সুরাটের একটি আদালত মানহানি মামলায় ২০১৯ সালের 'মোদী পদবি' নিয়ে মন্তব্যের জেরে মানহানির মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে এবং রাহুল গান্ধীকে দু'বছরের কারাণ্ডের নির্দেশ দেয়। কংগ্রেসের সিনিয়র নেতা রাহুল গান্ধী সোমবার 'মানহানি মামলায়'নিন্ম আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে সুরাটের দায়রা আদালতে স্থগিতাদেশ চেয়ে আদেবন করবেন।
সুরাট আদালতের বাইরে জড়ো হয়েছেন কংগ্রেস কর্মীরা। সূত্রের খবর রাহুল গান্ধী সোমবার আদালতে নিজে হাজির থাকবেন। সংগঠনের দায়িত্বে থাকা AICC সাধারণ সম্পাদক সভা কে সি ভেনুগোপাল, রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট, দিগ্বিজয় সিং, আনন্দ শর্মা এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধী সহ বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতা রাহুল গান্ধীর সঙ্গে এদিন আদালতে হাজির থাকবেন।
সুরাটের একটি আদালত রাহুল গান্ধীকে ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের আগে 'মোদী পদবী' নিয়ে মন্তব্যের জন্য মানহানির মামলায় দোষী সাব্যস্ত করার এক সপ্তাহ পরে, কংগ্রেসের সিনিয়র নেতা রাহুল গান্ধী সোমবার নিন্ম আদালতের রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে সুরাট দায়রা আদালতে আবেদন করবেন।
কংগ্রেস আশাবাদী আদালত রাহুল গান্ধীকে সাজা থেকে অব্যাহতি দেবে। একই সঙ্গে রাহুল গান্ধী তার সাংসদ পদ ফিরে পাবেন। অন্যদিকে বিজেপির মুখপাত্র সম্বিত পাত্র সোমবার কলকাতায় একটি সংবাদ সম্মেলনে ভাষণ দেন এবং রাহুলের এদিনের আবেদন প্রসঙ্গে প্রশ্ন তোলেন, "আপনার ভারতীয় বিচার ব্যবস্থায় বিশ্বাস নেই আপনার?" ।
সূত্রের খবর রাহুল গান্ধী সোমবার নিজে আদালতে উপস্থিত থাকবেন এবং সংগঠনের দায়িত্বে থাকা এআইসিসি সাধারণ সম্পাদক কে সি ভেনুগোপাল, রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট, দিগ্বিজয় সিং এবং আনন্দ শর্মা সহ বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতাও এদিন আদালতে হাজির থাকবেন। ছত্তিশগড় ও হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল এবং সুখবিন্দর সিং সুখুও আদালতে সশরীরে হাজির হতে পারেন বলেই সূত্রের খবর।
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী মানহানির মামলায় দুই বছরের কারাদণ্ডের আদেশের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুরাট দায়রা আদালতে আবেদন করেছেন, সোমবারই তার আবেদনের শুনানির দিন ধার্য রয়েছে আদালতে। সূত্রের খবর কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ‘মোদী পদবী’ নিয়ে মন্তব্যের জেরে মানহানির মামলায় দুই বছরের সাজার বিরুদ্ধে সুরাট দায়রা আদালতে আবেদন করেছেন। ‘মোদী পদবী’ নিয়ে মানহানির মামলায় রাহুলকে সম্প্রতি সিজেএম আদালত ২ বছরের সাজা দিয়েছে। সূত্রের খবর, আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে পিটিশন দায়ের করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। আজই তার শুনানি।
গুজরাটে রাহুল গান্ধীর আইনজীবী কিরিট পানওয়ালা বলেছেন, “আমরা সোমবার রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলায় নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে সুরাট দায়রা আদালতে আপিল দায়ের করতে যাচ্ছি। রাহুল গান্ধী নিজে আদালতে উপস্থিত থাকবেন এবং দিল্লি থেকে কংগ্রেস দলের আইনি দলও এদিন আদালতে উপস্থিত থাকবেন।”
২৩শে মার্চ, রাহুল গান্ধীকে দোষী সাব্যস্ত করার সময়, আদালত তাকে উচ্চ আদালতে আপিল করার অনুমতি দেয় এবং ৩০ দিনের জন্য তাঁর সাজা মুকুব করেন। একই সঙ্গে ১৫হাজার টাকার ব্যক্তিগত বণ্ডে রাহুল গান্ধীর জামিনের আদেবন মঞ্জুর করেন।
আদালতের রায়ের একদিন পর রাহুল গান্ধীকে লোকসভার সদস্য পদ বাতিল করা হয়। হিসাবে একই এওঙ্গে বিজেপি সাংসদ সি আর পাটিলের সভাপতিত্বে লোকসভার হাউস কমিটি তাকে ১২, তুঘলক লেনের বাংলোটি খালি করার নোটিশ জারি করে।
মানহানির মামলায় সাজার ওপর স্থগিতাদেশ চাইতেই আদালতে আইনি লড়াইয়ে নামতে চলেছেন তিনি। আদালতের নির্দেশের ওপর স্থগিতাদেশ বহাল হলেই রাহুল তার সাংসদপদ ফিরে পেতে পারেন।
চলতি বছরের ২৩ মার্চ, সুরাটের একটি আদালত রাহুল গান্ধীকে মোদী পদবী নিয়ে মন্তব্যের জেরে মানহানি মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে এবং ২০১৯ সালের মন্তব্যের জেরে তাকে দুই বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয়। সাজা ঘোষণার পর রাহুল গান্ধীকে লোকসভা থেকে ‘অযোগ্য’ ঘোষণা করা হয়। বাতিল করা হয় তার সাংসদ পদ। তারপর থেকেই বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন কংগ্রেস সহ সকল বিরোধী দলের নেতারা।
বিজেপি অভিযোগ করে যে রাহুল গান্ধী ও কংগ্রেস আদালতের আদেশকে চ্যালেঞ্জ করার বিষয়ে যথেষ্ট তত্পরতা দেখায়নি। কারণ কর্ণাটক নির্বাচনের দল এটাকে ইস্যু করেই ফায়দা তোলার চেষ্টা করছে। এই বিষয়ে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ বলেন, আমরা জানি কোথায় এবং কখন আপিল করতে হবে কারণ আমাদের হাতে ৩০ দিন সময় আছে।
পুরো ব্যাপারটা কি
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রচারের সময়, রাহুল গান্ধী কর্ণাটকের কোলারে মন্তব্য করেছিলেন যে ‘সব চোরের পদবী কেন মোদী হয়’। এরপর তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। তার বিরুদ্ধে সমগ্র মোদী সম্প্রদায়ের অনুভূতিতে আঘাত এবং কলঙ্কিত করার অভিযোগ আনা হয়েছিল। মানহানি মামলায় সুরাটের একটি আদালত রাহুল গান্ধীকে দোষী সাব্যস্ত করে এখন তাকে দুই বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয়। সেদিনই আদালত ১৫ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে রাহুলের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করে।
রাহুল গান্ধী তার ২০১৯ সালের মন্তব্যের জেরে সুশীল কুমার মোদীর দায়ের করা আরেকটি মানহানির মামলার মুখোমুখি হয়েছেন। পাটনার একটি আদালত এই মামলার বিষয়ে কংগ্রেস নেতাকে ১২ হাজিরার নির্দেশ দিয়েছে বলে জানা গেছে।