হাথরাসকাণ্ডে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ যোগীর

বৃহস্পতিবার বাধা পেয়েছিলেন। কিন্তু, ৪৮ ঘণ্টা পর ছবিটা বদলাল। শেষ পর্যন্ত  হাথরাসে গিয়ে রাহুল গান্ধী ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরা দেখা করলেন।

বৃহস্পতিবার বাধা পেয়েছিলেন। কিন্তু, ৪৮ ঘণ্টা পর ছবিটা বদলাল। শেষ পর্যন্ত  হাথরাসে গিয়ে রাহুল গান্ধী ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরা দেখা করলেন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Yogi Adityanath, যোগী আদিত্য়নাথ

ছবি: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

হাথরাসের ঘটনায় বড়সড় পদক্ষেপের পথে হাঁটল যোগী সরকার। গণধর্ষণ ও নির্মম অত্য়াচারে দলিত তরুণীর মৃত্য়ুর ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিলেন যোগী আদিত্য়নাথ। উল্লেখ্য়, গতকালই টুইটারে যোগী আদিত্য়নাথ লিখেছিলেন, উত্তরপ্রদেশের মা-বোনেদের সম্মান নষ্ট যারা করবে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে।

Advertisment

বৃহস্পতিবার বাধা পেয়েছিলেন। কিন্তু, ৪৮ ঘণ্টা পর ছবিটা বদলাল। শেষ পর্যন্ত  হাথরাসে গিয়ে রাহুল গান্ধী ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরা দেখা করলেন। এছাড়াও তাঁদের সঙ্গে আরও তিন জন কংগ্রেস নেতৃত্ব গণঘর্ষিতা তরুণীর বাড়ি গিয়ে পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন।

এদিন সকালে টুইট করে হাথরাসে যাওয়ার কথা জানান কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি বলেছিলেন, 'বিশ্বের কোনও শক্তি নেই যে আমায় নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করা থেকে রুখবে।।' তবে, এ দিন সকালেই উত্তরপ্রদেশে দলের সভাপতি অজয় কুমারকে গৃহবন্দি করা হয়। প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতির হাথরাস যাওয়ার খবর রটতেই দিল্লি-নয়দা সীমানায় প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়। প্রিয়াঙ্কা সুর চড়িয়ে বলেন, 'এবার না পারলে আবার চেষ্টা করব।'

বৃহস্পতিবার রাহুল-প্রিয়াঙ্কার হাথরাস যাওয়াকে কেন্দ্র করে হুলুস্থুল বেঁধে যায়। হাথরাসের নির্যাতিতা, মৃত তরুণীর বাড়ির লোকের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার মাঝপথে পথে আটকে দেওয়া হয়েছিল তাঁদের। পুলিশের সঙ্গে তীব্র বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন ওয়ানাড়ের সাংসদ। এমনকী রাহুলকে ঠেলে ফেলা দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ।

Advertisment

এদিকে, এদিনই উত্তরপ্রদেশ পুলিশের ডিজি হাথরাসের নির্যাতিতা মৃতা তরুণীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন।

শুক্রবার হাথরাসের গণধর্ষিতার গ্রামে প্রবেশ ঠেকাতে মরিয়া ছিল যোগীর পুলিশ। নাছোড় সংবাদ মাধ্যমও। এই পরিস্থিতিতে পুলিশ ও সাংবাদিকদের মধ্যে যেন লুকোচুরি খেলা চলছিল। তবে, শনিবার বেলা গড়াতেই অবস্থার বদল ঘটে। সংবাদ মাধ্যমকে নির্য়াতিতা মৃতার গ্রামে ঢুকতে অনুমতি দিতে বাধ্য হয় পুলিশ প্রশাসন। এই ঘটনার তদন্তে গঠিত সিটের সদস্যরা গ্রাম ছাড়তেই সংবাদ মাধ্যমকে সেখানে যেতে ছাড় দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

হাথরাসকাণ্ডে প্রবল চাপে উত্তরপ্রদেশের যোগী সরকার। এই প্রেক্ষিতে বিজেপি সরকারের উপর চাপ বজায় রাখতেই রাহুল গান্ধী এ দিন ফের হাথরাসের নির্যাতিতা ও মৃত তরুণীর বাড়ি যাওয়ার উদ্যোগ বলে মনে করা হচ্ছে।

শুধু কংগ্রেসই নয়, সমাজবাদী পার্টি ও শুক্রবার তৃণমূল প্রতিনিধি দল হাথরাসে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাঁদেরও পুলিশি বাধার সম্মুখীন হতে হয়। পুলিশ তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েনকে ঠেলে ফেলে দিয়েছে বলে অভিযোগ।

হাথরাসের ঘটনায় মুখ পুড়েছে যোগী সরকারের। প্রতিনিয়ত ধেয়ে আসছে সমালোচনার ঝড়। দলিত তরুণীর গণধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় সরকার যাই পদক্ষেপ করুক না কেন তা প্রতিবাদের আগুনে জল ঢালতে ব্যর্থ। সংবাদ মাধ্যম থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি- নির্যাতিতা মৃতার পরিবারের অভিযোগ শুনতে গ্রামে ঢুকতে মরিয়া। আর তাতেই আগুনে ঘৃতাহুতির ভয় পাচ্ছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। কার্যত দিশাহারা যোগী প্রশাসন। তাই গণধর্ষিতার গ্রামকে প্রায় ‘দুর্গে’ পরিণত করে ফেলেছে যোগীর পুলিশ। তিনশ পুলিশ কর্মী, সতেরো পুলিশ ভ্যান ও গ্রামে প্রবেশের মুখে পরতে পরতে পাঁচটি ব্যারিকেডে হাথরাস যেন ‘বদ্ধভূমি’।

কিন্তু এতেও শেষ রক্ষা হয়নি গণধর্ষিতার পরিবারের কথা মাঝে মধ্যেই ভিডিও আকারে সামনে এসে যাচ্ছে। যা মিনিটে ভাইরাল। তাই যোগী প্রশাসনের কড়া নজরে এখন মৃতা তরুণীর পরিবার। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে মৃতার পরিবারের তরফে বলা হয়েছিল, গত দু’দিন ধরে পুলিশ তাঁদের কার্যত গৃহবন্দি করেছে। তাঁদের ফোনেও নজরদারি চলছে।

হাথরাসজুড়ে এখন খাঁকি উর্দির দাপাদাপি। যোগীর নির্দেশে পুলিশ ‘রাজধর্ম’ পালনে ব্যস্ত। গ্রামে প্রবেশের প্রায় আড়াই কিলোমিটার দূরে প্রথম ব্যারিডে তৈরি করা হয়েছে। গ্রামে রয়েছে প্রায় আড়াশ পুলিশ কর্মী। মোতায়েন রয়েছে প্রভিনশিয়াল আর্মড কনস্টাব্যুলারির (পিএসি) ৪৮ জন কর্মীও। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিনিধিদের নজরে পড়েছে, শুক্রবার হাথরাসজুড়ে রয়েছে পুলিশের ১২ গাড়ি, ৩ ট্রাক, ২টি পিএসি-এর বাস ও ২টি দমকলের গাড়ি। মাঝে মধ্যেই অন্যান্য গাড়িতেও আসা যাওয়া করছে পুলিশ। এর মাঝেই শুক্রবার রাতে হাথরাসের ঘটনায় পুলিশ সুপার-সহ ৫ আধিকারিককে সাসপেন্ড করেছে যোগী সরকার।

Read in English

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

rahul gandhi uttar pradesh