Advertisment

তৃণমূলের দখলে রানি রাসমনি রোড, ক্ষোভে ফুঁসছে বিরোধীরা

১০ জানুয়ারি থেকে রানি রাসমনি রোডে মঞ্চ বেধে ধরনা-অবস্থান করছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। বৃহস্পতিবার থেকে কিষাণ ও ক্ষেতমজুররা সিএএ ও এনআরসির বিরোধিতা করে রানি রাসমনির মঞ্চে অবস্থান করবে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
tmc

রানি রাসমনি রোডে সিএএ এবং এনআরসি বিরোধী অবস্থান তৃণমূল ছাত্র পরিষদের। ছবি- শশী ঘোষ

অন্যদের জায়গা দেবে না বলেই রানি রাসমনি রোডে মঞ্চ তৈরি করে দখল রেখেছে তৃণমূল কংগ্রেস, অভিযোগ রাজ্যের বিরোধীদের। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের অবস্থান শেষ হতেই ওই একই জায়গায় দলের কিষাণ ও ক্ষেতমজুর সংগঠন বৃহস্পতিবার থেকে বসবে অবস্থানে। এরফলে ধর্মতলা চত্বরে অন্য কোনও রাজনৈতিক দল মিছিল-মিটিং করতে পারছে না বলেই সিপিএম, বিজেপি ও কংগ্রেসের অভিযোগ। বিধানসভায় এ নিয়ে প্রশ্ন তুললেও সরাসরি এর কোনও জাবাব দেননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

১০ জানুয়ারি থেকে রানি রাসমনি রোডে মঞ্চ বেধে ধর্না-অবস্থান করছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। ২৬ দিনের মাথায় সেই অবস্থান উঠছে। তবে খোলা হয়নি মঞ্চ। জানা গিয়েছে, সিএএ ও এনআরসি বিরোধী আন্দোলন চলতেই থাকবে। বৃহস্পতিবার থেকে সেখানে অবস্থানে বসতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেসের কিষান ও ক্ষেতমজুরদের সংগঠন। জেলা ভিত্তিক অবস্থানের দিনক্ষণও ঠিক করা হয়েছে। এই টানা অবস্থানের ফলে রাজ্যের অন্য বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি ধর্মতলা চত্বরে আন্দোলন করতে পারছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।

তৃণমূল কংগ্রেস সিএএ ও এনআরসি বিরোধী মঞ্চ হিসাবে রানি রাসমনি রোডে দীর্ঘ আন্দোলনের পরিকল্পানা নিয়েছে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য বলেন, "দিদি যা নির্দেশ দিয়েছে সেই নির্দেশ কার্যকর করেছি।" পশ্চিমবঙ্গ কিষাণ ও ক্ষেতমজুর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি বেচারাম মান্না বলেন, "বৃহস্পতিবার থেকে কিষাণ ও ক্ষেতমজুররা সিএএ ও এনআরসির বিরোধিতা করে রানি রাসমনির মঞ্চে অবস্থান করবে।" সেখানে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে আমাদের প্রতিবাদ।" এরপর সেখানে আন্দোলন করার কথা রয়েছে তৃণমূলের উদ্বাস্তু সেলের।

উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ১১ জানুয়ারি দুদিনের সফরে কলকাতা এসেছিলেন। সেদিন কলকাতায় মোদীর বিরুদ্ধে পথে নেমেছিল ডান-বাম উভয়েই। ১০ জানুয়ারি থেকে রানি রাসমনি রোডে মঞ্চ বেঁধে অবস্থানে বসে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। ১১ জানুয়ারি মোদীর সঙ্গে বৈঠকের পর সেই অবস্থান মঞ্চে হাজির হয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সময় অন্য় সংগঠনের সদস্যরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিক্ষোভ দেখিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। উত্তেজনা বাড়তে থাকে রানি রাসমনি রোডে। এরপর থেকেই লাগাতার সিএএ এবং এনআরসি বিরোধী অবস্থান চলেছে ওই মঞ্চ থেকে। এরই মধ্যে এনআরসি ও সিএএ বিরোধী একটি অরাজনৈতিক প্রতিবাদী সংগঠন ওয়াই চ্যানেলের উদ্দেশে মিছিল করে। সেই মিছিল আটকে দেওয়া হয় কলকাতা পুরসভার কাছে। সেখানেই তাঁরা রাস্তার বসে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে।

এদিকে, বিধানসভায় সিএএ বিরোধী প্রস্তাব পাশ হয় বিশেষ অধিবেশনে। সেই সময় সিপিএম-এর পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর জবাব ছিল, 'কোথাও কি আন্দোলন হচ্ছে না?' তবে সেদিন সরাসরি কোনও জবাব দেননি মুখ্য়মন্ত্রী। এদিন সুজন চক্রবর্তী বলেন, "সেদিন মুখ্যমন্ত্রী আমার প্রশ্নের উত্তর দেননি। তবে আবারও বলব। লোক নেই, জন নেই। সরকারের মদতে মঞ্চ করে দখল করে রেখেছে।" প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র বলেন, "মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারকে কুক্ষিগত করছে। দিনের পর দিন একটা জায়গা ব্লক করে রাখতে পারে? মানুষের প্রতিবাদের ভাষা ব্য়ক্ত করার নির্দিষ্ট কিছু জায়গা আছে। এর ফলে কার্যত বিজেপির সুবিধা হচ্ছে।"

বঙ্গ বিজেপির বক্তব্য, তৃণমূল রাস্তায় মঞ্চ বেঁধে দিনের পর দিন অবস্থান আন্দোলন করছে। কিন্তু পদ্ম শিবিরকে কোনও মিছিল-মিটিংয়ের অনুমতি দিচ্ছে না রাজ্য সরকার। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, "রানি রাসমনি রোড দখল করে রেখেছে। অথচ আমাদের একটা মিছিলের অনুমতি দিচ্ছে না। কলেজ স্কোয়ার চত্বর চিরদিন আন্দোলনের জায়গা, এখন সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করে মিটিং-মিছিল বন্ধ করে দিয়েছে। সভা-সামবেশকে তৃণমূল ভয় পাচ্ছে। কাউন্টার করতে পারছে না। নিজেদের লুকিয়ে রাখছে। সেজন্য় যে জায়গাগুলোতে আন্দোলন হয় সেই জায়গা আটকে রাখার চেষ্টা করছে।"

tmc bjp CONGRESS Cpm caa
Advertisment