত্তায় গলদ নিয়ে বিরোধীরা ক্রমাগত কেন্দ্রীয় সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছে। নিরাপত্তার ত্রুটি নিয়ে বিরোধীদের হট্টগোলের মধ্যে সংসদের কার্যক্রম বেশ কয়েকবার স্থগিত করতে হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছেন যে 'সংসদে ঘটে যাওয়া ঘটনাকে কোন ভাবেই ছোট করে দেখছে না সরকার। স্পিকার ওম বিড়লা এই বিষয়ে গুরুত্ব সহকারে সমস্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছেন। তিনি বলেন, তদন্তকারী সংস্থাগুলোও বিষয়টি কঠোরভাবে তদন্ত করছে। এর পিছনে কী উদ্দেশ্যে রয়েছে তা খতিয়ে দেখার কাজ চলছে। আমাদের একত্রিত হয়ে সমাধান বের করতে হবে'।
১৩ ডিসেম্বর সংসদে নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ঘটনায় ইতিমধ্যেই পুলিশ ছয় অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। এদিকে রবিবার রাজস্থান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে সংসদে নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ঘটনায় অভিযুক্তদের পোড়া মোবাইল ফোনের যন্ত্রাংশ, জামাকাপড়। গ্রেফতার হওয়া সকল আসামীকে সাত দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। দুই ব্যক্তি – সাগর শর্মা এবং মনোরঞ্জন ডি – জিরো আওয়ারে পাবলিক গ্যালারি থেকে লোকসভার ওয়েলে ঝাঁপ দিয়েছিলেন, ক্যানিস্টার থেকে হলুদ ধোঁয়া ছোঁড়েন এবং স্লোগান দিতে থাকেন। দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল এই ঘটনার তদন্ত করছে।
শনিবার দিল্লি পুলিশ সংসদের নিরাপত্তা লঙ্ঘনের মামলায় ষষ্ঠ অভিযুক্ত মহেশ কুমাওয়াতকে গ্রেফতার করেছে। কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন যে কুমাওয়াতও পুরো ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রবিবার সংসদের নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ঘটনায় অভিযুক্তদের মোবাইল ফোনের পোড়া অংশ, জামাকাপড় ও জুতো উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের সব ফোনই ছিল মাস্টারমাইন্ড ললিত ঝা-র কাছে। তিনি প্রথমে সমস্ত ফোন ভেঙে দেন এবং পরে আগুন ধরিয়ে দেন।
এদিকে কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী এই ঘটনা নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তিনি বলেন, “দেশের প্রধান সমস্যা বেকারত্ব। প্রধানমন্ত্রী মোদির নীতির কারণে দেশের যুবকরা কর্মসংস্থান পাচ্ছে না এবং এর পেছনের কারণ (এই ঘটনা) ) হল বেকারত্ব এবং মুদ্রাস্ফীতি।”