বিহার রাজনীতির ক্ষমতায় শাসক দল বদল হতেই ঘোলাজলে মাছ ধরতে নেমে পড়েছেন প্রশান্ত কিশোর। তিনি নিজে রাজনৈতিক দল গড়ছেন। ২০২৪-এর মাঝামাঝি তিনি নতুন দলের ঘোষণা করবেন। লক্ষ্য, ২০২৫ সালের বিহার বিধানসভা নির্বাচন। গত মে থেকেই নিজের দল গঠনের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন কিশোর। গোটা বিহার চষে ফেলছেন। সমাজের সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে কথা বলছেন। কোন এলাকা থেকে কাকে দলে টানা যায়, তা দেখছেন। যে বিহারের রাজনীতিতে পিকে নতুন কুশীলব হতে চাইছেন, সেখানকার রাজনীতি দীর্ঘদিন ধরেই জয়প্রকাশ নারায়ণের অনুগামীদের হাতে শাসিত হয়েছে। সেখানে দাঁড়িয়েও পিকের চেষ্টায় যে কোনও অন্ত নেই, সেটা অবশ্য বোঝা যায় একটু নজর রাখলেই।
এই পরিস্থিতিতে বেশ কিছু সময় পুরোনো একটা দৃশ্যের কথা ভাবা যাক। পাটনার বেইলি রোডের শেখপুরা হাউসের বারান্দায়, নোটপ্যাড এবং কলম নিয়ে যুবকরা সুন্দরভাবে সাজানো চেয়ারে উদ্বিগ্নভাবে অপেক্ষা করছেন। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার আরজেডির সঙ্গে নতুন জোট গঠন করছেন। বিহার রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে রয়েছে। মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে বীরচাঁদ প্যাটেল পাথে বিজেপির শীর্ষ নেতারা তাঁদের দলীয় কার্যালয়ে নীতীশ কুমারের সঙ্গে এতদিন জোটে থাকার জন্য বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। কয়েক মিনিট পরে, বাংলোর দরজা খুলে বেরিয়ে এলেন প্রশান্ত কিশোর। সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের সবচেয়ে আলোচনায় থাকা ভোটকুশলী। পরবর্তী দেড় ঘণ্টা তিনি অপেক্ষায় থাকা সাংবাদিকদের সঙ্গে বিহারের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে কথা বললেন। প্রাক্তন জেডি(ইউ) জাতীয় সহ-সভাপতির কাছে এটি ছিল অত্যন্ত একটি ব্যস্ত দিন।
আরও পড়ুন- তাইওয়ান আর ভারত-চিন সীমান্ত সমস্যাকে মেলাবেন না, নয়াদিল্লিকে আর্জি চিনের রাষ্ট্রদূতের
সেসব যেন এখন অনেক পুরোনো কোনও দিন। কিশোরের এক অনুগামী ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে এই প্রসঙ্গে বলেন, 'আমরা বিহারের রাজনীতিকে বাইরে থেকে দেখেছি। অনেক ওপর থেকে দেখেছি। এবার জমিতে নামার সময় এসেছে।' আর, সেই জমি থেকে দেখতে গিয়েই চলতি বছরের মে মাস থেকে টিম কিশোর বা টিম পিকে শুরু করেছে 'জন সুরাজ' আন্দোলন। যা আসলে নতুন দল গঠনের প্রস্তুতি। প্রশান্ত কিশোর দাবি করেছেন, তিনি বিহারকে একটি রাজনৈতিক বিকল্প দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন। যে বিহার জাতপাতের রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে মূল বিষয়কে সমাধান করতে পারে। বিহারের অনুন্নয়নের সমস্যা মেটাতে পারে।
এই দল গঠনের মহড়ার অঙ্গ হিসেবে, কিশোর ইতিমধ্যেই বিহারের বিভিন্ন জেলায় প্রায় ১৫০ থেকে ২০০ জনসভা করেছেন। ২ অক্টোবর থেকে শুরু করবেন পদযাত্রা। গোটা বিহারের প্রতিটি পঞ্চায়েত, ব্লক, পুরসভায় তিনি পদযাত্রা করবেন। পদযাত্রা চলাকালীন স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে বৈঠকও করবেন। দেড় বছর ধরে চলবে তাঁর এই পদযাত্রা। তারপরে নতুন দল গঠনের প্রশ্ন। এই পদযাত্রা চলাকালীন টিম কিশোর যেমন স্থানীয় বাসিন্দাদের সমস্যা বোঝার চেষ্টা করবে। তেমনই কাদের রাজনীতিতে টেনে আনা উচিত, সেই ব্যক্তিদেরও এলাকাভিত্তিক ভাবে বেছে নেবে।
Read full story in English