Advertisment

বর্বোরোচিত তাণ্ডবে চোখ কপালে…! নিরাপত্তা সংস্থার র‍্যাডারে অমৃতপাল সিং

নিরাপত্তা সংস্থার র‍্যাডারে অমৃতপাল সিং

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Amritsar, Deep Sidhu, Amritpal Singh, Amritsar, Punjab government, amit shah, Punjab news, Chandigarh, Indian Express, current affairs"

নিরাপত্তা সংস্থার র‍্যাডারে অমৃতপাল সিং, বড় অশান্তি সৃষ্টি করে সঙ্গীকে ছাড়িয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা, নেপথ্যে কী কারণ তা ভাবাচ্ছে দুঁদে গোয়েন্দাদেরও । অমৃতপাল সিং তলোয়ার, লাঠি ও বন্দুক নিয়ে সমর্থকদের সঙ্গেনিয়ে অমৃতসরের আজনালা থানায় চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন। পরদিনই আদালতের নির্দেশে অমৃতপাল সিংয়ের সহযোগী লাভপ্রীত সিং 'তুফান'কে মুক্তি দেওয়া হয়।  

Advertisment

এই পুরো বিষয়টি কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলিকে হতবাক করেছে এবং এখন 'ওয়ারিস পাঞ্জাব দে' সংস্থার প্রধান অমৃতপাল সিং তদন্তকারী সংস্থার র‍্যাডারে রয়েছেন। অমৃতপাল সিং খোলাখুলিভাবে খালিস্তানের বিচ্ছিন্নতাবাদী ধারণাকে সমর্থন করার কথা বলেছেন।

বিষয়টি এত গুরুতর কেন?

অমৃতসরের আজনালায় থানা ঘেরাওয়ের ঘটনাকে এত গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে নানা কারণ। একজন সিনিয়র নিরাপত্তা আধিকারিক এই বিষয়ে বলেছেন যে আতঙ্কিত হওয়ার সময় এখনও আসেনি তবে এটি ভাল লক্ষণ নয়।

তলোয়ার নিয়ে খালিস্তানি সমর্থকদের থানায় হামলা…! কেন্দ্রীয় সরকারকে ছুঁড়ে দেওয়া হয় সরাসরি চ্যালেঞ্জ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে পরোক্ষভাবে হুমকি বাদ যায়নি কিছুই। ‘ওয়ারিস পাঞ্জাব দে’ সংগঠনের প্রধান অমৃতপাল সিংয়ের ঘনিষ্ঠ লাভপ্রীত তুফানকে গ্রেফতারের বিরুদ্ধে কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে যায় পাঞ্জাবের অমৃতসরে। বৃহস্পতিবারের এই ঘটনায় পুলিশ কার্যত দিশাহীন হয়ে পড়ে। হাজার হাজার মানুষ বন্দুক-তলোয়ার নিয়ে থানায় চড়াও হয়। এরপরই অমৃৎসরের সিপি জানান, ধৃতকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে

অমৃতপালের ঘনিষ্ঠ লাভপ্রীত তুফানকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে হাজার হাজার মানুষ  থানায় ঘেরাও করে। হাতে ছিল বন্দুক, তলোয়ার ও লাঠি। অমৃতসর থানা কার্যত বিক্ষোভকারীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়। ভিড় ঠেকাতে পুলিশ ব্যারিকেডের ব্যবস্থা করলেও বিক্ষোভকারীরা তা ভেঙে থানার ভেতরে প্রবেশ করে। এদিনের এই ঘটনায় অনেক পুলিশ কর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। পরে লাভপ্রীত তুফানকে মুক্তি দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হলে পরিস্থিতি আয়ত্তে আসে।

