তাঁদের বেশভূষা একই রকম, কথা বলার ধরণেও তেমন পার্থক্য নেই- তবে মিল এই পর্যন্তই। কারণ, একজনের নাম অভিনন্দন পাঠক, আর অন্যজন নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদী। অভিনন্দন পাঠককে হঠাৎ দেখলে তাঁকে প্রধানমন্ত্রী মোদী ভেবে যে কেউ ভুল করবেন এবং করছেনও। আর তাই এই 'নকল মোদী'ই এখন কংগ্রেসের তুরুপের তাস। ভোটমুখী ছত্তিশগড়ের বাস্তার এলাকার পথে ঘাটে হাত চিহ্নের হয়ে ভোট প্রচারে নেমে মোদী থুড়ি মোদীরূপী পাঠক বলছেন, "আচ্ছে দিন আর আসবে না..."।
কে এই অভিনন্দন পাঠক?
বিজেপি-র নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের অন্যতম শরিক দল রিপাবলিকান পার্টি অফ ইন্ডিয়া (অটোয়ালে)। এই দলেরই উত্তরপ্রদেশ শাখার সহ-সভাপতি ছিলেন অভিনন্দন পাঠক। হ্যাঁ, 'ছিলেন', কারণ তিনি এখন আর ওই পদে নেই। অক্টোবর মাসে উত্তরপ্রদেশ কংগ্রেসের প্রধান তথা বিশিষ্ট অভিনেতা রাজ বব্বরের উপস্থিতিতে কংগ্রেসে নাম লিখিয়েছেন অভিনন্দন। কিন্তু, কেন? সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে পাঠক জানিয়েছেন, "মোদীর মতো দেখতে বলে মানুষ আমাকে দেখলেই প্রশ্ন করত, 'আচ্ছে দিন কোথায়?' আসলে, ২০১৪ লোকসভা নির্বাচনের আগে মোদী নিজেই এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু, সাধারণ মানুষের দুর্দশা দেখে আমার মন খুব খারাপ হয়ে যেত। আর সে জন্যই বিজেপি জোট ছেড়ে আমি কংগ্রেসে যোগ দিই"।
আরও পড়ুন- নোটবন্দিকে ‘পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র’ বললেন রাহুল
কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার পরই ছত্তিশগড়ের বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে নেমে পড়েছেন অভিনন্দন পাঠক। মূলত জগদলপুর, দান্তেওয়াড়া, কোন্দাগাঁও এবং বাস্তার এলাকায় প্রচার করছেন পাঠক। প্রচারে নেমে পাঠক সবসময় নিশানা করছেন স্বয়ং মোদীকে। মোদীর বাচনভঙ্গি নকল করে আচ্ছে দিন এবং প্রত্যেক ভারতীয়র ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতিকে বিঁধছেন তিনি। পাঠক বলছেন, "মিত্র, আমি আপনাদের সত্য কথাটা বলতে এসেছি, আচ্ছে দিন আর আসছে না। এটা একটা মিথ্যা প্রতিশ্রুতি। দয়া করে কংগ্রেসকে ভোট দিন, উন্নয়ন তাদের হাত ধরেই আসবে"।
উল্লেখ্য, ২০১৪ লোকসভা নির্বাচনের আগে মোদীর মতো দেখতে বেশ কয়েকজন সারা দেশে গেরুয়া শিবিরের হয়ে প্রচারে নেমেছিলেন। অভিন্দন পাঠকও তাঁদের অন্যতম। তবে এবার তিনি অন্য পথের পথিক। এদিকে, ছত্তিশগড়ের একটি কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী নকশালদের হাতে খুন হওয়া কংগ্রেস নেতা তথা সালোয়া জুড়ুমের প্রতিষ্ঠাতা মহেন্দ্র কর্মার স্ত্রী দেবতী কর্মা জানেনই না যে তাঁর হয়ে প্রচারে নেমেছেন মোদীরূপী অভিনন্দন। তিনি আশাবাদী, স্বামীর ভাবমূর্তিই তাঁকে ভোট বৈতরিণী পার করবে। তবে স্থানীয় কংগ্রেকর্মীদের দাবি, পাঠকের প্রচার রীতিমতো সাড়া ফেলেছে এলাকায়। তবে বিজেপি প্রার্থী ভীমা মান্দভি আবার অভিনন্দনের সাফল্য মানতে নারাজ। তাঁর দাবি, মোদীরূপীকে প্রচারে নামিয়ে আদতে কংগ্রেস নরেন্দ্র মোদীর জনপ্রিয়তাকেই স্বীকৃতি দিয়ে ফেলেছে।
Read the full story in English