কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বুধবার জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন রাজ্যপাল সত্যপাল মালিকের সাক্ষাত্কার নিয়েছেন। আর, সেই ভিডিও প্রকাশ করেছেন। তাতে পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলা, কৃষক বিক্ষোভ, গৌতম আদানি-সহ বিভিন্ন বিষয়ে সত্যপাল মালিককে প্রশ্ন করেছেন রাহুল। সত্যপাল মালিক জম্মু-কাশ্মীরকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণা করার আগে এই পার্বত্য রাজ্যের শেষ রাজ্যপাল ছিলেন। তাঁর দাবি, যে পুলওয়ামা হামলাকে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করেছে। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদের আত্মঘাতী বোমা হামলায় এক বিস্ফোরক-বোঝাই গাড়ি রক্ষীদের বাসে ধাক্কা দিলে মোট ৪০ জন সিআরপিএফ জওয়ান প্রাণ হারান।
আরও পড়ুন- আইনের মাত্রতিরিক্ত প্রয়োগ, আদালতে সমালোচনার মুখে তেলেঙ্গানা সরকার, প্রতিরোধমূলক আটক কী?
মালিকের অভিযোগ যে সিআরপিএফ কেন্দ্রের কাছে পাঁচটি বিমান চেয়েছিল। যা দিতে রাজি হয়নি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। মালিক বলেন, 'তাদের (সিআরপিএফ) আবেদনটি চার মাস ধরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে পড়ে ছিল।' চার মাস পরে এটি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। জওয়ানদের রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে বাধ্য করা হয়েছে। জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন রাজ্যপাল আরও দাবি করেছেন যে প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল উভয়ই তাকে এই বিষয়ে কথা বলা থেকে বিরত থাকতে বলেছিলেন। সেকথা জানিয়ে সত্যপাল মালিক বলেন, 'যে গাড়িটি সিআরপিএফ বাসে ধাক্কা মেরেছিল, সেটি বিস্ফোরণের আগে ১০ দিন ধরে ওই জায়গাতেই ঘোরাফেরা করছিল। ওটি বিস্ফোরকে ভরা ছিল।'
আরও পড়ুন- মধ্য়প্রদেশে প্রার্থীতালিকা জুড়ে সিন্ধিয়ার লোকজন, ‘মহারাজ কা চল গয়া’, বলছেন অনুগতরা
মালিক তাঁর সাক্ষাৎকারে মণিপুরের বর্তমান জাতিগত সংঘর্ষ নিয়েও মন্তব্য করেছেন। এই প্রসঙ্গে তিনি মণিপুর সরকারের ব্যর্থতার দিকেও ইঙ্গিত করেছেন। সত্যপাল মালিক বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রী (এন বীরেন সিং) সংঘর্ষের স্থলে যেতে পারেন না। তিনি কিছু করতেও পারেন না। তবুও তাঁকে সরানো হয়নি।'
পুলওয়ামার ঘটনার পাশাপাশি, মালিক কৃষক আন্দোলন সম্পর্কেও মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, কৃষকদের সমস্যার সমাধান হিসেবে ন্যূনতম আর্থিক সহায়তা মূল্য অবিলম্বে বাস্তবায়ন হল পথ। সত্যপাল মালিক জানান, কেন্দ্রীয় সরকার কৃষি আইন বাতিল করার সময়ই এমএসপি (ন্যূনতম সহায়ক মূল্য) বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। তবে, এখনও পর্যন্ত তা কার্যকর করেনি। এই প্রসঙ্গে সত্যপাল মালিক অভিযোগ করেন, 'আদানি বড় গুদাম তৈরি করেছে। একটি নির্দিষ্ট মূল্যে ফসল কিনেছে। পরের বছর, তাদের দাম বাড়বে এবং তিনি তা বিক্রি করবেন।' ন্যূনতম আর্থিক সহায়তা পেলে কৃষকরা আদানির কাছে কম দামে তাদের ফসল বিক্রি করত না। সেই কারণেই কেন্দ্রীয় সরকার কৃষকদের জন্য ন্যূনতম আর্থিক সহায়তা প্রকল্প চালু করেনি বলেই অভিযোগ করেছেন সত্যপাল মালিক।