রবিবারের বিভাজনের পরও এনসিপিতে নাটক অব্যাহত। দলের আট বিধায়ককে নিয়ে রবিবার বিরোধী শিবির ছেড়ে মহারাষ্ট্র সরকারে যোগ দিয়েছেন অজিত পাওয়ার। মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনি শপথ নিয়েছেন। সেই সময় অজিত পাওয়ার দাবি করেছিলেন, তিনি এনসিপির হয়েই মহারাষ্ট্র সরকারে যোগ দিয়েছেন। গোটা এনসিপি তাঁর সঙ্গে আছে। তাঁর সেই বক্তব্যের কিছুক্ষণ পরে, শরদ পাওয়ার জানিয়ে দেন।তিনি বিরোধী শিবিরেই আছেন। আর, তাতেই স্পষ্ট হয়ে যায়, এনসিপির ব্যাটন এখন কার হাতে তা নিয়ে লড়াই শুধু সময়ের অপেক্ষা।
ইতিমধ্যেই দলের ৪১ জন বিধায়কের স্বাক্ষরিত হলফনামা নির্বাচন কমিশনের কাছে দাখিল করে আসল এনসিপির মর্যাদা ও প্রতীক দাবি করেছে অজিত পাওয়ার। দলের নেতা প্রফুল্ল প্যাটেল নিজেই জানিয়েছেন ৩০ জুন নিজেই মুম্বইতে অজিত পাওয়ারের বাসভবনে বসেই সেই হলফ নামা তৈরি করেন। তিনি দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, “সেই দিনে, আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে নথি হস্তান্তর করেছি। নথিতে বলা হয়েছে যে অজিত পাওয়ার ৪১ জন বিধায়কের স্বাক্ষরিত সমর্থনের একটি হলফনামা সহ এনসিপির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন”। এদিকে শরদ পাওয়ার ইতিমধ্যেই অজিত সহ ৯ বিধায়কের বিধায়কপদ খারিজের প্রচেষ্টায় মত্ত।
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সঙ্গে কথা বলার সময়, প্রফুল্ল প্যাটেল বলেন: “দুটি প্রধান বিষয় যা আমার সঙ্গে শরদ পাওয়ারের দুরত্ব তৈরি করেছিল তা হল এক, শারদ পাওয়ার অতীতে নিজেও বিজেপির সঙ্গে আঁতাত করতে লজ্জাবোধ করেননি… দুই, মেয়ে সুপ্রিয়া সুলে দলের সমস্ত কিছুর মাথায় বসেছেন”। অজিত পাওয়ার, হাসান মুশরিফ, ছগান ভুজবল এবং সুনীল তাটকরে সহ প্রধান নেতাদের বিরুদ্ধে ইডির তদন্ত প্রসঙ্গে প্যাটেল বলেন, “এজেন্সিগুলি আমার বিরুদ্ধে কিছুই খুঁজে পায়নি। ইডির কারণে বিজেপির সঙ্গে মিত্রতার কোন নেই”। তিনি বলেন, ২০১৪ সালে, শরদ পাওয়া বিজেপিকে বাইরের সমর্থনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন! এমনকি ২০১৯ সালেও, যখন অজিত পাওয়ার উপমুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিয়েছিলেন তখন সবটা জানতেন শরদ পাওয়ার। ২০২২-এও যখন শিন্ডে বিজেপির শিবিরে যোগ দিচ্ছেন তখন শরদ পাওয়ার আমাকে জয়ন্ত পাতিল এবং অজিত পাওয়ারকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে আমরা বিজেপির সাথে জোট করতে পারি কিনা। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল’।
২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে বিরোধী ঐক্য নিয়ে প্যাটেল বলেন, ‘পাটনার ছবি অনুপ্রেরণাদায়ক ছিল না’। তিনি বলেন, বিরোধীরা মোদী বিরোধী প্রচার চালাচ্ছেন কিন্তু কোন মন্ত্র বাজিমাত হবে তা নিয়ে নিজেরাই সন্দিহান। শরদ পাওয়ারকে নিশানা করে তিনি বলেন, “শারদ পাওয়ার ২০১৪ সাল থেকে অন্তত তিনবার বিজেপির সঙ্গে ফ্লার্ট করেছেন তিনি। ২০১৯ সালের নির্বাচনের পরে, তিনি শিবসেনার সঙ্গে জোট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তিনি নীতিগত বিরোধী হিসাবে থাকতে পারতেন, কিন্তু তিনি কংগ্রেস এবং শিবসেনার সঙ্গে জোটকেই বেছে নিয়েছেন”। সেই সঙ্গে তিনি আরও বলেন, “পার্টির (এনসিপি) ভবিষ্যত ঝুঁকির মধ্যে ছিল। মেয়েকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে দলের মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় অজিত পাওয়ারকে উপেক্ষা করা হচ্ছিল। বিষয়টি দলের বিধায়করা ভালভাবে নেন নি বলেও জানিয়েছেন প্রফুল্ল প্যাটেল।