বেঙ্গালুরুতে বিরোধী দলগুলির বৈঠকে সমাজবাদী পার্টির জাতীয় সভাপতি অখিলেশ যাদব এবং কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর মধ্যে সৌজন্যতার যে ছবি ধরা পড়েছে তা রাজনৈতিক মহলে অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। ২০১৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস এবং এসপি একসঙ্গে জোট বেঁধে লড়াইয়ের ময়দানে নামে।
জোটের স্লোগান ছিল ‘ইউপি কো ইয়ে সাথ পাসন্দ হ্যায়’। ২০১২-২০১৭ সাল পর্যন্ত উত্তর প্রদেশে অখিলেশ যাদবের সরকার ছিল। রাহুল এবং অখিলেশ যাদবের জোটের প্রভাব ২০১৭-এর নির্বাচনে তেমন ভাবে পড়েনি। এসপি ৪৭ টি বিধানসভা আসন এবং কংগ্রেস জেতে মাত্র ৭টি আসন। ২০২২ সালের বিধানসভা নির্বাচনে, এসপি জোট পায় ১১১টি আসন যেখানে কংগ্রেস মাত্র ২টি আসন জেতে। এখন প্রশ্ন উঠেছে ২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে সমাজবাদী পার্টি এবং কংগ্রেস আবার রাজনীতির ময়দানে একসঙ্গে ব্যাটিংয়ে নামবে কিনা? সমাজবাদী পার্টির মুখপাত্র ফখরুল হাসান খোলাখুলি কিছু না বললেও রাজনীতিতে সম্ভাবনা সবসময়ই খোলা থাকে বলে মনে করেন তিনি।
বেঙ্গালুরুতে বৈঠকের পরে, অখিলেশ যাদব তার ভাষণে স্পষ্টভাবে বলেছিলেন যে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে বিজেপিকে পরাজিত করতে এগিয়ে যাব। এসপির প্রধান সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রামগোপাল বলেন, যে রাজ্যে আঞ্চলিক দল শক্তিশালী সেই রাজ্যে সেই দলের নেতৃত্বেই লোকসভা নির্বাচন লড়তে হবে। এই পরিস্থিতিতে, এটা স্পষ্ট যে ‘খিচুড়ি’র সম্ভাবনা রয়েই গিয়েছে।
সমাজবাদী পার্টি সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত ৫০টিরও বেশি লোকসভা আসনে সমীক্ষার কাজ শেষ করেছে সমাজবাদী পার্টি। উত্তরপ্রদেশে মোট ৮০টি লোকসভা আসন রয়েছে। সমাজবাদী পার্টি জোটের শর্তে জোটের শরিকদের ১৫-২০ আসন ছাড়তে প্রস্তুত। যদিও সমাজবাদী পার্টি বিশ্বাস করে যে কংগ্রেস শহরাঞ্চলের বেশিরভাগ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে ভাল হয় এবং সমাজবাদী পার্টি এবং আরএলডি বাকি আসনগুলিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চায়। প্রার্থীদের বাছাই থেকে শুরু করে বুথস্তরে দলের শক্তি পরীক্ষার কাজ শুরু করেছে উত্তরপ্রদেশের সমাজবাদী পার্টি।
আগামী বছর লোকসভা নির্বাচনে তেড়েফুঁড়ে ময়দানে নামতে চাইছে অখিলেশ। জোট একপ্রকার চূড়ান্ত হলেও এসপি সূত্রে জানা গেছে যে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বর্তমান জোট এবং অন্যান্য দলগুলি সম্পর্কে দলের জেলা ইউনিটগুলির মতামতও নিচ্ছেন। স্থানীয় নেতা ও কর্মীদের কাছ থেকে প্রতিক্রিয়া নেওয়ার পরে, অখিলেশ এবং শিবপাল কীভাবে মাঠে-ময়দানে সংগঠনকে শক্তিশালী করা যায় সে সম্পর্কে মতামত প্রকাশ করবেন, এমনটাই জানিয়েছেন দলের এক সিনিয়র নেতা। আজমগড় লোকসভা আসনের উপনির্বাচনে দল খারাপ ভাবে হেরে যায় গত বছর। এরপর সেই আসনের সমীক্ষায় জেলার নেতাদের পরাজয়ের কারণগুলি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন অখিলেশ। দলীয় সূত্রে খবর, পরের নির্বাচনে ওই একই আসনে দল যাতে জয় পায় তার জন্য খুঁটিনাটি সকল প্রকার পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।