জেডিইউ থেকে বহিষ্কারের পরই প্রশান্ত কিশোরকে ঘিরে তুমুল জল্পনা বঙ্গ রাজনীতিতে। ‘প্রশান্ত কিশোরকে দলের সহ-সভাপতি করবেন মমতা’, এ ভাষাতেই কটাক্ষ করেছেন মহম্মদ সেলিম। প্রশান্ত কিশোরকে দল থেকে সরিয়ে দেওয়ার কোনও পজিটিভ বা নেগেটিভ এফেক্ট নেই বলে মনে করে বঙ্গ বিজেপি। প্রশান্ত কিশোরকে খড়কুটোর সঙ্গে তুলনা করেছে বিজেপি। অন্যদিকে কংগ্রেস ও সিপিএমের বক্তব্য নিজের রাজ্য থেকেই যাঁকে সরিয়ে দিয়েছে তিনি এখানে এসে আর কী করতে পারবেন। এই তিন দলেরই বক্তব্য, সংগঠন ছাড়া রাজনীতিতে দীর্ঘ সময় টিকে থাকা যায় না।
২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে এই রাজ্যে ১৮ টি আসনে জয় পায় বিজেপি। ১২ টি আসন হারিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের আসন সংখ্যা দাঁড়ায় ২২টিতে। এরপর তৃণমূল সুপ্রিমো ভোটগুরু প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ করেন। রাজ্যের তিন উপনির্বাচনে তিনটিতেই জয়ের মুখ দেখে তৃণমূল কংগ্রেস। প্রশান্ত কিশোরের ওপর ভরসা বেড়ে যায় ঘাসফুল শিবিরের। দলের অভ্যন্তরীণ বৈঠকেও হাজির হতে থাকেন প্রশান্ত। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দল প্রশান্ত কিশোরের কাছে মতামত নেয়। কিন্তু বিহারে জেডিইউ তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করায় তাঁর গুরুত্ব নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে বাম, কংগ্রেস ও বিজেপি।
আরও পড়ুন: ‘মমতাদি মুকুলদাকে বলেছিলেন, দ্যাখো ও কথা শুনছে না’
বিজেপি মনে করে, পলিটিক্যাল স্ট্র্যাটেজিস্টদের যদি এতই বাজার থাকতো তাহলে তো আর সংগঠনের দরকার পড়ত না। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, ‘‘যারা ভোটে হারবে তাদের ভোকাল টনিক হয় প্রশান্ত কিশোর। এঁরা নির্বাচনে সাহায্য করতে পারেন কিন্তু নির্বাচনে জিতিয়ে দিতে পারেন না। টাকা দিয়ে হলে টাটা, বিড়লা, আম্বানিরা এমন প্রশান্ত কিশোরকে নিয়ে এসে দেশের প্রধানমন্ত্রী হত, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হত। যাদের আর কিছু করার নেই, ভরসা নেই, তারাই এদের ওপর নির্ভর করে। নীশীত কুমার তা জানেন তাই বের করে দিয়েছেন দল থেকে। এর পজিটিভ বা নেগেটিভ কোনও এফেক্ট নেই’’।
প্রশান্ত কিশোরকে বরখাস্ত করা নিয়ে কটাক্ষ করেছে সিপিএম। দলের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবার ওঁকে দলে সহ-সভাপতি করে দেবেন। আগে ছিল, বাংলা আজ যা করে গোটা দেশ কাল তা করে। এবার বিহার যেটা বাতিল করেছে তৃণমূল সেটাকে গ্রহণ করবে। আগে রাজনীতিবিদরা রাজনীতির আদর্শ ও কর্মসূচি নিয়ে মানুষের কাছে যেত। এখন পেশাদার লোকেদের নিয়ে এই কাজ করছেন। তবে সংগঠন ছাড়া দীর্ঘ দিন টিকে থাকা যায় না। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র বলেন, ‘‘বাংলার মাটিটা শক্তমাটি। অন্য জায়গায় যা হয় তা বাংলায় হয় না। বিহারের লোককেই জেডিইউ সরিয়ে দিচ্ছে, বাংলায় তিনি কী করবেন! দেখা যাক’’।