জালিয়ানওয়ালা বাগ সংস্কার ইস্যুতে কেন্দ্রকে তুলোধনা করে ময়দানে বিরোধীরা। একযোগে এব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ও সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি। মোদীর নাম না করে মঙ্গলবার রাহুল ও ইয়েচুরির তোপ, ‘যিনি আত্মবলিদান শব্দের মানেই জানে না, তাঁর পক্ষেই শহিদদের অপমান করা সম্ভব’।
এর আগেও একাধিকবার দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের স্মৃতি-বিজড়িত পঞ্জাবের জালিয়ানওয়ালা বাগের সংস্কার হয়েছে। তবে সংস্কারের কাজ করতে গিয়ে কখনই জালিয়ানওয়ালা বাগের ইতিহাস মুছে ফেলার চেষ্টা হয়নি। বরং পরম যত্নে প্রাক-স্বাধীন ভারতের চরম দুঃখের সেই স্মৃতি জিইয়ে রাখা হয়েছে। পরবর্তী প্রজন্ম যাতে জালিয়ানওয়ালা বাগের সেদিনের নৃশংস ঘটনা জানতে পারেন সেই তৎপরতাই লক্ষ্য করা গিয়েছে বছরের পর বছর ধরে।
সম্প্রতি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছিল জালিয়ানওয়ালা বাগ। তবে সংস্কারের পর উদ্যানের দরজা খুলে দেওয়া হয়েছে। জালিয়ানওয়ালা বাগের সংস্কার দেখে রীতিমতো বিতর্ক ছড়িয়েছে দেশজুড়ে। উদ্যানের পুরনো দেওয়াল আর নেই। উদ্যানের ভিতরে নানা মূর্তি এনে রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়। ১৯১৯ সালে ব্রিটিশ পুলিশের গুলির হাত থেকে বাঁচতে জালিয়ানওয়ালা বাগের যে কুয়োয় বাচ্চা, মহিলা, বয়স্করা ঝাঁপ দিয়েছিলেন সেটিও খোলনলচে বদলে ফেলা হয়েছে।
আরও পড়ুন- ফের দলিত কিশোরীকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ, পুলিশের জালে অভিযুক্ত
গোটা কুয়োটাই কাচ দিয়ে ঢাকা হয়েছে। কুয়োর সেই দেওয়াল কাচের আড়ালে ঢাকা পড়েছে। ইতিহাস মুছে ফেলেছে কেন্দ্রীয় সরকার, এই অভিযোগে নিন্দায় সরব হয়েছে একাধিক রাজনৈতিক দল। জালিয়ানওয়ালা বাগের এই সংস্কার ইস্যুতে প্রধানমমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন বিরোধী নেতারা। টুইটে কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী নাম না করে মোদীকে বিঁধে লিখেছেন,“যারা শাহাদাতের মানে জানে না, তারাই এভাবে জালিয়ানওয়ালা বাগের শহিদদের অপমান করতে পারে।” অন্য একটি টুইটে রাহুল আরও লিখেছেন, “আমিও একজন শহিদের পুত্র। কোনও মূল্যেই শহিদের অপমান মেনে নিতে পারি না। আমরা এই ধরনের নৃশংসার বিরুদ্ধে।”
জালিয়ানওয়ালা বাগের সংস্কার নিয়ে কেন্দ্রের মোদী সরকারকে তুলোধনা করেছেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিও। টুইটে সিপিএমের এই শীর্ষ নেতা লিখেছেন, “স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে যারা বহু দূরে ছিল একমাত্র তারাই এভাবে কলঙ্কিত করতে পারে। আমাদের শহিদদের অপমান করা হয়েছে। জালিয়ানওয়ালা বাগে হিন্দু, মুসলমান ও শিখরা বৈশাখীর জন্য একত্রিত হয়েছিলেন। তাঁরা আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামকে শক্তিশালী করেছিলেন। এখানকার প্রতিটি ইট ব্রিটিশ শাসনের ভয়াবহতার ইতিহাস বহন করছে।”
কংগ্রেস, সিপিএমের পাশাপাশি জালিয়ানওয়ালা বাগ সংস্কার ইস্যুতে মোদী সরকারকে আক্রমণ করেছে শিবসেনাও। দলের সাংসদ প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদীর মতে, “আমাদের একটি ইতিহাসের বিরাট ক্ষতি হয়ে গেল।” উল্লেখ্য, গত শনিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নতুন করে সাজিয়ে তোলা জালিয়ানওয়ালা বাগের উদ্বোধন করেন।
Read full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন