উপ-রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পরেই পুদুচেরি বিধানসভায় আস্থা ভোট ঘোষণা করলেন টি সৌন্দর্যরাজন। আগামি ২২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে আস্থা ভোট। তেলেঙ্গানার রাজ্যপাল হিসেবে কার্যভার সামলানোর পাশাপাশি পুদুচেরির উপ-রাজ্যপাল হিসেবে তিনি অতিরিক্ত দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন। দক্ষিণের ছোট সেই কেন্দ্রশাসিত রাজ্যে সাংবিধানিক সঙ্কট তৈরি হতেই অপসারিত করা হয় উপ-রাজ্যপাল কিরণ বেদিকে।
ইতিমধ্যে দু’জন কংগ্রেস বিধায়ক পদত্যাগ করায় সেই রাজ্যে ‘সংখ্যালঘু’ হয়ে পড়েছে কংগ্রেস-ডিএমকে জোট সরকার। এমন দাবিতে সরব এআইডিএমকে-বিজেপি জোট। যদিও মুখ্যমন্ত্রী ভি নারায়ণস্বামীর দাবি, ‘তারাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। বিরোধীদের দাবি অমূলক। ওরা নিজেদের দুর্বলতা বুঝবে। আমি আবার বলছি এই সরকার আইন মোতাবেক মেয়াদ পূরণ করবে।‘
এদিকে, জানা গিয়েছে হাত তুলে আস্থা ভোটে অংশ নেবেন বিধায়করা। করা হবে ভিডিওগ্রাফিও। পুদুচেরি বিধানসভার বর্তমান বিধায়ক সংখ্যা ২৮। শাসক জোটের পক্ষে ৪ জন আর বিরোধী জোটের পক্ষে ১৪ জন বিধায়ক।
এদিকে, বিধানসভা নির্বাচনের এখনও কয়েক মাস বাকি আছে। কিন্তু সরকার নিয়ে সমস্যায় পুদুচেরির কংগ্রেস সরকার। বিধানসভায় পুদুচেরির কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল কংগ্রেস সরকার তার সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাতে থাকে যখন বিধায়ক এ জন কুমার-সহ ওপর এক বিধায়ক স্পিকার ভি পি শিবকোলুন্থুর কাছে পদত্যাগের প্রস্তাব দেন। ৩০ আসনে বিধানসভায় কংগ্রেসের বিধায়ক সংখ্যা এখন ১০।
গত বছরের মাঝামাঝি সময় থেকেই পুদুচেরি বিধানসভায় কংগ্রেসের বিধায়ক সংখ্যা ক্রমশই কমেছে। জন কুমারের পদত্যাগের পর মোট ৪ জন বিধায়ক কংগ্রেসের ক্যাবিনেট ছেড়ে বেরিয়ে যান। ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস পুদুচেরিতে ৩০ টি আসনের মধ্যে ১৫ টি আসন দখল করেছিল। জোটসঙ্গী ডিএমকে পেয়েছিল ৪ টি আর এক নির্দল তাদের সমর্থন করেছিল।
এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন পুদুচেরির সরকার তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে। গত কয়েকদিনে একদিকে যেমন চার কংগ্রেস বিধায়ক ইস্তফা দিয়েছেন, অন্যদিকে এক বিধায়কের সদস্যপদ বাতিল হয়ে গিয়েছে।
উল্লেখ্য, কংগ্রেসের তরফে ভি নারায়নস্বামী সরকার গঠন করেন। তবে শুরু থেকেই তাঁর অভিযোগ ছিল, উপরাজ্যপাল তাঁকে কাজ করতে দিচ্ছেন না। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী উপ রাজ্যপালের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। তাঁকে স্মারকলিপিও দেন। মুখ্যমন্ত্রী নারায়নস্বামী সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, তিনি রাষ্ট্রপতির সাক্ষাৎপ্রার্থী কেননা উপরাজ্যপাল কিরণ বেদি প্রতি পদক্ষেপে কাজে বাধা দিচ্ছেন।
ক্ষমতাসীন কংগ্রেস-ডিএমকে জোট এবং এআইএডিএমকে-বিজেপি জোটের ৩৩-সদস্যের সভায় ১৪ জন বিধায়ক রয়েছেন – বিধানসভায় তিনজন মনোনীত বিধায়ক রয়েছেন, বর্তমানে ২৮টি বিধায়ক রয়েছেন। কংগ্রেসের দশ জন বিধায়ক ছাড়াও তিনটি ডিএমকে বিধায়ক এবং একটি স্বতন্ত্র শাসক জোটকে সমর্থন করছেন। বুধবার রাহুল গান্ধীর পুদুচেরি যাওয়ার কথা। তার আগেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। রাহুল গান্ধীর এই সফর পুদুচেরিতে কংগ্রেসের সরকার তৈরি হওয়ার পর প্রথমবার।