হট্টগোলের খবর পেয়ে অমৃতপালও পৌঁছে যান আজনালা থানায়। সেখানে তিনি এসএসপি সতীন্দর সিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন। এরপর তিনি পুলিশকে কার্যত হুমকি দেন বলেই অভিযোগ। লাভপ্রীত তুফানকে অবিলম্বে ছেড়ে দিতে হবে। তাকে অপহরণ ও হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার করে পাঞ্জাব পুলিশ। অমৃতপাল সিং বলেন, “শুধুমাত্র রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ যদি এক ঘণ্টার মধ্যে মামলা তুলে না নেয়, তাহলে এর পর যা ঘটবে তার জন্য প্রশাসন দায়ী থাকবে”।

সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে যে এলাকায় বিলাশ পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে এবং বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা চলছে। হাজার হাজার উগ্র খালিস্তানপন্থী সমর্থক ঘেরাও করেছে অমৃতসরের আজনালা থানা। প্রবল উত্তপ্ত পরিস্থিতি। অসহায় পুলিশ। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের আম আদমি পার্টির সরকারও বিব্রত। পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয় অমৃতপালের সমর্থকদের।

অমৃতপাল সিং অমৃতসর জেলার জল্লুপুর খেদা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ২০১২ সালে কাজের জন্য দুবাই গিয়েছিলেন এবং সেখান থেকে সম্প্রতি ভারতে ফিরে আসেন। এখন তিনি খালিস্তানি সমর্থক দীপ সিধুর সংগঠন ‘ওয়ারিস পাঞ্জাব দে’-এর প্রধান। সম্প্রতিীক পথ দুর্ঘটনায় মারা যান দীপ সিধু। কৃষক আন্দোলনের সময় লাল কেল্লার হিংসার ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত ছিলেন তিনি। অমৃতপাল সিং, একজন স্বঘোষিত খালিস্তানি সমর্থক, পৃথক শিখ রাষ্ট্রের দাবি করে আসছে এই সংগঠন এবং একাধিক উস্কানিমূলক বক্তব্যও নাম জড়ায় তার। 

অমৃতপাল সিং সম্প্রতি তার সমর্থকদের উপর পুলিশি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেন, “আমি সরকারকে বলতে চাই যে সরকার যদি আমাকে গ্রেফতার করতে চায় তবে আমাকে বলুক কোথায় যেতে হবে। একদিকে সরকার বলছে তারা নাকি আমাকে খুঁজে পাচ্ছে না, অন্যদিকে সরকার জানে আমি কোথায় ছিলাম। তাহলে কেন তারা মিথ্যা বলছে যে তারা অভিযান চালাচ্ছে আমাকে ধরার জন্য।”

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে পরোক্ষভাবে হুমকি দেন তিনি। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি পাঞ্জাবের মোগা জেলারীক সমাবেশে ভাষণ দেওয়াকালীন সময়ে এই হুমকি দেন। সংবাদ সংস্থা এএনআই-সূত্রে খবর, অমৃতপাল সিং তার বিবৃতিতে বলেছেন, “অমিত শাহ বলেছিলেন যে তিনি খালিস্তান আন্দোলনকে বাড়তে দেবেন না। আমি বলেছিলাম যে ইন্দিরা গান্ধীও তাই করেছেন এবং যদি আপনি তা করেন তবে আপনাকে তার মুখোমুখি হতে হবে। যার পরিণতি খুবই ভয়ঙ্কর।”

পাঞ্জাব পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সূত্র বলছে, অমৃতপালের বিরুধে অতীতে কোন অপরাধমূলক ঘটনার কোনও রেকর্ড নেই। পাঞ্জাব পুলিশ বলছে, দুবাই বা অন্য কোথাও কোন উগ্রপন্থী আন্দোলনের সঙ্গে তার কোনো যোগসূত্র ছিল এমন কোন তথ্য প্রমাণ আমাদের কাছে নেই। তবে আমরা সন্দেহ করছি যে, কিছু বহিরাগত শক্তি তাকে সমর্থন করছে। কিন্তু পাঞ্জাব পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির কাছে এটি প্রমাণ করার মতো কোনও শক্তিশালী প্রমাণ এখন হাতে নেই পাঞ্জাব পুলিশের।

Punjab Punjab Police
Advertisment