নীতীশের উইকেট তুলে নিয়ে বিরোধী জোটের ধারণাকে মানুষের মন থেকে মুছে দিতে চেয়েছে বিজেপি। লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে নীতীশ এনডিএতে যোগ দেওয়া বিরোধীদের জন্য এক "বড় মানসিক আঘাত"। লোকসভা নির্বাচনের আগে এমনটাই জানিয়েছেন ভোটকূশলী প্রশান্ত কিশোর।
সামনেই লোকসভা নির্বাচন। তার আগেই ইন্ডিয়া জোটে ভাঙনের চিত্রটা যেন ক্রমশই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। ইন্ডিয়া জোট ছেড়ে এনডিএ -এর সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গড়েছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। পাশাপাশি বাংলাতে মমতা বন্দোপাধ্যায় বিজেপির বিরুদ্ধে রাজ্যে একলা চলার ডাক দিয়েছে। পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী কংগ্রেসের সঙ্গে লোকসভা নির্বাচনে জোট না গড়ার কথা বলেছে। রাজ্যে রাজ্যে আসন ভাগাভাগি নিয়ে এখনও সেভাবে ঐক্যমতে পৌঁছাতে পারেনি জোট। এর মাঝেই জোটের ব্যর্থতাকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর।
নয়াদিল্লিতে এক্সপ্রেস আড্ডায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, নীতীশ কুমার দলে টেনে আনা বিজেপির কাছে নির্বাচনের আগে এক বড় জয়। এর মাধ্যমে বিজেপি বিরোধী জোটের উপর বড় ধাক্কা দিতে পেরেছে। তিনি বলেন, 'কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী লোকসভা নির্বাচনের মাত্র দু'মাস আগে যাত্রা শুরু করার পদক্ষেপ ছিল "সবচেয়ে খারাপ সিদ্ধান্ত"। কারণ "যুদ্ধে কখনই সেনা কমান্ডার তার সদর দফতর ত্যাগ করেন না" এবং "এই সময় যখন রাহুলের মণিপুরে না হয়ে সদর দফতরে থাকা উচিত ছিল”। পাশাপাশি তিনি লোকসভা নির্বাচনের মাত্র নয় মাস আগে বিরোধীদের জোট গঠনের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলেন, 'দলগুলি, যদি একত্রিত ভাবে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের চিন্তা-ভাবনা করত তা অন্তত দুই বছর আগে তা করা উচিত ছিল'।
প্রশান্ত কিশোর ইন্ডিয়া জোটের সমালোচনা করে বলেন, 'বিরোধী দলগুলি জোট গঠনের পর ভোটারদের কাছে পৌঁছানোর পরিবর্তে কেবল রুদ্ধদ্বার বৈঠক করে চলেছে'। দিল্লিতে এক্সপ্রেস আড্ডা অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে তিনি বলেন, "রাহুল গান্ধী যদি ইউরোপ ভ্রমণ করতে পারেন, তাহলে জোট কেন ভোটারদের কাছে পৌঁছাতে পারছে না"?
বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য জোটের মধ্যে গাম্ভীর্যের অভাব’ তুলে ধরে, তিনি বলেছিলন, ২০২৩ সালের জুনে বিহারের পাটনায় বৈঠকের পর থেকে জোটের সদস্য দলগুলি আরও অনেক কিছু করতে পারত। তিনি বলেন, ‘বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের “গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ” বাঁচাতে ২৫ টিরও বেশি সদস্য একটি জোট গঠনের জন্য পর থেকে সদস্যরা মাত্র তিনবার মিলিত হয়েছেন। প্রশান্ত কিশোর বলেন, ‘বিজেপি বিরোধী জোটের ধারণাটিকে শেষ করতে চেয়েছিল, আর সেই লক্ষ্যেই নীতীশের উইকেট তারা তুলে নিয়েছে যা বিজেপির কাছে অনেকটা যুদ্ধে জয়ী হওয়ার মতই”।
কিশোর আরও পরামর্শ দেয় যে বিরোধী দলকে সফল হওয়ার জন্য মৌলিক বিষয়গুলিতে মনোনিবেশ করা উচিত। “তাকে প্রথমে তাদের অনুপ্রাণিত করতে হবে যারা বিজেপির মতাদর্শে পুরোপুরি বিশ্বাসী নন। কিশোর বলেন, ‘হিন্দুত্ব নিয়ে রাজনীতিতে শাসক দলকে কোণঠাসা করার আগে বিরোধীদের ৬০ শতাংশ ভোটারকে একত্রিত করতে হবে যারা ২০১৯ সালে বিজেপিকে ভোট দেয়নি’।
কিশোর উল্লেখ করেছেন যে প্রধানমন্ত্রী মোদীর উপর বিজেপির অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা আসন্ন নির্বাচনে বড় ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী মোদী না থাকলে, সিএম যোগী আদিত্যনাথ উত্তরপ্রদেশে জিততে পারতেন না।”