Advertisment

মেদিনীপুরে মোদী: লোকসভা ভোটের আগে ঝড় তুলতেই কি সভা?

২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনে এ রাজ্য়ে প্রচারে এসেছিলেন মোদী। তারপর আর বাংলামুখো হননি প্রধানমন্ত্রী। বদলে অমিত শাহ এসে দলকে চাঙ্গা করার প্রচেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Modi government faces no confidence

পরীক্ষার মুখে মোদি সরকার (ফাইল ফোটো)

অমিত শাহ পুরুলিয়ায় সভা করে ২০১৯ লোকসভা ভোটের দামামা বাজিয়ে দিয়েছেন। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি রাজ্য় সরকারকে উপড়ে ফেলে দেওয়ার ডাক দিয়েছিলেন। এবার গেরুয়া শিবিরে অক্সিজেন যোগাতে আসছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। চলতি মাসের ১৬ তারিখ মেদিনীপুর শহরে সভা করবেন দলের প্রধান কান্ডারী। বলাই বাহুল্য, সভা সফল করতে আসরে নেমে পড়েছেন বিজেপির রাজ্য় নেতৃত্ব।

Advertisment

এখনও সভার স্থান নির্দিষ্ট হয়নি। বিজেপির রাজ্য় সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, "প্রাথমিকভাবে মেদিনীপুর কলেজ মাঠে সভা করার কথা রয়েছে। তবে শহরে গাড়ি ঢোকার একটা সমস্য়া আছে। ভিড়ের ঠেলায় যানজট হয়ে যায়। অনেক কর্মী-সমর্থক সভায় পৌঁছতে পারেন না। পুরুলিয়ায় অমিত শাহের সভায়ও এমনটা হয়েছিল। তার ওপর এটা প্রধানমন্ত্রীর সভা। তাই শহর লাগোয়া বড় বিকল্প মাঠও দেখা হচ্ছে।"

আরও পড়ুন: অমিতের পুরুলিয়া সফরের জের, রাজোয়ারদের হাতে তৃণমূলের পতাকা

গত ২৭ ও ২৮ জুন রাজ্য়ে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন অমিত শাহ। তার এক মাসের মধ্য়েই প্রধানমন্ত্রীর জনসভা রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। জঙ্গলমহলে সভা করেছেন অমিত শাহ। এবার জঙ্গলমহল-সংলগ্ন মেদিনীপুরে সভা করবেন মোদী। রাজনৈতিক মহলের মতে, পঞ্চায়েত নির্বাচনে জঙ্গলমহলে ভাল ফলের প্রভাব কিছুতেই ক্ষীণ হতে দেবে না গেরুয়া শিবির। সেই প্রভাব যেন লোকসভার ভোটেও থাকে, স্বাভাবিকভাবেই সেই চেষ্টা করবে তারা। জঙ্গলমহলের আশপাশের অঞ্চলে অধিকার বিস্তার করতেও চাইছে বিজেপি। তাই পরিকল্পনা মাফিক এই জনসভা। জঙ্গলমহল লাগোয়া লোকসভা আসন দখল করাই লক্ষ্য়। তাই কোনওরকম সময় নষ্ট করতে রাজি নয় গেরুয়া বাহিনী।

publive-image সম্প্রতি দুদিনের রাজ্য় সফরে এসেছিলেন অমিত শাহ। ফাইল ছবি

কেন্দ্রীয় প্রকল্প নিয়ে রাজ্য় সরকারকে তুলোধোনা করে গিয়েছেন অমিত শাহ। রাজ্য়কে তাঁর বক্তব্য়ের পাল্টা জবাব দিতে হয়েছে। বিড়ম্বনাও বেড়েছে রাজ্য়ের। এবার মেদিনীপুরের সভায় কী বলবেন মোদী তাই দেখার। দলের রাজ্য় সভাপতি বলেন, "ধান-সহ বিভিন্ন খরিফ ফসলের সহায়ক মূল্য় বৃদ্ধি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তাই কৃষকরা সংবর্ধনা দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে।" কৃষকরা এই সভায় যথেষ্ট ভিড় করবেন বলে দাবি খড়্গপুরেরে বিধায়কের।

অমিত শাহ রাজ্য় সরকারকে উপড়ে ফেলে দেওয়ার কথা বলে থাকতে পারেন, কিন্তু দুদিনের সফরে তাঁর মুখ থেকে নারদা, সারদা বা চিটফান্ড নিয়ে একটা কথাও উচ্চারিত হয়নি। সিবিআই বা ইডির কথাও মুখে আনেননি। তাই ফের বিজেপি এবং তৃণমূলের মধ্য়ে সুপ্ত আঁতাতের গন্ধ পেতে শুরু করেছে রাজনৈতিক মহল। তবে অনেকে মনে করছেন, সিবিআই এবং ইডি অস্ত্রে কাজ না-হওয়ায় আপাতত চুপ করে গিয়েছেন অমিত শাহ। নরেন্দ্র মোদী মেদিনীপুরের সভায় কী বার্তা দেন তার জন্য় অপেক্ষা করছে গেরুয়া শিবির। 

২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনে এ রাজ্য়ে প্রচারে এসেছিলেন মোদী। তারপর আর বাংলামুখো হননি প্রধানমন্ত্রী। বদলে অমিত শাহ এসে দলকে চাঙ্গা করার প্রচেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন। অভিজ্ঞ মহল মনে করছে, ১৬ জুলাই মোদী এই রাজ্য়ে লোকসভা ভোটের প্রচার শুরু করবেন। বিজেপি যে কৃষকদের পাশে রয়েছে তা বোঝাতেই এই সভা। সিঙ্গুর বা নন্দীগ্রামে জমি আন্দোলন কৃষকদের বিক্ষোভকে পুঁজি করেই রাজ্য়ের ইতিহাস বদলে দিয়েছিল। কিন্তু বর্তমান রাজ্য় সরকার কৃষি সংক্রান্ত এমন কোনও ভুল করেননি যে বিজেপি তার ফায়দা তুলতে পারবে। তাই কী ভাবে কৃষকদের পাশে রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার তথা গেরুয়া শিবির তা বোঝাবেন মোদী। এ রাজ্য়ে প্রায় ৭০ শতাংশ ভোটার গ্রামাঞ্চলে বাস করেন। স্পষ্টতই তাঁদের টার্গেট করেছে গেরুয়া বাহিনী। গ্রাম দখল না করলে আসন বাড়বে না তা বেশ ভাল করেই জানেন বিজেপির ভোট ম্য়ানেজাররা।

bjp amit shah panchayat election purulia west bengal politics narendra modi
Advertisment