আদানি ইস্যুতে বৃহস্পতিবারও দিনভর হট্টগোলে কাটল সংসদে রাজ্যসভার অধিবেশন। তার মধ্যেই তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বক্তব্য। আদানি প্রসঙ্গের ধারেকাছে না-গিয়ে বিরোধীদের উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বললেন, 'যত কাদা ছুড়বেন, তত পদ্ম জন্মাবে।' একথা বলার পাশাপাশি তাঁর ৯০ মিনিটের দীর্ঘ বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রীকে দেখা গেল বিরোধীদের অভিযোগ উপেক্ষা করে কেন্দ্রের সাফল্যের জয়গান গাইতে।
কখনও তাঁর বক্তব্যে ঘুরেফিরে এল রান্নার গ্যাসের উজ্জ্বলা যোজনার প্রসঙ্গ। কখনও আবার জনধন যোজনায় বিনামূল্যে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার কথা। অথবা, সকলের জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়ে কেন্দ্রীয় সাফল্যের প্রচার। বিরোধীরা অবশ্য তার মধ্যেই জয়েন্ট পার্লামেন্টারি কমিটি বা যৌথ সংসদীয় কমিটি বা জেপিসির দাবিতে অনড় থেকেছেন।
তবে সেসব যে তিনি মোটেও গায়ে মাখছেন না, বক্তব্যে তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদসূচক বক্তৃতায় মোদী বলেন, 'যত কাদা ছুড়বেন, তত পদ্ম ফুটবে।' বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বোঝানোর চেষ্টা করেন যে তিনি দেশের জন্য বাঁচেন। যা কিছু করেন, সবই দেশের জন্য। আর বিরোধীরা শুধু নিজেদের স্বার্থে রাজনৈতিক খেলা খেলে চলেছেন। বিরোধীদের কটাক্ষ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'কিছু ব্যক্তির ভাষা এবং আচরণ অত্যন্ত হতাশাজনক। আর, সেটা শুধু এই অধিবেশন কক্ষের জন্যই নয়। দেশের পক্ষেও রীতিমতো হতাশাজনক।'
শুধু একথা বলেই ক্ষান্ত হননি প্রধানমন্ত্রী। বিরোধীদের আক্রমণের জবাবে প্রতিআক্রমণে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তুলে ধরেছেন বহু পুরোনো অভিযোগ। গণতন্ত্রের প্রতি কংগ্রেসের আস্থা যে আসলে স্রেফ লোকদেখানো তা বোঝাতে মোদী টেনে আনেন জরুরি অবস্থার প্রসঙ্গ, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর কথা। সত্তরের দশকে সংবিধানের ৩৫৬ ধারা প্রয়োগ করে ইন্দিরা গান্ধী কীভাবে দেশের নির্বাচিত রাজ্য সরকারগুলোর ক্ষমতা খর্ব করেছিলেন। সেখানে জরুরি অবস্থা জারি করেছিলেন, বক্তব্যে সেই প্রসঙ্গই তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন- মস্কোয় পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে দোভাল, কী গোপন বিষয়ে কথা হল?
শুধু ইন্দিরা গান্ধীই নন। প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে তুলে আনেন ইন্দিরা গান্ধীর বাবা তথা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর প্রসঙ্গও। কেরলের প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত কমিউনিস্ট সরকারকে নেহরু ক্ষমতাচ্যুত করেছিলেন। তারপরও কমিউনিস্টরা কংগ্রেসের সংসদে কংগ্রেসের পাশে থাকছেন। এনিয়েও প্রধানমন্ত্রীকে বামেদের প্রতি কটাক্ষ করতে শোনা যায়।
Read full story in English