১৯৮৪ সালের অপারেশন ব্লু স্টার। যা কংগ্রেসের প্রতি পঞ্জাবের একচেটিয়া আনুগত্যে চিরকালের জন্য এক গভীর গর্ত খুঁড়ে দিয়ে গিয়েছে। ১০ দিনের এই অপারেশনে ৬ জুন ছিল বিশেষ দিন। ওই দিন ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে খালিস্তানপন্থীদের কড়া হাতে মোকাবিলা করে সেনাবাহিনী। কিন্তু, খালসাপন্থীদের কাছে সেই অপারেশনে নিহতরা আজও শহিদের মর্যাদা পায়।
আর, এই বিশেষ দিনে ৮৪ সালের ঘটনার স্মরণে গান্ধী পরিবারের প্রতি তীব্র ঘৃণা ও ক্ষোভ উগরে দেন খালসাপন্থীরা। সোমবার ছিল সেই ৬ জুন। এবারও অন্যথা হয়নি। পঞ্জাবজুড়ে 'খালিস্তান খালিস্তান' ধ্বনি উঠেছে। গান্ধী পরিবারের প্রতি বর্ষিত হয়েছে তীব্র বিষোদগার। গান্ধী পরিবার তো বটেই, পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুকে নিয়েও নানা কটূকথা শোনা গিয়েছে বিক্ষোভকারীদের মুখে। একইসঙ্গে, খালিস্তানপন্থীদের জেল থেকে মুক্তির দাবি উঠেছে।
ঠিক তার পরদিনই পঞ্জাবের জনপ্রিয় গায়ক-অভিনেতা সিধু মুসেওয়ালার বাড়িতে ছুটে গেলেন কংগ্রেসের অন্যতম শীর্ষ নেতা রাহুল গান্ধী। গত ২৯ মে খুন হয়েছেন সিধু মুসেওয়ালা। মঙ্গলবার, তাঁর খুনের দশম দিন। ভোটের ঠিক আগে মুসেওয়ালা কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন। বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাঁর মা কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্যা। সেই কারণেই রাহুলের মানসা জেলায় ছুটে যাওয়া বলে দাবি কংগ্রেসের।
অপারেশন ব্লু স্টারের পরিণতিতে রাহুল গান্ধীর ঠাকুমা তথা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী প্রাণ হারিয়েছেন। সেই ক্ষত সামাল দিতে অতীতে অপারেশন ব্লু স্টার সম্পর্কে মুখ খুলতে দেখা গিয়েছে রাহুল গান্ধীকে। বক্তব্যে তিনি পঞ্জাববাসীর আবেগের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছেন। মঙ্গলবার খুনের ১০ দিন পর মুসেওয়ালার বাড়িতে রাহুলের ছুটে যাওয়ায় সেই চেষ্টাই খুঁজে পাচ্ছেন বিরোধীরা।
তাঁর মুসেওয়ালার বাড়িতে যাওয়ার ছবি ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন রাহুল। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লিখেছেন, 'প্রতিশ্রুতিমান কংগ্রেস নেতা এবং প্রতিভাবান শিল্পী সিধু মুসেওয়ালার হত্যায় গভীরভাবে মর্মাহত ও দুঃখিত। বিশ্বজুড়ে তাঁর প্রিয়জন এবং ভক্তদের প্রতি আমি আন্তরিক সমবেদনা জানাই।'
মুসেওয়ালার বাড়িতে রাহুলের সঙ্গে গিয়েছিলছিলেন পঞ্জাব প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি অমরিন্দর সিং রাজা। পঞ্জাব বিধানসভার বিরোধী নেতা প্রতাপ সিং বাজওয়া। অপারেশন ব্লু স্টারের বর্ষপূর্তি চলছে। এই কথা মাথায় রেখে রাহুলের সফর উপলক্ষে মুসেওয়ালার বাড়ির বাইরে নিরাপত্তা মঙ্গলবার কয়েকগুণ বাড়ানো হয়েছিল।
আরও পড়ুন- ‘বিশ্বজুড়ে বিজেপির গোঁড়ামির মাসুল দিচ্ছে ভারত’, তীব্র কটাক্ষ রাহুলের
মুসেওয়ালা হত্যার ১০ দিন পরও তাঁর খুনের ঘটনা নিয়ে বর্তমানে আবেগে ভাসছে পঞ্জাব। সেই আবেগে সওয়ার হতে শনিবারই মুসেওয়ালার বাবার সঙ্গে দেখা করেছেন বিজেপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। শুক্রবার আবার মুসেওয়ালার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন আম আদমি পার্টির নেতা তথা পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান। অথচ, মুসেওয়ালারই দলের নেতা হয়ে তাঁর বাড়িতে শাহ এবং মানের পরে রাহুল যাওয়ায় কটাক্ষ করেছে বিরোধী দলগুলো।
Read full story in English